আজকের শিরোনাম :

অনলাইনে বেপরোয়া প্রতারকচক্র

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:৪৫

প্রযুক্তির কল্যাণে সময়ের সাথে পাল্টেছে জীবনযাত্রা, বদলেছে অপরাধের ধরন। অপরাধীরা এখন অনলাইনে গড়ে তুলছে অপকর্মের নেটওয়ার্ক। মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ সোশাল মিডিয়ায় প্রভাবশালীদের নাম ব্যবহার করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। সরল বিশ্বাসে তাদের ফাঁদে পা রেখে সর্বস্বান্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। এইসব অপরাধী এতোই বেপরোয়া যে প্রধানমন্ত্রী কিংবা সন্তানদের নাম ব্যবহারেও দ্বিধা করছে না। দেশ বিদেশে গড়ে ওঠা আন্ডারওয়ার্ল্ডের মতোই সাইবার অপরাধীরা এখন জোট বাঁধার চিন্তা করছে।
 
এমনই এক দুধর্ষ প্রতারক ওমর ফারুক। প্রধানমন্ত্রীর নামে ৬টি এবং তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে ১টি ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। হাতিয়ে নিতো অর্থ। ওমর ফারুক নিজেই আওয়ামী লীগ সমর্থক গোষ্ঠীসহ জাতীয় নেতাদের নামে ৩৬টি ভুয়া একাউন্ট খুলেছিল। সে তার নিজের নামেও ৬টি ফেসবুক একাউন্ট খুলেছে। আরেক প্রতারক সাব্বির পেশায় সাইবার কমিউনিকেশন এক্সপার্ট। সে ইতোমধ্যে ৬টি মামলার এজহারভুক্ত আসামি। সে ইতোপূর্বে তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশ নেত্রী সাইবার ফোরাম পেজের এডমিন ছিল। সম্প্রতি সেসব পেজের নামের জায়গায় শেখ হাসিনার পরামর্শক ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নাম সংযোজন করে তাতে নিরাপদ সড়ক চাই ও কোটা আন্দোলনসহ নতুন কোনো ইস্যু পেলে সেগুলো নিয়ে উসকানিমূলক ভিডিও পোস্ট করে আসছিল।

সম্প্রতি সাইবার বিশেষজ্ঞদের তৎপরাতায় র‌্যাব-২ এর একটি বিশেষ দল অনলাইনে সক্রিয়া পাঁচ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। তারা হলো, মো. ওমর ফারুক (৩০), মো. সাব্বির হোসেন (২৪), মো. আল আমিন (২৭), মো. আমিনুল ইসলাম (২৫), মো. মনির হোসেন (২৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন এবং ১টি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, 'নির্বাচনকে ঘিরে সক্রিয় সাইবার অপরাধী চক্ররা এখনও ভিন্ন পথ অবলম্বন করছে। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে প্রতারণা ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ভুয়া এসব পেজে প্রধানমন্ত্রীর নামে নাম্বার দিয়ে তাদের নাম্বার যোগ করেছে। এতো অনেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে ওই নাম্বারে ফোন দিলে তারা ধরে। এর পর তারা নিজেদেরকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। সম্প্রতি সংসদে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন ফরম নেয়া প্রার্থীদের ফোন দিয়ে তাদের মনোনয়ন নিশ্চিতের ব্যাপারে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছিল তারা।

গ্রেফতারকৃতরা কত অর্থ প্রতারণা করেছে এবং তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কি সেটি এখনও নিশ্চিত করতে পারেননি বলে জানান তিনি। তাদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ