‘সুস্থ হয়ে আমার মতো বাঁচতে চাই’
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৫০
অতি উচ্চতার কারণে কক্সবাজারের জিন্নাত আলী এখন সবার চেনা। ৮ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার ২২ বছরের এ যুবকই দেশের সবচেয়ে দীর্ঘকায় মানুষ। শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে। সেখানেই একটি জনপ্রিয় দৈনিকের সঙ্গে কথা হয় তার অসুস্থতা ও প্রত্যাশা নিয়ে। তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়ার আগে কেমন কেটেছে?
কক্সবাজারের রামুতে পাহাড়ি এলাকায় আমাদের বাড়ি। আমাদের ওখানে মানুষ অনেক কম। ছোটবেলায় আমি গ্রামের আর সব শিশুর মতোই ছিলাম। অন্যদের চেয়ে একটু লম্বা ছিলাম। তখন অনেক বন্ধু ছিল। তাদের সঙ্গে খেলতাম। এখন কোনো বন্ধু নেই। ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ভাইয়ের সঙ্গে ক্ষেতে কাজ করতাম। অসুখের কারণে সাত-আট বছর আগে সে কাজও বন্ধ হয়ে যায়।
কাজ বন্ধ হওয়ার পর কীভাবে সময় কাটে?
বাড়িতেই সব সময় থাকি। কাজ করতে পারি না। বাইরে বের হই না। সবাই ঘিরে ধরে, ভালো লাগে না। আমাদের ওখানে মানুষ কম, তা-ও বাইরে বের হই না। বাজারেও যাই না। চুল কাটানোর কাজও বাড়িতেই করি। অতিউচ্চতার কারণে কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়-
পায়ে ব্যথা হয়। শরীর ভারী হয়ে গেছে। তাই কাজ করতে পারি না। শরীরের চাহিদার কারণে বেশি খাবার খাই। তবে না খেলে সমস্যা হয় না। যেদিন খাবার থাকে খাই, না থাকলে খাই না। হাঁটা-চলায় তেমন কোনো সমস্যা হয় না। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি। ঘুমেরও কোনো সমস্যা নেই। চিকিৎসা নিয়ে কী ভাবছেন?
বাসায় ঝাড়ফুঁক করেছি। এখানে আসার পর ডাক্তাররা পরীক্ষা করছেন। কী অসুখ তা এখনো জানা যায়নি। যা-ই হোক আমি অস্ত্রোপচার করাতে চাই না। ডাক্তাররা যদি নিশ্চয়তা দেন ভালো হয়ে যাব, তাহলে শুধু অস্ত্রোপচার করতে দেব। অতি উচ্চতা নিয়ে মানুষের আগ্রহ আপনাকে পীড়া দেয় কিনা?
বাজারে বা কোথাও গেলে মানুষ খুব বিরক্ত করে, সহ্য করতে পারি না। বিরক্ত লাগে, খারাপ লাগে। অসহ্য হয়ে যায়, কাকে কী বলতে হয় বুঝি না। আমি চাই, মানুষ যেন আমাকে বিরক্ত না করে, সুস্থ হয়ে স্বাভাবিকভাবে আমার মতো করে বাঁচতে চাই। স্বাভাবিকভাবে বাবা-মা, ভাইদের নিয়ে থাকতে চাই। আমি সুস্থ থাকলে দুই ভাই মিলে কাজ করতাম। তাহলে সংসার চালাতে ভাইয়ের কষ্ট হতো না। বড় ভাই আমাকে খুব ভালোবাসে। চিকিৎসার জন্য এতদূর নিয়ে এসেছে। ভাইয়ের একার পক্ষে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। ভাই আমাকে নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকে। সুস্থ হয়ে কী করবেন? বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে?
আমি তো লেখাপড়া জানি না। কোনো ধরনের ব্যবসা করতেও পারব না। আমাদের গ্রামে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। তাই কক্সবাজার শহরে যদি কেউ আমার থাকার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে বাবা-মা, ভাইদের নিয়ে থাকতে চাই। একটা বাড়ি থাকলে সেটা ভাড়া দিয়ে চলতে চাই। তাহলে আর কারো দরকার হবে না। শহরে থাকলে চিকিৎসাও নিতে পারব। (দৈনিক বণিক বার্তা থেকে সংগৃহীত) এবিএন/সাদিক/জসিম
কক্সবাজারের রামুতে পাহাড়ি এলাকায় আমাদের বাড়ি। আমাদের ওখানে মানুষ অনেক কম। ছোটবেলায় আমি গ্রামের আর সব শিশুর মতোই ছিলাম। অন্যদের চেয়ে একটু লম্বা ছিলাম। তখন অনেক বন্ধু ছিল। তাদের সঙ্গে খেলতাম। এখন কোনো বন্ধু নেই। ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ভাইয়ের সঙ্গে ক্ষেতে কাজ করতাম। অসুখের কারণে সাত-আট বছর আগে সে কাজও বন্ধ হয়ে যায়।
বাড়িতেই সব সময় থাকি। কাজ করতে পারি না। বাইরে বের হই না। সবাই ঘিরে ধরে, ভালো লাগে না। আমাদের ওখানে মানুষ কম, তা-ও বাইরে বের হই না। বাজারেও যাই না। চুল কাটানোর কাজও বাড়িতেই করি। অতিউচ্চতার কারণে কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়-
পায়ে ব্যথা হয়। শরীর ভারী হয়ে গেছে। তাই কাজ করতে পারি না। শরীরের চাহিদার কারণে বেশি খাবার খাই। তবে না খেলে সমস্যা হয় না। যেদিন খাবার থাকে খাই, না থাকলে খাই না। হাঁটা-চলায় তেমন কোনো সমস্যা হয় না। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি। ঘুমেরও কোনো সমস্যা নেই। চিকিৎসা নিয়ে কী ভাবছেন?
বাসায় ঝাড়ফুঁক করেছি। এখানে আসার পর ডাক্তাররা পরীক্ষা করছেন। কী অসুখ তা এখনো জানা যায়নি। যা-ই হোক আমি অস্ত্রোপচার করাতে চাই না। ডাক্তাররা যদি নিশ্চয়তা দেন ভালো হয়ে যাব, তাহলে শুধু অস্ত্রোপচার করতে দেব। অতি উচ্চতা নিয়ে মানুষের আগ্রহ আপনাকে পীড়া দেয় কিনা?
বাজারে বা কোথাও গেলে মানুষ খুব বিরক্ত করে, সহ্য করতে পারি না। বিরক্ত লাগে, খারাপ লাগে। অসহ্য হয়ে যায়, কাকে কী বলতে হয় বুঝি না। আমি চাই, মানুষ যেন আমাকে বিরক্ত না করে, সুস্থ হয়ে স্বাভাবিকভাবে আমার মতো করে বাঁচতে চাই। স্বাভাবিকভাবে বাবা-মা, ভাইদের নিয়ে থাকতে চাই। আমি সুস্থ থাকলে দুই ভাই মিলে কাজ করতাম। তাহলে সংসার চালাতে ভাইয়ের কষ্ট হতো না। বড় ভাই আমাকে খুব ভালোবাসে। চিকিৎসার জন্য এতদূর নিয়ে এসেছে। ভাইয়ের একার পক্ষে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। ভাই আমাকে নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকে। সুস্থ হয়ে কী করবেন? বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে?
আমি তো লেখাপড়া জানি না। কোনো ধরনের ব্যবসা করতেও পারব না। আমাদের গ্রামে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। তাই কক্সবাজার শহরে যদি কেউ আমার থাকার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে বাবা-মা, ভাইদের নিয়ে থাকতে চাই। একটা বাড়ি থাকলে সেটা ভাড়া দিয়ে চলতে চাই। তাহলে আর কারো দরকার হবে না। শহরে থাকলে চিকিৎসাও নিতে পারব। (দৈনিক বণিক বার্তা থেকে সংগৃহীত) এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ