আজকের শিরোনাম :

ভারতে প্রতারণার দায়ে ধৃতরা নভোচারীর বেশে কেন?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ মে ২০১৮, ১৯:৪৯

ঢাকা, ১০ মে, এবিনিউজ : ভারতের রাজধানী দিল্লি পুলিশ দুই নভোচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। রীতিমতো স্পেস স্যুট পরিয়ে তাদের হাজির করানো হয়েছিল সংবাদ মাধ্যমের সামনে।

মুখের সামনে কাঁচ দিয়ে ঢাকা মাথা জোড়া হেলমেট, গায়ে রুপোলী জ্যাকেট আর ট্রাউজার। মনে হচ্ছিল যেন সত্যিই মহাকাশ-ভ্রমণ সেরে ফিরলেন এই দুজন। ঘটনাচক্রে, এই দুইজনের এখন ঠাঁই হয়েছে পুলিশ লক আপে।

দিল্লি পুলিশ বলছে, বাপ-বেটা-র এই যুগল মোটেই মহাকাশচারী নন। এরা দুজনে মিলে এক ব্যবসায়ীকে প্রায় এক কোটি রুপি ঠকিয়েছেন। ওই ব্যবসায়ীর কাছে নিজেদের তারা নাসার বৈজ্ঞানিক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।

ওই ব্যবসায়ীকে একটা মূল্যবান ধাতু বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলেন এই দুজন। ওই ধাতু সহ একটি যন্ত্র নাকি নাসা ব্যবহার করে - এমনটাই বোঝানো হয়েছিল ওই ব্যবসায়ীকে।

আর ওই যে মহাকাশচারীর পোশাক, সেটা তারা দিল্লির চাঁদনি চক থেকে কিনেছিলেন মাত্র ১২০০ রুপি দিয়ে।

ধৃতরা মহাকাশচারীর পোশাক দিল্লির চাঁদনি চক থেকে কিনেছিলেন মাত্র ১২০০ রুপি দিয়ে। গ্রেপ্তার হওয়া বাবার নাম বীরেন্দ্র মোহন আর ছেলের নাম নিতিন। বছর কুড়ি ধরে একটা গাড়ি সারাইয়ের কারখানা চালাতেন পিতা-পুত্র।

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের ডেপুটি কমিশনার ভীষ্ম সিং বলছেন, বাবা আর ছেলে মিলে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে বলেছিল যে তারা 'নাসা'র বিজ্ঞানী। 'নাসা' ব্যবহার করে এরকম একটা দুষ্প্রাপ্য ধাতু তাদের কাছে রয়েছে। তার নাম রাইস পুলার। ওই যন্ত্রটি নাকি চালের মতো ক্ষুদ্র বস্তুকেও চুম্বকের মতো টেনে নেবে।

মি. সিংয়ের কথায়, ওই রাইস পুলার ধাতু সহ যন্ত্রটি বিক্রি করার জন্য কাপড়ের ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিন হাজার সাতশো কোটি টাকার রফা হয়। তবে যন্ত্রটি বিক্রি করার আগে বৈজ্ঞানিক, নানা রাসায়নিক পদার্থ, পরীক্ষাগারের খরচ ও পোশাক - প্রভৃতির নাম করে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল তারা।

বড় অঙ্কের অর্থ গুনাগার দিয়ে ওই কাপড়ের ব্যবসায়ী নিজের পরিচয় দিতে চাইছেন না এখন। পরিচয় গোপন করার শর্তে তিনি বিবিসিকে বলেছেন, তাকে ঠকানোর জন্য একটা নকল ওয়েবসাইটও বানিয়েছিল পিতা-পুত্র। সেই ওয়েবসাইট দেখেই তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে ওরা দুজন সত্যিই নাসার বৈজ্ঞানিক।

মাস পাঁচেক পরেও ওই মহামূল্যবান ধাতুটি হাতে না পাওয়ায় তিনি অর্থ ফেরত চাইতে শুরু করেন। বুঝতে পারেন যে ভয়ানক ঠকে গেছেন তিনি। টাকা ফেরত না পাওয়ায় এবছরের এপ্রিল মাসে ওই ব্যবসায়ী পুলিশের দ্বারস্থ হন।

তারপরেই গ্রেপ্তার হয় ওই দুই ব্যক্তি। দিল্লি পুলিশের অবাক হওয়ার পালা এখানেই শেষ নয়। ধৃতদের জেরা করে তারা জানতে পেরেছে যে পিতা-পুত্রের ওই টিম নিজেরাই ভয়ানক ঠকে গিয়েছিল একবার।

এদের কাছে এক ব্যক্তি একটা সাধারণ আয়নাকে 'জাদু আয়না' বলে কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করেছিল। নিজেরা ঠকে যাওয়ার পর থেকেই এরা দুজন অন্যকে ঠকানোর ব্যবসায় নামে বলে তারা বলেছে। পুলিশ জানতে পেরেছে দেরাদুনের এক ব্যক্তিকে এই পিতা-পুত্র সাড়ে ১৭ লক্ষ টাকায় একটা সাপ বিক্রি করেছিল।  সূত্র: বিবিসি বাংলা। 

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ