অরিত্রির আত্মহত্যা : শিক্ষিকা হাসনা হেনা গ্রেফতার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৩০ | আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৩৫
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর উত্তরার একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার এম আতিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধেকরা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুলটির গভর্নিং বডি। তারা হলেন- ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার শিফট ইনচার্জ জিনাত আখতার ও শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনা।
বাকি দুজনকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গতকালই অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে র্যাব ও পুলিশকে চিঠি পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
র্যাবের মহাপরিচালক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর চিঠিটি পাঠানো হয়। এ ছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আরেকটি চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বহিষ্কারসহ ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ওই তিন শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়।
গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ভিকারুননিসার শিক্ষক আতাউর রহমান, খুরশিদ জাহান এবং গভর্নিং বডির সদস্য ফেরদৌসী বেগমকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডি।
মঙ্গলবার দুপুরে অরিত্রি কেন আত্মহত্যা করেছে এর কারণ খুঁজতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটিতে একজন অতিরিক্ত শিক্ষা সচিব, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, মনোবিজ্ঞানী এবং বিচারক রাখার কথা বলা হয়। তারা অরিত্রি আত্মহত্যার ঘটনা এবং সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এ রকম ঘটনা তদন্ত করে কারা দায়ী এগুলো খুঁজে বের করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেবেন।
অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তারা বাবা দিলীপ অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। গত রোববার সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এ জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি।
এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ