আজকের শিরোনাম :

রায় ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৮, ১১:০৫

আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মামলার রায় ঘিরে পুরান ঢাকার অস্থায়ী আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আজ বুধবার ভোর থেকে বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ, নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার ছাড়াও সড়কে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য। প্রস্তুত রয়েছে জলকামান ও প্রিজন ভ্যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ আদালতের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য সতর্ক পাহারায় রয়েছেন। সাত রৌজা মোড় থেকে কারাগার সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

চাঁনখারপুল মোড় থেকেও গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। চকবাজার থেকে কারাগার অভিমুখে কোনো গাড়ি ঢুকতে পারছে না। ব্যারিকেড বসানো হয়েছে মোড়ে মোড়ে। যাতায়াতকারীদের পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৩১ আসামিকে সকালে বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এনে রাখা হয়েছে। এ জন্য আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ থেকে কারাগারের সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

রায়কে কেন্দ্র করে ওই এলাকার দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। একে বিপকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চলাচলকারীদের প্রতিটি পুলিশের চেক পোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে।
নাজিমুদ্দিন রোডে পুলিশ সুপারের পদমর্যাদার কর্মকর্তা নাসির আহমেদ খান বলেন, ‘এখনো আসামিদের আদালতে আনা হয়নি। তারা পথে রয়েছেন। এখানে বিভিন্ন বাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রায় ঘিরে কঠোর সতর্কতার মধ্যে রয়েছেন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় হবে আজ রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে।

২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে তিনজন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিন আসামি হলেন জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামির বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জঙ্গি তাজউদ্দিনসহ এখনো ১৮ জন পলাতক। বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।

এর মধ্যে ওই ঘটনায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ষড়যন্ত্র, ঘটনায় সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একটি মামলা যাতে বর্তমানে আসামি সংখ্যা মোট ৪৯ জন। একই ঘটনায় ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে (সংশোধনী-২০০২) অপর একটি মামলায় আসামি সংখ্যা ৩৮ জন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ ৫ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান।

তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তাঁর শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ