আজকের শিরোনাম :

ফ্রান্সে হাইস্পিড ট্রেন এখন চলমান হাসপাতাল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৫১

ফ্রান্সের হাইস্পিড ট্রেন (টিজিভি) এখন ‘চলমান হাসপাতাল’! কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের বহন থেকে শুরু করে চিকিৎসা সবই হচ্ছে হাইস্পিড ট্রেনে। টিজিভির প্রতিটি কোচেই বসানো হয়েছে ভেন্টিলেটর মেশিন। রয়েছেন একদল চিকিৎসক ও নার্স। দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত হাইস্পিড ট্রেন ছুটিয়ে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করে চলেছেন তারা। তাতে সুফলও মিলছে। গত কদিনে হাইস্পিড ট্রেনে চিকিৎসা পেয়ে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন করোনা আক্রান্ত। শুধু কি হাইস্পিড ট্রেন? হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধ জাহাজকেও করোনা-যুদ্ধের ময়দানে নামিয়ে দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। যুদ্ধে শামিল সেনারাও।

করোনার ‘হটস্পট’গুলো এখন যেন পুরোদস্তুর রণাঙ্গন! হেলিকপ্টারের ওঠানামা। হাসপাতালের উপর যুদ্ধবিমানের চক্কর কাটা। রেল স্টেশনগুলোতে স্ট্রেচার টানার ঘড়ঘড় শব্ধ। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রকট অব্যবস্থাও। হাসপাতালের বাইরে কাতরাচ্ছেন রোগীরা। ভর্তির বেড নেই। ভেন্টিলেটর মেশিন নেই। চিকিৎসক, নার্সদের করোনা-রোধী বর্ম নেই। চারিদিকে শুধু নেই আর নেই। ফলে অন্তরালে থাকা শত্রুকে কোনও কৌশলেই বাগে আনতে পারছেন না ফ্রন্টলাইনে থাকা যোদ্ধারা। চোখের সামনে অসহায়ের মতো তাঁদের দেখতে হচ্ছে শবের সারি। শেষ পাওয়া খবরে, ফ্রান্সে আট হাজার টপকে গিয়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। ইউরোপের সর্ববৃহৎ ফুড মার্কেট দক্ষিণ প্যারিসের রুঙ্গুস এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মর্গ।

করোনার এমন ভয়াবহ ঘাতক রূপ কি সত্যিই টের পায়নি ফ্রান্স? নাকি পেয়েও দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে বুঁদ ছিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ? তাঁর সমালোচকরা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, ‘প্রথম দিকে করোনাকে পাত্তাই দেননি প্রেসিডেন্ট। দিব্যি তুরীয় মেজাজে ছিলেন তিনি। অগ্রাহ্য করে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের মতামতকেও। উল্টে, ইতালি সফরে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলিঙ্গন করে দেশবাসীকে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ফ্রান্সের জীবন থমকে থাকতে পারে না। কিন্তু যখন তিনি বুঝলেন তখন পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে।’

শেষে ১৬ মার্চ ভোল পাল্টে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেন প্রেসিডেন্ট। এবং তারপর থেকেই করোনার সঙ্গে লড়াইকে আক্ষরিক অর্থে ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ বলে ঘোষণা করে ঘরবন্দি হয়ে যান ম্যাক্রঁ। সেই সঙ্গে দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বারবার বলতে থাকেন, ‘আমরা এখন যুদ্ধ করছি। নিজেদের যোদ্ধা হিসেবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হতে হবে। প্রয়োজনে অদৃশ্য শত্রুকে বধ করতে নামানো হবে সশস্ত্র বাহিনীকেও।’ 
২৬ মার্চ ‘হাইস্পিড ট্রেন, সাধারণ ট্রেন, যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, রণতরীকেও করোনা চিকিৎসায় কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয় ফ্রান্স সরকার।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ