নুসরাত হত্যা : এসপি-ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সুপারিশ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ মে ২০১৯, ১৩:০৪ | আপডেট : ০১ মে ২০১৯, ১৩:১০
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার, সোনাগাজী থানার ওসির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত দল।
মঙ্গলবার রাতে ওই কমিটি পুলিশ সদর দফতরে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে।
কমিটির প্রধান ডিআইজি এসএম রুহুল আমিন বলেন, ‘চাপমুক্ত থেকে কাজ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তদন্তে যা যা পেয়েছি এবং যাদের গাফিলতি পেয়েছি তাদের নাম উল্লেখ করেছি।’
দুই দফা ফেনী গিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে মোট ৪১ জনের বক্তব্য শুনে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সদর দফতরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সোনাগাজী থানার তখনকার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, উপপরিদর্শক মো. ইকবালের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। সেখানেই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পিকেএম এনামুল করিমেরও গাফিলতি ছিল বলে মনে করছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। ওই ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। সে সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তার মৃত্যুর পর সোনাগাজী থানায় অভিযোগ নিয়ে যাওয়া নুসরাতের সঙ্গে ওসি মোয়াজ্জেমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন নুসরাতের পরিবারকে অসহযোগিতার অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয় ওসিকে।
আলোচিত এ মামলায় এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও প্রধান তদন্ত সংস্থা পিবিআই। তাদের মধ্যে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী ৫ জন শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুন নাহার মনিসহ ৮ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এ ছাড়া গ্রেফতার হয়েছেন হুকুমদাতা মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, আশ্রয়দাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, অর্থ জোগানদাতা পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ও মাদরাসার শিক্ষক আবছার উদ্দিন।
এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ