আজকের শিরোনাম :

রিফাত হত্যা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির আপিল হাইকোর্টে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২০, ২০:৩২

বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। এই তিন আসামি হলেন- আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মো. হাসান এবং মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়। এ নিয়ে এ মামলায় আয়েশা আক্তার মিন্নিসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি হাইকোর্টে আপিল করলেন।

এদিকে মিন্নির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করতে আগামী পহেলা নভেম্বর রবিবার আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মো. হাসান এবং মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়ের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে গত ১৩ অক্টোবর আদেশ দেন। আদেশে ওই তিন আসামিকে নিম্ন আদালতের করা জরিমানার দণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। ওই তিনজনের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জরিমানার ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে মিন্নি, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত ও রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল দাখিল করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন হত্যা মামলা বিচারের জন্য রয়েছে। কোনোটিতে পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ আচে। আবার কোনোটি পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে মাত্র। সুতরাং আমরা রিফাত শরীফ হত্যাসহ অন্যান্য সকল মামলায় আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও দ্র“ত শুনানি হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেবো।

শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক রায়ে নিহতের স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। একইসঙ্গে চারজনকে খালাস দেয়। ৩ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এর পরদিন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ৪ অক্টোবর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। এ অবস্থায় গত ৬ অক্টোবর নিম্ন আদালতের রায়ের বির“দ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মিন্নির আপিল দাখিল করা হয়।

এই ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে চলে আসায় এখন মামলাটির পেপারবুক তৈরির জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হবে। ডেথ রেফারেন্সহ মামলার যাবতীয় নথিপত্র একত্রিত করে বাঁধাই করা হবে, যা পেপারবুক নামে পরিচিত। এই পেপারবুক ছাপা হয়ে হাইকোর্টে আসার পর প্রধান বিচারপতি মামলাটির বিচারের জন্য একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন।

গতবছর ২৬ জুন সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত রিফাতের পিতা আব্দুল আলিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে মামলা করেন। এই মামলায় নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আসামি করা হয়। মিন্নিকে গতবছর ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করলেও হাইকোর্ট গতবছর ২৯ আগষ্ট এক রায়ে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন। এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি ওইবছরের পহেলা সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। ওই দিনই পুলিশ মিন্নিসহ ২৪জনকে আসামি করে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির ক্ষেত্রে একটি এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তবে আপিল বিভাগ জামিন বহাল রাখায় মিন্নি গতবছর ৩ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। তবে নিম্ন আদালত মিন্নিকে মৃত্যুদণ্ড সাজা দেওয়ায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায় দেওয়ায় সেদিন থেকে মিন্নি আবার কারাগারে। রিফাত হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত নয়ন বন্ড গত বছরের ২ জুলাই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এ কারণে তাকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়নি।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ