আজকের শিরোনাম :

ধর্ষণ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার ওসিসহ ১১ জনের নামে মামলা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৩৮

অপহরণ ও গণধর্ষণের অভিযোগ এনে ১১ জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেছেন এক নারী (২৭)। এর মধ্যে ঘুষ দাবি ও তাকে ‘পতিতা সাজিয়ে’ আদালতে পাঠানোয় এই মামলায় আসামি করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী মিয়া ও দুই উপপরিদর্শককে (এসআই)।

দুই সন্তানের মা ওই নারী আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে  মামলাটি করার পর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- যাত্রাবাড়ী থানার এসআই আ স ম মাহমুদুল হাসান ও মোছা. লাইজু, মো. শফিকুল ইসলাম রনি, মো. সাগর, মো. শামীম, মো. আলাউদ্দিন দেলোয়ার হোসেন, মো. হানিফ, মো. স্বপন, বিলকিস আক্তার শিলা ও ফারজানা আক্তার শশি।

মামলার এজাহারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারার অপহরণ এবং ৯ (৩) ধারার গণধর্ষণের অভিযোগ থাকলেও এর বর্ণনায় ওসি ও দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে অপহরণ এবং গণধর্ষণের কোনো অভিযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করার জন্য ঘুষ দাবি এবং পরবর্তীতে ঘুষ না পেয়ে বাদিনীকে পতিতা বলে আদালতে চালান দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।    

মামলায় বলা হয়, বাদিনী তালাকপ্রাপ্তা হওয়ায় অভাব-অনটনের কারণে কাজের সন্ধান করেন। পূর্বপরিচিত আসামি শফিকুল ইসলাম রনি বাদীকে গত ১২ মার্চ অনলাইনে থ্রি পিস ও শাড়ি কেনাবেচার একটি প্রতিষ্ঠানে কমিশনে চাকরি দেয়ার কথা বলে করাতিটোলার ফারজানা আক্তার শশি ও বিলকিস আক্তার তাকে তাদের ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। এরপর তাদের সহযোগিতায় বাড়ির মালিকের ছেলে আসামি স্বপন তাকে ধর্ষণ করেন। বাদী ডাক-চিৎকার দিলে আসামি শশি ও শিলা তার গলায় বঁটি ঠেকিয়ে মেরে ফেলার এবং ধর্ষণের ভিডিও ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এরপর জীবন, বিপ্লব, হানিফ, সাগর ও আলাউদ্দিন বাদীকে মারধর ও বিবস্ত্র করে। তারাসহ আরো ১০-১২ জন লোক ইয়াবা সেবন করে বাদনীকে ধর্ষণ করে। এতে বাদী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরে সুযোগ বুঝে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে চিৎকার করলে নাজমুল হোসেন নামে একজন লোক এগিয়ে আসে। সব কথা শুনে তিনি তাকে রেজাউল করিম নামে একজন মানবাধিকারকর্মীর কাছে নিয়ে যান। তার মাধ্যমে বাদী যাত্রাবাড়ী থানায় যায়।

সেখানে ওসিকে না পেয়ে এসআই প্রদীপ কুমার ও আয়ান মাহমুদকে ঘটনা জানান। তারা এসআই লাইজুকে দায়িত্ব দেন। লাইজু ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামি শশি ও শিলাকে ১৮টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে আনেন। এরপর এসআই লাইজু বাদিনীকে প্রস্তাব করেন, ওসি ওয়াজেদ, এসআই প্রদীপ কুমার ও আয়ান মামুদকে ১ লাখ টাকা দিলে ধর্ষণের মামলা হবে। না দিলে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবে। পরে  গত ১৮ মার্চ ঘুষের টাকা না দিতে পারায় বাদিনীকে পতিতা সাজিয়ে আসামি শিলা ও শশির সঙ্গে আদালতে পাঠান ওসি ওয়াজেদ, এসআই মাহমুদুল হাসান ও লাইজু।

মামলায় বলা হয়, আসামি শশি ও শিলা ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হলেও ওই সম্পর্কে কোনো মামলা হয়নি। উল্টো বাদিনীকে পতিতা সাজিয়ে আদালতে পাঠানো হয় এবং বাদিনীর ধর্ষণের ঘটনা চাপা পড়ে যায়।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ