‘সরকারি ধান-চাল সংগ্রহে কৃষকের লাভ হচ্ছে না’
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০১৯, ১৩:২০
চলতি মেয়াদের প্রথম ১০০ দিন পার করেছে সরকার। সরকারের এ সময়কার কার্যক্রম নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছে জনপ্রিয় একটি দৈনিক। এ আয়োজনের আজকের পর্বে কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
কৃষি খাতে সরকারের অর্জনকে কীভাবে দেখছেন?
ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। প্রায় প্রতি বছরই আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হতো, কিংবা বিদেশী সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। বর্তমান সরকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পাশাপাশি বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে এনেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকারই সেভাবে সফল হতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে সেটি আর ধরে রাখতে পারেনি কোনো সরকার। ২০০৮ সাল পর্যন্ত উৎপাদন তেমন বাড়েনি। প্রতি বছরই খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমাদের মঙ্গাপীড়িত এলাকা, উপকূলীয় জেলা এমনকি হাওড় এলাকায় খাদ্য ঘাটতি হয়েছিল। ২০০৮ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করা হয়। এ সময়ে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল ২০১৩ সালের মধ্যে নানাজাতীয় খাদ্যে আমরা সফলতা অর্জন করব এবং সফলও হয়েছি। গত বছর কিছুটা আমদানি করতে হয়েছে, তাছাড়া ২০১১ সালের পর থেকে আমাদের চাল আমদানি করতে হয় না। তার কারণ হলো সার, কীটনাশকে অনেক ভর্তুকি দেয়া হয়েছে, কৃষকদের ঋণ সহজলভ্য করা হয়েছে। গত বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে আমরা বৈশ্বিক অবস্থান তুলে ধরতে পেরেছি। সরকারের নানা ক্ষেত্রে সফলতা রয়েছে। কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও সরকার কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে।
কৃষি খাতে ভর্তুকি নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী?
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর কৃষির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। কৃষিতে ভর্তুকি দেয়ার ব্যাপারে বিদেশী উন্নয়ন-সহযোগীদের আপত্তি ছিল। তারা বলত, আমাদের টাকা দিয়ে তোমরা কেন ভর্তুকি দেবে। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বললেন, ভর্তুকি, প্রণোদনা কিংবা ইনভেস্টমেন্ট যা-ই হোক না কেন আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করব। প্রয়োজনীয় উপকরণ, সার, বীজ, পানি, কীটনাশক এগুলো দেয়া হয়েছে। এ বিষয়গুলোয় সরকার অনেক বেশি বিনিয়োগ করেছে, বাজেটে বরাদ্দ দিয়েছে। উপকরণগুলোর প্রাপ্যতা সহজ করেছে। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভর্তুকি আরো বাড়ানো হবে। কারণ বর্তমানে কৃষি শ্রমিকের সংকট রয়েছে। আর উৎপাদন ক্ষেত্রে শ্রমিকের খরচই সবচেয়ে বেশি। ফলে যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বিকল্প নেই। আর কৃষক পর্যায়ে আধুনিক যন্ত্রের প্রসার ঘটাতে আরো বেশি ভর্তুকির প্রয়োজন।
১০০ দিনের দায়িত্বকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আমরা টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছি। তাই এখানে ১০০ দিনকে সেভাবে বিবেচনায় নিইনি। অন্য দল ক্ষমতায় এলে তাদের কাছে ১০০ দিনের গুরুত্ব থাকত। আমরা যে বলেছি আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছি, এর গতিকে আরো বাড়াতে চাই। উন্নয়নকে আরো ত্বরান্বিত করতে চাই। ধারাবাহিক কাজগুলোকে শাণিত করতে চাই। আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো কৃষির বিষয়ে উন্নয়ন কীভাবে করা যায়। কৃষকের স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করা যায়। মানুষকে পুষ্টিজাতীয় ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে চাই। কৃষির আধুনিকীকরণ বা বাণিজ্যিকীকরণ এবং যান্ত্রিকীকরণ বাড়াতে চাই। কৃষকদের সংগঠিত করতে চাই। যান্ত্রিকীকরণে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে, হাওড় অঞ্চলে যেটা ৭০ শতাংশ। আমাদের লক্ষ্য এটা অব্যাহত রাখা। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত ফসল উৎপাদন না করে বরং লাভজনক ফসল উৎপাদনে জোর দিচ্ছি। কাজুবাদাম, কফি আবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। আবার মধুপুরেও কফি আবাদ হবে। এর আন্তর্জাতিক বাজারও ভালো। সব মিলিয়ে কৃষির উন্নয়নে কৃষকের উন্নয়ন ঘটানোই আমার ভিশন।
কৃষিপণ্যের রফতানি বাড়াতে কী ধরনের উদ্যোগ থাকবে?
বাংলাদেশে আলুর উৎপাদন চাহিদার অনেক বেশি। গত অর্থবছরে এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। আর চাহিদা ৬০-৬৫ লাখ টন। আমরা এখন আলু রফতানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি। আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারের মান নির্ণয়ের জন্য যে ধরনের সার্টিফিকেট দেয়া হয়, তার কোনো ল্যাব নেই। আমরা চেষ্টা করছি ঢাকা বিমানবন্দরে এ ধরনের একটা ল্যাব তৈরি করতে, যাতে রফতানি পণ্য চেক করা যায়। ইন্দোনেশিয়া বলছে, বাংলাদেশে আলুর মান নির্ণয়ে ভালো মানের ল্যাবরেটরি নেই। রাশিয়া বলেছে, আমাদের আলু নিয়ে আরো কাজ করতে হবে। তাই আলু রফতানি নিয়ে আমাদের নিবিড়ভাবে কাজ করা প্রয়োজন। বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করে আমাদের রফতানির সক্ষমতা অর্জন করতে কাজ করছি। আলু তথা কৃষিপণ্যের রোগ নির্ণয়ের একাধিক ল্যাবরেটরি স্থাপন ছাড়াও কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ল্যাবরেটরি করা হবে। কৃষিপণ্য রফতানির সমস্যা নিরূপণে একটি কমিটি গঠন ও রফতানির জন্য একটি সেল গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে সব ধরনের কৃষিপণ্য রফতানির গতি ত্বরান্বিত হবে।
কৃষিপণ্যের রফতানি বৈচিত্র্যকরণে কী উদ্যোগ নিচ্ছেন?
আমাদের কৃষির অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণ করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে হবে। এজন্য কৃষিপণ্যের বৈচিত্র্যায়ণ ও বাণিজ্যিকীকরণ অপরিহার্য। কীভাবে বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করা যায়, তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম পারলে আমরা কেন নয়? আমাদের সম্ভাবনা বেশি। রফতানি ছাড়াও কৃষির আধুনিকায়ন, বাজারজাত, যান্ত্রিকীকরণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো, কৃষির গবেষণা ও প্রশিক্ষণে জোর দেয়া হচ্ছে। নিরাপদ ও পুষ্টিমানসমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকারের লক্ষ্য গ্রাম পর্যায় থেকে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। শহরের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেয়া। কৃষির বাণিজ্যিকীরণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে যুবকদের কর্মমুখী করা হবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরো গতিশীল হবে।
জনগণের জন্য পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ ও উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করা হবে। রফতানি না হওয়ার কারণে কৃষিপণ্যের বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এতে অনেক ক্ষেত্রে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন ও রফতানি বাড়াতে পারলে দেশের বাজারও সম্প্রসারিত হবে। কৃষক তার ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবেন। বাড়বে কৃষি উৎপাদন। নিশ্চিত হবে নিরাপদ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের জোগান।
কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ কীভাবে এগিয়ে নেবেন?
কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ একান্ত প্রয়োজন। এতে কৃষকের আয় বাড়বে, অতিরিক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। জনগণের পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ খাতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হবে। আমাদের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে হলে প্রক্রিয়াজাত ও বাণিজ্যিকীকরণ অপরিহার্য। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প দেশের বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও রফতানির ভিত্তিতে নতুন নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। যথাযথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এসব থেকে পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ এবং এ খাতের উন্নয়ন ঘটতে পারে। কৃষির যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সম্ভাবনাও রয়েছে। এ শিল্পের যথাযথ বিকাশ না হওয়ায় কৃষিপণ্যের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক। কৃষককে বিকল্প পথ দেখাতে হবে। যেসব জায়গায় ধান বা আলু উৎপাদন ভালো হয় না সেসব জায়গা চিহ্নিত করে ভুট্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য যান্ত্রিকীকরণ বাড়াতে হবে। ভুট্টার আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে বার্ষিক উৎপাদন ৬০ লাখ টন করা হবে। তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে কৃষকদের বিনামূল্যে ভুট্টাবীজ সরবরাহ করার বিষয়টি আলোচনায় আছে।
কৃষকের ধানের দাম নিশ্চিত করতে সরকারের নীতি কী?
ধান উৎপাদন কিন্তু এ মুহূর্তে তেমন লাভজনক নয়। সংকটটা হলো যদি ধান ও চালের দাম বাড়ে তাহলে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আবার ধানের দাম কমে গেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। কাজেই আমরা সবসময়ই চাই, এর মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকুক। এজন্য বাজার থেকে ২০-২৫ লাখ টন চাল সংগ্রহ করা হয়। পরোক্ষভাবে কিছুটা প্রভাব পড়লেও প্রত্যক্ষভাবে এতে লাভবান হয় চালকল মালিক ও প্রভাবশালী মহল। আবার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে চাল কেনায়ও নানা সমস্যা রয়েছে। যেমন একজন কৃষক চাল নিয়ে আসবেন ভ্যানে করে। আসার পর দেখা যাবে, চালে আর্দ্রতা সঠিক মাত্রায় নেই। ফলে কৃষক আরো নিরুৎসাহিত হবেন। উন্নত বিশ্বের কিছু দেশ যেমন জাপান, কোরিয়া কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের সবটাই কিনে নেয়। পরে আবার সেটা কম দামে বিক্রি করে। জাপানের জিডিপিতে কৃষির অবদান দুই ভাগ কিন্তু ভর্তুকি আরো বেশি। তবে আমরা কৃষি উপকরণে সহায়তা আরো বাড়ানোর পক্ষে। এটা করা গেলে সব ধরনের কৃষকের কাছে সরকারের সুবিধা পৌঁছা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো যাবে। ফলে কম মূল্যে বিক্রির পরও কৃষকের মুনাফা কমবে না।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় কী গুরুত্ব পাচ্ছে?
ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ হলো দুটি। পুষ্টিজাতীয় ও নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা। নিরাপদ খাবার একটা বড় চ্যালেঞ্জ, এটা আমাদের দুর্বল দিক। খাদ্যে যে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে, সেটা বন্ধ করতে না পারলে আমরা ব্যর্থ হব। এটার জন্য আরো কঠোর নজরদারির প্রয়োজন। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
ধানের নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে স্বাদের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। এটি বিবেচনায় নিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। পর্যাপ্ত জাত কেন মাঠে যাচ্ছে না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাত মাঠ পর্যায়ে প্রসারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফারাক থাকলে তা দূর করা হবে। এখনো ৪০-৫০ লাখ টন গম আমদানি করতে হচ্ছে আমাদের। গমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। দেশ দানাদার খাদ্যে বিশেষ করে চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও ধান উৎপাদন আরো বাড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে চালকে রফতানি বাজারে প্রবেশ করানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। হাওড় ও উপকূলীয় অঞ্চলে আবাদ সম্প্রসারণে বন্যা, খরা, লবণাক্তসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে গুরুত্ব বাড়ানো হবে। কৃষির বাজারজাত, বহুমুখীকরণ, কৃষিজাত শিল্প এবং ন্যায্যমূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তাসহ বাজার সুবিধা বিস্তৃত করা হবে। কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরই ভবিষ্যতের লক্ষ্য।
(দৈনিক বণিক বার্তা থেকে সংগৃহীদ) এবিএন/সাদিক/জসিম
ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। প্রায় প্রতি বছরই আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হতো, কিংবা বিদেশী সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। বর্তমান সরকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পাশাপাশি বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে এনেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকারই সেভাবে সফল হতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে সেটি আর ধরে রাখতে পারেনি কোনো সরকার। ২০০৮ সাল পর্যন্ত উৎপাদন তেমন বাড়েনি। প্রতি বছরই খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমাদের মঙ্গাপীড়িত এলাকা, উপকূলীয় জেলা এমনকি হাওড় এলাকায় খাদ্য ঘাটতি হয়েছিল। ২০০৮ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করা হয়। এ সময়ে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল ২০১৩ সালের মধ্যে নানাজাতীয় খাদ্যে আমরা সফলতা অর্জন করব এবং সফলও হয়েছি। গত বছর কিছুটা আমদানি করতে হয়েছে, তাছাড়া ২০১১ সালের পর থেকে আমাদের চাল আমদানি করতে হয় না। তার কারণ হলো সার, কীটনাশকে অনেক ভর্তুকি দেয়া হয়েছে, কৃষকদের ঋণ সহজলভ্য করা হয়েছে। গত বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে আমরা বৈশ্বিক অবস্থান তুলে ধরতে পেরেছি। সরকারের নানা ক্ষেত্রে সফলতা রয়েছে। কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও সরকার কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে।
(দৈনিক বণিক বার্তা থেকে সংগৃহীদ) এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ