অপকর্ম করলে শাস্তি হবেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:১৮
অপকর্ম করলে শাস্তি পেতে হবে- আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে আবারও সেটা প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ মামলায় বিদেশে পালাতক আসামিদের ফিরিয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান আসাদুজ্জামান খান।
এর আগে ঢাকার ১ নং অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ১৪ বছর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় করা হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ রায় পেয়ে আজকে মনে করি যে একটা যোগ্য বিচার হয়েছে। দেশে যারাই অপকর্ম করবে তাদের শাস্তি যে হবে, এ রায়ের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো।’
তিনি বলেন, ‘আজকে জাতির জন্য বড় একটা দিন। আমরা মনে করি জাতির কালিমা যেটা আমরা লেপন করেছি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এ রকম আরেকটা কালিমা লেপন একুশে আগস্ট করেছিল। এ কালিমা আজকে দূর হলো। আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে। এ দেশে বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এখানে ন্যায় বিচার হয়। যারাই নাকি এ ধরনের কর্ম করবে তাদের বিচার অবশ্যই হবে।’
এ রায়ে কি আপনি খুশি- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই আমি খুশি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি বিজ্ঞ আইনজীবীরা সবকিছু সঠিকভাবে তুলে ধরেছিলেন এবং বিজ্ঞ বিচারকরা সঠিক বিচারটিই করতে সক্ষম হয়েছেন। তথন যারা সেই জায়গাটিতে পুলিশের ডিউটিতে ছিলেন এবং যারা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন রায়ের মধ্যে তারাও আসছেন। কেউই তাদের দায়িত্বে অবহেলা করতে পারবেন না। এ ধরনের নৃসংস প্রোগ্রাম যারা নিয়েছিলেন, যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিলেন, অর্থ যোগান দিয়েছেন তাদেরও ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবন দণ্ড হয়েছে। আমরা মনে করি এটা যথার্থই হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বিদেশে যারা পালিয়ে আছে খুব শিগগিরই তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা আমরা নেব।’
এ মামলায় ৪৯ জন আসামির মধ্যে ২৩ জন কারাবন্দি, ১৮ জন পলাতক ও ৮ জন জামিনে রয়েছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
মনে করা হয়েছিল গ্রেনেড হামলার মাস্টার মাইন্ড হিসেবে তারেক রহমানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হবে। সেটা হয়নি। আপনি কি মনে করেন এটা যথার্থ হয়েছে- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন হাওয়া ভবনে এ মিটিংটা হয়েছে এটা সঠিক। যারা তদন্ত করেছেন তাদের রিপোর্ট এবং আইনজীবীরা যথার্থভাবে তুলে ধরেছেন। বিচারক যে রায় দিয়েছেন এখানে আমার বলার কিছু নেই। উনি যথার্থ বিবেচনা করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ যদি মনে করে রায় যথার্থ হয়নি, এখানে আপিলেরও ব্যাপার আছে। সেখানে যেতে পারে। এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করছি না।’
এ ঘটনায় জজ মিয়া নাটক ও একজনকে দিয়ে একটা কমিশন তৈরি করেছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটাকে ঢেকে দেয়া, আড়াল করা বা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা অনেক হয়েছে। আমাদের আওয়ামী লীগের লোকের বাড়িঘর তছনছ করা হয়েছিল, তাকে আসামি বানানোর প্রচেষ্টা হয়েছিল। এগুলো আপনারা দেখেছেন। এর কারণটা কী ছিল। যারা এ কর্মটা করেছিল তারা এটা যাতে আড়াল করা যায় সেই ব্যবস্থা নিয়েছিল। মামলাটি পর্যন্ত নেয়নি। এমনকি জাতীয় সংসদে আমাদের নেতারা যখন প্রটেস্ট করতে যাচ্ছিলেন, তাদের বলতে দেয়া হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় যারা শাস্তির আওতায় এসেছেন তারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে তাদের একটা উদ্দেশ্য ছিল। সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’
এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ