গ্রিসে ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৮, ১৪:৫৮
ঢাকা, ২৪ জুলাই, এবিনিউজ : গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের পাশে আত্তিকার বনাঞ্চলে থেকে লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও শতাধিক মানুষ। দেশটির শত শত অগ্নিনির্বাপণ কর্মী আগুন নেভাতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার অ্যাথেন্স থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পশ্চিমে উপকূলীয় বসতি কিনেতার পাশের বনে প্রথম এ আগুনের সূত্রপাত হয়। মঙ্গলবারের মধ্যে তা পুরো রাজধানীর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
আত্তিকা অঞ্চলের সহকারী মেয়র গিরগোস কোককোলিস ও রেড ক্রসের উদ্ধারকর্মীদের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে রাফিনা শহরের কাছে ২৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে সেখানে নিহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। এর আগে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ২৪ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছিল।
মঙ্গলবার সকালে সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রিস টিজানাকোপোওলস জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ভুক্তভোগীই এথেন্সের ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকের ‘মাটি’ অবকাশযাপন কেন্দ্রে আটকে পড়েছিল। নিহতের বেশিরভাগই নিজেদের বাড়ি বা গাড়ির মধ্যে ছিল। এখন আগুন নেভানোর পাশাপাশি নিহত ও অন্যান্য নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনুসন্ধানও চলছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি সমন্বয়ে সহায়তা করতে বসনিয়া সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি সিপারাস।
তিনি বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, তার সবই করব আমরা।’
তিনি আরও বলেন, সব জরুরি বাহিনীকে কাজে লাগানো হয়েছে। আর এথেন্সের চারপাশের আত্তিকা অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গ্রিস সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের কাছে হেলিকপ্টার ও অন্যান্য অগ্নিনির্বাপন সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবানলের কারণে ধসে পড়া ভবন, কমলা ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া আকাশ এবং গাড়িতে করে পালিয়ে যাওয়া মানুষের নাটকীয় সব ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে হেলিকপ্টার ও অতিরিক্ত দমকলকর্মী চেয়েছে গ্রিসের সরকার। অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইতালি, জার্মানি, পোল্যান্ড ও ফ্রান্স এরই মধ্যে অতিরিক্ত বিমান, যানবাহন ও দমকলকর্মী পাঠিয়েছে।
তাপমাত্রার পারদ চড়তে থাকায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দমকলকর্মীদের দাবানল নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এথেন্সের কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একইদিন হলিডে ক্যাম্পগুলো থেকে কয়েকশ শিশুকেও সরিয়ে নেওয়া হয়।
২০০৭ সালে ভয়াবহ দাবানলে দক্ষিণাঞ্চলীয় পেলোপোনেস উপদ্বীপের কয়েক ডজন মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।
এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ