আজকের শিরোনাম :

সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরও ১০ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ মে ২০১৮, ১০:৪৪

ঢাকা, ২২ মে, এবিনিউজ : চলমান রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান। গত কয়েকদিনের মতো সোমবার দিনগত রাতে থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সারাদেশে আরও ১০ ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত হয়েছে। 

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কুমিল্লায় ২, নীলফামারীতে ২, চট্টগ্রামে ১, নেত্রকোনায় ১, দিনাজপুরে ১, নারায়ণগঞ্জে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ ও চুয়াডাঙ্গায় ১ জন নিহত হয়েছেন। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে গত চার দিনে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

কুমিল্লা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শরীফ (২৬) ও পিয়ার (২৮) নামে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতরা তালিকাভুক্ত শীর্ষ দুই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত পৌনে ১টার দিকে জেলা সদরের অদূরে বিবিরবাজার অরণ্যপুর এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি রিভলবার, একটি পাজেরো জিপ, ৫০ কেজি গাঁজা এবং ৫০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযানকালে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রূপকুমারসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত এলাকা থেকে মাদকের একটি বড় চালান আসছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। রাত পৌনে ১টার দিকে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শরীফ, পিয়ার আলী ও সেলিম গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মাদক ব্যবসায়ী শরীফ ও পিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, নীলফামারীর সৈয়দপুরে সোমবার রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের ককটেলের আঘাতে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। 

নিহতরা হলেন সৈয়দপুর পৌর শহরের ইসলামবাগ মহল্লার আবদুল হান্নানের ছেলে মো. জনি হোসেন (২৭) ও নিচু কলোনি মহল্লার ইউসুফ হোসেনে ছেলে শাহিন আহমেদ (৩০)।

ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, দেশীয় অস্ত্র , ইয়াবা এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ।

সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর ইসলামবাগ মহল্লা থেকে জনিকে এবং নিচু কলোনি মহল্লা থেকে শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের তথ্যানুযায়ী বাইপাস মহাসড়কের গোলাহাট বধ্যভূমি এলাকায় অপর ২ মাদক ব্যবসায়ী জসিয়ার ও নূর বাবুকে ধরতে ও মাদক উদ্ধারে গেলে  সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সুযোগে গ্রেফতার জনি ও শাহিন  পালানোর চেষ্টা করলে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তারা নিহত হন।

চট্টগ্রাম নগরের বায়োজিদ থানার ডেবারপাড় এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শুক্কুর আলী (৪৩) নামে এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। 

সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।


এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পুলিশের সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে কামরুজ্জামান সাধু নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। 

সোমবার রাত ২টার দিকে শহরের রেলস্টেশনের পেছনে এ বন্ধুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি ও ১ বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

পুলিশ জানায়, রাতে বিশেষ অভিযানে বের হয় থানার পুলিশ। পুলিশের গাড়ি আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের নিকট পৌঁছলে তাদের গাড়িকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেন। গোলাগুলির শব্দে স্থানীয় এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি কামরুজ্জামান সাধুর (৪৫) বলে শনাক্ত করেন।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান জানান, নিহত কামরুজ্জামান সাধু থানার তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে থানায় ৬টি মাদক মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তার ৩ বছরের সাজা হয়েছে।

নেত্রকোণায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মঙ্গলবার ভোরে আমজাদ নামে এক অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এ সময় সদর থানার ওসিসহ আরও ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ২টার দিকে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী আমজাদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যমতে সদর উপজেলার মেদনী ইউনিয়নের বড়য়ারী এলাকায় অভিযান চালানোর সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমজাদ নিহত হয়।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন জানান, আমজাদ একজন ভাড়াটে খুনি ও অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে থানায় ১৩টি বিভিন্ন মামলা রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় মঙ্গলবার ভোরে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বাচ্চু খান (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় র‌্যাব তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধারে গেলে বাচ্চুসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে ও র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই বাচ্চু নিহত হয় এবং বাকি দুজন পালিয়ে যায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ধন মিয়া (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার রাত ২টার দিকে উপজেলার সোনারামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত যুবক ধন মিয়া মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ