আজকের শিরোনাম :

বিশ্ববাজারে প্রাণের চাহিদা বাড়ছে: ইলিয়াস মৃধা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৩১

বৈচিত্র্যময় পণ্যসম্ভার নিয়ে দেশের বাজারে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে প্রাণ গ্রুপ। একই সঙ্গে তাদের দৃষ্টি ছিল আন্তর্জাতিক বাজারের দিকেও। বাংলাদেশি বহুজাতিক কোম্পানি হিসেবে প্রতিযোগিতামুখর বৈশ্বিক বাজারে ঠাঁই করে নেওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু প্রাণ গ্রুপের। সেই লক্ষ্যে উদ্ভাবন ও মানোন্নয়নে মনোযোগী হয় তারা। ইতোমধ্যে তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।

আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে তাদের অবস্থা জানান দিতে চায়। অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চায় গ্রুপটি। বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াতে চায়। ১৯৯৬ সালে রফতানি কার্যক্রম শুরুর পর বর্তমানে ১৪১টি দেশে নিয়মিত রফতানি হচ্ছে প্রাণের পণ্য। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রাণ বিশ্বের সব দেশে পণ্যসামগ্রী পৌঁছাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছে প্রাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াস মৃধা।

সম্প্রতি একটি অনলাইনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রাণের ব্যবস্থাপনার পরিচালক এই আশা ব্যক্ত করেন। 

সাংবাদিক: প্রতি বছর কত তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে প্রাণ?

ইলিয়াস মৃধা: বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএলের পণ্য দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। ফলে তরুণ চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে প্রাণ-আরএফএল গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। প্রতি বছর এখানে অনেক লোক নিয়োগ পান। বছরে ১২ হাজার তরুণ প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি নেন। আর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংবাদপত্রে ও চাকরির বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সাংবাদিক: নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে আপনার পরামর্শ কি?

ইলিয়াস মৃধা: পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারি-বেসরকারিভাবে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করানো হয়। নতুন কোন শিল্প তৈরি করার ক্ষেত্রে কি কি সমস্যা পড়তে হয়। কিভাবে টাকা যোগান দিবেন। কত পরিমাণ টাকা ব্যাংক থেকে পাবেন। নিজে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন। এ বিষয় নতুন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের দেশেও এমন করা যেতে পারে। নতুন উদ্যোক্তার যারা তৈরি হবে তাদেরকে যদি বিভিন্ন শিল্প-কারখান পরিদর্শন করার সুযোগ দেওয়া যায়। তাহলে দেশে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে বলে আমার মনে হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানিকভাবে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো থেকে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সাংবাদিক: নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য প্রতিষ্ঠানিক বাজারমুখী বা কর্মমূখী শিক্ষার প্রয়োজন আছে কি?

ইলিয়াস মৃধা: আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আগের থেকে অনেকটা উন্নতি লাভ করেছে। তবে আমার মনে হয় শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের বাস্তবমূখী শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পাশাপাশি যারা শিল্প পরিচালনা করে তাদেকেও শিক্ষক হিসেবে রাখা যেতে পারে। তাহলে শিক্ষার্থীরা বাস্তবমূখী শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। বর্তমানে যারা সিলেবাস তৈরি করছেন তারা শিল্পের বর্তমান অবস্থান জানেন না। তার যদি শিল্প-কারখানে পরিদর্শন করে। শিল্পপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে যদি সিলেবাস তৈরি করেন। তাহলে মনে হয় অনেক ভালো হবে। এছাড়া শিল্প-কারখানা তৈরি করার জন্য কি কি দরকার তা যদি পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করা যায়। তাহলে সুবিধা লাভ করা যায়। আমরা যারা শিল্প-কারখান পরিচালনা করি তাদের জন্য সুবিধা হবে।

বর্তমানে যে শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে বের হয়ে তিন থেকে চার বছর তাকে আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে হয়। যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এসব বিষয় পড়ালেখা করে আসতো তাহলে আবার নতুন করে পড়াশোনা করতে হতো না।

সাংবাদিক: আমাদের দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব শিক্ষার্থীরা পাশ করে বের হয়ে চাকরির বাজারে আসছেন, তারা কেমন প্রভাব ফেলছে?

ইলিয়াস মৃধা: তার অনেক ভালো করছে। তার বিভিন্ন সময় আমাদের কারখানাগুলো পরিদর্শন করছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের সঙ্গে বসে তাদের সিলেবাস তৈরি করছে। তবে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় কৃষিকে তেমনভাবে যুক্ত করা হয়নি। যে সব শিক্ষার্থীরা এম বিএ শেষ করে এসে তাদের যে ব্যাংক ও বিমা পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু  কৃষির ওপর কেন হচ্ছে না আমার বুঝে আসে না।

সাংবাদিক: আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

ইলিয়াস মৃধা: আপনাকেও ধন্যবাদ। 

সংগৃহিত

এবিএন/মাইকেল/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ