আজকের শিরোনাম :

বিমানে সেলফ ডেলিভারি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৪২ | আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৫৯

ভিডিও থেকে সংগৃহীত
ওমানের মাস্কাট থেকে বিশেষ একটি ফ্লাইট ঢাকায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মাস্কাট এয়ারপোর্টের বোর্ডিং ব্রিজ থেকে ধীরে ধীরে রানওয়ের দিকে যাচ্ছিল ফ্লাইটটি। এবার আকাশে উড়ার একদম আগমুহূর্ত। কেবিন ক্রুরা যাত্রীদের মাথা গুনে হিসাব মিলিয়ে দেখছেন। দেখছিলেন, সব যাত্রী ঠিকমতো সিটে বসে বেল্ট বেঁধেছেন কি-না, অন্যান্য নিয়মকানুন মানছে কি-না।

একজন নারীকে না দেখতে পেয়ে তারা টয়লেটে নক করছিলেন। কারণ বিমান রানওয়েতে থাকাকালীন ওড়ার আগ মুহূর্তে কাউকে সিট থেকে উঠতে বা টয়লেটে যেতে দেয়া হয় না।

সেই নারীকে খুঁজতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে নক করলেন ক্রুরা। ভেতর থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে দরজা খুললেন সেই নারী। তার কোলে ছিল একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান। টয়লেটের ভেতর নিজেই অর্থাৎ সেলফ ডেলিভারি করেন ওই নারী।

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তখন এদিক-ওদিক ছুটছিলেন কেবিন ক্রুরা। সঙ্গে সঙ্গে সন্তান প্রসবের সংবাদ ক্যাপ্টেনকে জানান তারা। গোটা ফ্লাইটজুড়ে তখন আনন্দের বন্যা। প্রত্যেকের চোখে মুখে ছিল আনন্দের ছাপ। ক্রুদের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে ক্যাপ্টেন বিমানটিকে নিয়ে বোর্ডিং ব্রিজের দিকে যান। এরপর কেবিনে আসেন।

ওই ফ্লাইটে থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘করোনাকালীন ওমানের মাস্কাটের অনেক প্রবাসীই দেশে ফিরতে পারছিলেন না। অনেক কষ্ট করে বিমান বাংলাদেশের একটি বিশেষ ফ্লাইটের টিকিট জোগাড় করেছেন। টিকেট পেলেও খুব একটা খুশি ছিলেন না ফ্লাইটের কেউই। ছিল ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তা। নবজাতকের কান্না শুনেই সবাই খুব উৎফুল্ল হয়ে পড়েন।’

মাস্কাট বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ফ্লাইটটিতে ওই নারী তার পরিবারের সঙ্গে ছিলেন। গর্ভবতী অবস্থায় তার ৮ মাস চলছিল। হঠাৎ করে টয়লেটে গিয়ে তার ব্যথা অনুভব হলে তিনি নিজেই তার ডেলিভারি করেন। পরে বিমান বাংলাদেশের ক্রুরা এই সংবাদ জানালে সেখানে একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়। ওই টিম তাদেরকে বিমান থেকে বের করে মাস্কাটে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ রয়েছেন।

এদিকে বিমান বাংলাদেশ বিমানের ভেতর প্রথমবারের মতো পৃথিবীর আলো দেখা সন্তানটিকে নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বিমান ক্রুদেরও অনেকটা উৎফুল্ল দেখা যায়।

ভিডিওতে তাদের একজন বলেন, আলহামদুলিল্লাহ্‌ একটু আগে বিমান বাংলাদেশের এয়ারক্রাফটে একটি ফুটফুটে বাচ্চার জন্ম হয়েছে। আপাতত কেবিন ক্রুরা তাকে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রেখেছেন। আমরা লাকি (সৌভাগ্যবান), বিমানের জন্য এই শিশু আশীর্বাদস্বরূপ।


এবিএন/ইমরান/জসিম/এসই   

এই বিভাগের আরো সংবাদ