আজকের শিরোনাম :

সিনহা হত‍্যা মামলা: তৃতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৭

পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকার্যের তৃতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণ আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে। আজ থেকে শুরু হওয়া স্বাক্ষ্যগ্রহণ ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। ৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিনে ষষ্ঠ সাক্ষীর জেরা শেষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল তৃতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণের এ আদেশ দেন। তৃতীয় দফার প্রথম দিনে তিনজন সাক্ষী হাজিরা দিবেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।

জজ আদালতের সরকারি কৌশুলি ফরিদ বলেন, "মামলার তৃতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে ২০, ২১, ২২ সেপ্টেম্বর। এ তিন দিনে একাধিক সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  দ্বিতীয় দফার শেষ দিন ৮ সেপ্টেম্বর ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরুর পর ষষ্ঠ সাক্ষী শহিদুল ইসলামের জবানবন্দী শেষে জেরার মাধ্যমে দ্বিতীয় দফার টানা চারদিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। বাকি ৬ দিন সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হতে সন্ধ্যা হলেও ষষ্ঠ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা কার্যক্রম বেলা আড়াইটায় শেষ হলে এদিন আদালত মুলতবি ঘোষণা করে তৃতীয় দফার দিন ধার্য্য করেন বিচারক।"

আদালত সূত্র জানায়, অন্য দিনের মতো বুধবারও সকাল পৌনে ১০টার দিকে মামলার আসামী সাবেক ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ১৫ আসামীকে কারাগার হতে আদালতে আনা হয়। দ্বিতীয় দফার চতুর্থ দিনের জন্য হাফেজ মৌলানা শহিদুল ইসলামের সাক্ষ্যের হাজিরা নেওয়া হয়। প্রথম দিন ৬ জনের এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে ৩ জনের হাজিরা নেওয়া হলেও মাত্র একজন করেই সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। শেষদিন হিসেবে বুধবার একজনের হাজিরা নেওয়া হয়। কিন্তু বেলা আড়াইটার দিকে ষষ্ঠ সাক্ষীর জেরা সম্পন্ন হওয়ায় বাকি দুজন সাক্ষীকেকে আদালতে হাজির করেন সরকারি কৌশুলি। কিন্তু বিচারক আদালত মুলতবি ঘোষণা করায় এ দিন আর সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি।

পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ বলেন, "আমাদের প্রচেষ্টা সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা দ্রুত সম্পন্ন করার। তবে, আসামি পক্ষের আইনজীবীগণের অসহযোগিতায় সেটা সম্ভব হয় না। তারা সাক্ষীকে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে সময় নষ্ট করেন। আর ১৫ আসামীর ১৫ আইনজীবী আলাদাভাবে আধঘণ্টা করে জেরার সময় নিয়ে সাড়ে সাত ঘণ্টা সময় লাগে। জবানবন্দী নিতেও সময় লাগে ঘণ্টা দেড়েক। এতে আদালতের কর্মঘণ্টা ৯ ঘণ্টা এবং মধ্যহ্ন বিরতিসহ দাঁড়ায় ১০ ঘণ্টা। ফলে, একজনের বেশি সাক্ষ্যে আগানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। কিন্তু বিচার কার্যের ৭ম দিনে স্বল্প সময়ে জবানবন্দী ও জেরা শেষ হয়। তৃতীয় দফার ধার্য্য দিনেও আসামী পক্ষের আইনজীবীগণ আদালতকে এভাবে সহযোগিতা করবেন বলে আমার বিশ্বাস। 

আদালতের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বাপ্পী শর্মা জানায়, "গত ২৩ আগস্ট শুরু হয় মেজর সিনহা হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম। সাক্ষ্যগ্রহণে আদালতের নির্ধারণ করা প্রথম তিনদিনের প্রথম দিন পুরো ও দ্বিতীয় দিনের অর্ধেক সময় মামলার বাদী নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন ফেরদৌসের সাক্ষ্য ও জেরা হয়। পরে শুরু হয় সিনহার সফরসঙ্গী ও হত্যার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী সিফাতের সাক্ষ্য। এ দু'জনের সাক্ষ্য ও জেরার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিচার কার্যের প্রথম নির্ধারিত তিন দিন। ফলে এ তিনদিনের জন্য নোটিশ পাওয়া ১৫ সাক্ষীর মাঝে বাকি ১৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া সম্ভব হয়নি। ২৫ আগস্ট আদালত ৫ থেকে ৮ সেপ্টম্বর টানা চারদিন পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য দিন ধার্য্য করেন। সেই মতে ৫ সেপ্টেম্বর সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাকি সাক্ষীদের একজনের সাক্ষ্য শুরু হয়ে সারাদিন তাকেই জেরায় দিন শেষ হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনও একই ভাবে একজন সাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা হয়েছে। শেষদিনও একই ভাবে একজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। এতে সাত দিনে সাক্ষ্য নেয়া গেছে মাত্র ৬ জনের। মামলায় মোট সাক্ষী ৮৩ জন। সাক্ষ্য ও জেরার সময় ১৫ আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত রাখায় পুরো জেলা জজ আদালত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।"

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ