'রুশ টিকার' পর সামাজিক মাধ্যমে পুতিনকে নিয়ে মিমের বন্যা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২০, ২২:১৩
রাশিয়া করোনাভাইরাসের একটি টিকা তৈরির যে ঘোষণা দিয়েছে - তাতে শুধু যে আন্তর্জাতিক উদ্বেগই সৃষ্টি হয়েছে তাই নয়, সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে নানা রকম ঠাট্টা –তামাশার পাশাপাশি বিচিত্র সব ভুয়া তথ্য প্রচার। তারই কয়েকটির যথার্থতা পরীক্ষা করেছেন বিবিসি রিয়ালিটি চেকের জ্যাক গুডম্যান এবং ফ্লোরা কারমাইকেল।
পুতিন দি সুপারহিরো
রাশিয়ার টিকা ঘোষণার পরই সামাজিক মাধ্যমে নানা ভাষায় বহু মিম শেয়ার করা শুরু হয়।
এর কোন কোনটিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে – কমিকস চরিত্র স্পাইডারম্যান বা আয়রনম্যানের মত একজন ‘সুপারহিরো’ হিসেবে দেখানো হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশ জনপ্রিয় হয় যেটি তাতে দেখা যায় – মি. পুতিন একটি বিশাল গ্রিজলি জাতীয় ভালুকের ওপর সওয়ার হয়ে আছেন – তার পিঠে বন্দুকের মত ঝুলছে স্ট্র্যাপ দিয়ে বাঁধা একটি অতিকায় ইনজেকশন দেবার সিরিঞ্জ।
এরকম একটি মিমে দাবি করা হয় যে মি. পুতিন নিজেই এটা শেয়ার করেছেন – যদিও তা সঠিক নয়।
ফেসবুকে ‘মি. পুতিনের নামে’ একটি পোস্ট বেরোয় – যাতে টিকা সংক্রান্ত রাশিয়ার ঘোষণাটি আছে।
ফেসবুকে এটি ২ লক্ষেরও বেশি বার শেয়ার হয়েছে। এতে যে হাজার হাজার লোকে মন্তব্য করেছেন - তারা হয়তো এ ধারণাই করছেন যে এটা মি. পুতিনেরই এ্যাকাউন্ট। কিন্তু আসলে এটি মি. পুতিনের আনুষ্ঠানিক এ্যাকাউন্ট নয়। যতদূর জানা যায়, রুশ প্রেসিডেন্ট সামাজিক মাধ্যম এড়িয়ে চলেন। বার্তাটিতে রুশ টিকার সাথে মহাকাশে প্রথম সোভিয়েত উপগ্রহ উৎক্ষেপণের তুলনা করা হয়, বলা হয় এই টিকা কোভিড-১৯ মুক্ত, মাস্ক ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতামুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার পথ সুগম করবে। তবে রাশিয়ার এই টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে হয়তো এর নিরাপত্তার দিকে যথাযথভাবে নজর দেয়া হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা আন্তর্জাতিক নির্দেশনা মেনে চলে। রাশিয়ার অতিরঞ্জিত দাবি ফেসবুকে জনপ্রিয় হওয়া আরেকটি পোস্টে দাবি করা হয়, “রাশিয়ার টিকা অতীতে বার বার বিশ্বকে রক্ষা করেছে।“ এতে দাবি করা হয়, কলেরা এবং পোলিও সহ বেশ কিছু রোগের টিকা রাশিয়াতে আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসবিদ এবং স্নায়ুযুদ্ধের যুগের রোগনিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ড. ডোরা ভার্গা বলেন, এটা এক বড় রকমের অতিরঞ্জন। আসলে ফরাসী বিজ্ঞানী লুই পাস্তুরই প্রথম কলেরার টিকা আবিষ্কার করেছিলেন, যা মুরগির কলেরা প্রতিরোধ করে । আর ১৮৮৫ সালে প্রথম যে কলেরার টিকা দিয়ে মানুষকে কলেরা-প্রতিরোধী করা হয় – তা আবিষ্কার করেন স্পেনের এক ডাক্তার জেইম ফেরান। পোলিওর প্রথম কার্যকর টিকা আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকান ভাইরোলজিস্ট ড. জোনাস সাল্ক, ১৯৫৫ সালে। তবে এর পর মুখে খাবার মত টিকা আবিষ্কুত হয়েছিল যৌথভাবে আমেরিকান ড. আলবার্ট সাবিন, এবং রুশ বিজ্ঞানী মিখাইল চুমাকভের চেষ্টায়। এ টিকা এখনো সারা পৃথিবীতে ব্যবহার করা হচ্ছে। বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সমালোচনা ফেসবুকে ছড়িয়েছে ইতালিয়ান ভাষায় একটি পোস্ট – যা ভ্লাদিমির পুতিনের একটি উক্তি – কিন্তু তা অন্য কোথাও দেখা যায় নি, এমনকি রাশিয়াতেও নয়। ফেসবুকে এটি ৩৫ হাজারেরও বেশি লাইক ও শেয়ার পেয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট পুতিন বলছেন, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো আমাদেরকে টিকা ছাড়তে দেরি করতে বলেছে। কিন্তু এটা অর্থনীতির ব্যাপার নয়, যখন লক্ষ লক্ষ লোকের জীবনের প্রশ্ন ওঠে তখন রাশিয়া টাকার কথা চিন্তা করে না।“ এরকমই আরেকটি পোস্ট বেরিয়েছিল একটি পুতিন ফ্যান পেজে, হয়তো এটা তারই একটা ভুল অনুবাদ হতে পারে। তবে এই এ্যাকাউন্ট মি পুতিনের নয়, এবং তার এমন কোন উক্তি আর কোথাও প্রকাশিত হয়নি। পুতিনের মেয়ের টিকা নেয়ার ছবিটি ভুয়া বেশ কিছু পোস্টে ভ্লাদিমির পুতিনের মেয়ের ছবি বেরিয়েছে – যিনি টিকা নিয়েছেন বলে মি. পুতিন নিজেই বলেছেন। তবে মি. পুতিন বলেননি যে তার কোন মেয়ে টিকা নিয়েছেন, যদিও তিনি বলেছেন টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তার কিছু সময়ের জন্য জ্বর হয়েছিল। ভারতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে যাতে মি. পুতিনের মেয়েকে টিকা নিতে দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হলো, এই মেয়েটি মি. পুতিনের কন্যা নন। রাশিয়ার মিডিয়াতেই এটা শনাক্ত হয়েছে যে তিনি টিকা পরীক্ষায় একজন স্বেচ্ছাসেবী, এবং মিলিটারি মেডিক্যাল একাডেমির একজন ক্যাডেট। এবিএন/মমিন/জসিম
ফেসবুকে এটি ২ লক্ষেরও বেশি বার শেয়ার হয়েছে। এতে যে হাজার হাজার লোকে মন্তব্য করেছেন - তারা হয়তো এ ধারণাই করছেন যে এটা মি. পুতিনেরই এ্যাকাউন্ট। কিন্তু আসলে এটি মি. পুতিনের আনুষ্ঠানিক এ্যাকাউন্ট নয়। যতদূর জানা যায়, রুশ প্রেসিডেন্ট সামাজিক মাধ্যম এড়িয়ে চলেন। বার্তাটিতে রুশ টিকার সাথে মহাকাশে প্রথম সোভিয়েত উপগ্রহ উৎক্ষেপণের তুলনা করা হয়, বলা হয় এই টিকা কোভিড-১৯ মুক্ত, মাস্ক ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতামুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার পথ সুগম করবে। তবে রাশিয়ার এই টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে হয়তো এর নিরাপত্তার দিকে যথাযথভাবে নজর দেয়া হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা আন্তর্জাতিক নির্দেশনা মেনে চলে। রাশিয়ার অতিরঞ্জিত দাবি ফেসবুকে জনপ্রিয় হওয়া আরেকটি পোস্টে দাবি করা হয়, “রাশিয়ার টিকা অতীতে বার বার বিশ্বকে রক্ষা করেছে।“ এতে দাবি করা হয়, কলেরা এবং পোলিও সহ বেশ কিছু রোগের টিকা রাশিয়াতে আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসবিদ এবং স্নায়ুযুদ্ধের যুগের রোগনিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ড. ডোরা ভার্গা বলেন, এটা এক বড় রকমের অতিরঞ্জন। আসলে ফরাসী বিজ্ঞানী লুই পাস্তুরই প্রথম কলেরার টিকা আবিষ্কার করেছিলেন, যা মুরগির কলেরা প্রতিরোধ করে । আর ১৮৮৫ সালে প্রথম যে কলেরার টিকা দিয়ে মানুষকে কলেরা-প্রতিরোধী করা হয় – তা আবিষ্কার করেন স্পেনের এক ডাক্তার জেইম ফেরান। পোলিওর প্রথম কার্যকর টিকা আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকান ভাইরোলজিস্ট ড. জোনাস সাল্ক, ১৯৫৫ সালে। তবে এর পর মুখে খাবার মত টিকা আবিষ্কুত হয়েছিল যৌথভাবে আমেরিকান ড. আলবার্ট সাবিন, এবং রুশ বিজ্ঞানী মিখাইল চুমাকভের চেষ্টায়। এ টিকা এখনো সারা পৃথিবীতে ব্যবহার করা হচ্ছে। বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সমালোচনা ফেসবুকে ছড়িয়েছে ইতালিয়ান ভাষায় একটি পোস্ট – যা ভ্লাদিমির পুতিনের একটি উক্তি – কিন্তু তা অন্য কোথাও দেখা যায় নি, এমনকি রাশিয়াতেও নয়। ফেসবুকে এটি ৩৫ হাজারেরও বেশি লাইক ও শেয়ার পেয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট পুতিন বলছেন, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো আমাদেরকে টিকা ছাড়তে দেরি করতে বলেছে। কিন্তু এটা অর্থনীতির ব্যাপার নয়, যখন লক্ষ লক্ষ লোকের জীবনের প্রশ্ন ওঠে তখন রাশিয়া টাকার কথা চিন্তা করে না।“ এরকমই আরেকটি পোস্ট বেরিয়েছিল একটি পুতিন ফ্যান পেজে, হয়তো এটা তারই একটা ভুল অনুবাদ হতে পারে। তবে এই এ্যাকাউন্ট মি পুতিনের নয়, এবং তার এমন কোন উক্তি আর কোথাও প্রকাশিত হয়নি। পুতিনের মেয়ের টিকা নেয়ার ছবিটি ভুয়া বেশ কিছু পোস্টে ভ্লাদিমির পুতিনের মেয়ের ছবি বেরিয়েছে – যিনি টিকা নিয়েছেন বলে মি. পুতিন নিজেই বলেছেন। তবে মি. পুতিন বলেননি যে তার কোন মেয়ে টিকা নিয়েছেন, যদিও তিনি বলেছেন টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তার কিছু সময়ের জন্য জ্বর হয়েছিল। ভারতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে যাতে মি. পুতিনের মেয়েকে টিকা নিতে দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হলো, এই মেয়েটি মি. পুতিনের কন্যা নন। রাশিয়ার মিডিয়াতেই এটা শনাক্ত হয়েছে যে তিনি টিকা পরীক্ষায় একজন স্বেচ্ছাসেবী, এবং মিলিটারি মেডিক্যাল একাডেমির একজন ক্যাডেট। এবিএন/মমিন/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ