আজকের শিরোনাম :

দিহানের ভাইয়ের বিরুদ্ধেও স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, লাশ নিয়ে হয়েছিল বিক্ষোভও

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ১২:২৫

রাজধানীর কলাবাগানে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে ইফতেখার ফারদিন দিহানকে (১৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।  অভিযোগ উঠেছে, গ্রুপ স্টাডির কথা বলে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।

এর আগে, দিহানের পরিবার ও তার বড় ভাই সুপ্ত সরকারের বিরুদ্ধেও হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। পারিবারিক কলহের জেরে সুপ্তর স্ত্রীকে মুখে জোর করে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল দিহানের বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে। মামলার সাক্ষীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে মামলাটি আপস করেছেন সুপ্তর বাবা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিহানেরা তিন ভাই।  তাদের বাবার নাম আবদুর রউফ সরকার। তিনি রাজশাহী জেলার অবসরপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার রাতুগ্রাম গ্রামে তার বাড়ি। তিনি একজন ধর্নাঢ্য ব্যক্তি। এ বাড়ি ছাড়াও জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে তাদের আরও একটি বাড়ি আছে। রাজশাহী শহরেও আছে দু’টি বাড়ি। এর একটি সাগরপাড়া এলাকায়। আরেকটি বাড়ি মহানগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায়। ঢাকায়ও রয়েছে ফ্ল্যাট।

স্থানীয়রা জানান, বড় ছেলে সুপ্তকে নিয়ে আবদুর রউফ সরকার গ্রামে থাকেন। আর মা সানজিদা সরকার শিল্পীর সঙ্গে দিহান ও তার মেজ ভাই নিলয় ঢাকায় থাকেন। নিলয় একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। ছোটবেলা থেকেই দিহান রাজধানী ঢাকায় থাকেন। তাই তার সম্পর্কে গ্রামের মানুষের ধারণা কম। তবে তার বড় ভাই সুপ্তর ব্যাপারে ছিল তাদের ধারণা নেতিবাচক।

এর আগে, ২০০৯ সালে সুপ্তর স্ত্রী রুনা খানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল সুপ্ত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।

দিহানের স্বজন ও মামলার সাক্ষীরা জানান, রুনা খানের বাবার বাড়ি কিশোরগঞ্জ। আর নানির বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর হোসনীগঞ্জ মহল্লায়। সুপ্তর সঙ্গে বিয়ের কিছুদিন পরই রুনা খুন হন। সুপ্ত ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, রুনার মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে।  

এ নিয়ে রুনার মা নিজে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছিলেন। আর ওই সময় আসামিদের শাস্তির দাবিতে রুনার মরদেহ নিয়ে রাজশাহী শহরে বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছিল।

রুনার নানির বাড়ির এলাকার এক নারী ওই হত্যা মামলার সাক্ষী। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকেই রুনাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হতো। শেষে তার মুখে জোর করে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর রুনা হাসপাতালে মারা যান। আমরা তার মরদেহ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করি। মামলাটি সুপ্তর বাবা টাকা দিয়ে মীমাংসা করেছেন। এরপর পুলিশ মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানী ঢাকায় গ্রুপ স্টাডির কথা বলে ডেকে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সুপ্তার ভাই দিহান। তাকে একমাত্র আসামি করে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা ধর্ষণ ও হত্যার মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় বলা হয়েছে, ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণ হলে নির্যাতিতাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে নিয়ে যান অভিযুক্ত নিজেই। এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা মেয়েটির অবস্থা বেগতিক দেখে কৌশলে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে দিহানকে আটক করে।

পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দিহানকে গ্রেফতার দেখানো হয়। শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) আসামি দিহানকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়া হলে তিনি দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পাশবিকতা ও নিষ্ঠুরতার সঙ্গে হত্যা করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান আইনাজীবীরা।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ