আজকের শিরোনাম :

ভাইরাসের আস্তানায় পরিণত জাহাজ থেকে নামছেন যাত্রীরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:২৩

জাপানের ইয়োকোহামায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়া প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে যাত্রীরা নামতে শুরু করেছে।

কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৫৪২ যাত্রী ও ক্রু ভাইরাস সংক্রমিত হয়, যা চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে একক কোনো জায়গায় ভাইরাস সংক্রমিতদের সবচেয়ে বড় জমায়েত।

জাহাজের যাত্রীরা বেশ কয়েকদিন ধরে প্রমোদতরীর ভেতরে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থার কঠিন পরিস্থিতি বর্ণনা করছেন। জাহাজের ভেতরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে।

ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজ থেকে নামা যাত্রীরা জাহাজ থেকে নেমেই ইয়োকোহামা বন্দরে থাকা ট্যাক্সিতে করে নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন। যারা ভাইরাসে আক্রান্ত নয় এবং যাদের মধ্যে কোনো উপসর্গও প্রকাশিত হচ্ছে না, এ রকম ৫০০ মানুষের বুধবার ছাড়া পাওয়ার কথা। আগামী কয়েকদিনে আরও বহু মানুষের ছাড়া পাওয়ার কথা।

জাহাজে মোট ৩ হাজার ৭০০ যাত্রী ছিল। যাদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের চিহ্ন পাওয়া যায়নি কিন্তু তারা সংক্রমণের শিকার মানুষের সাথে কেবিনে ছিলেন- এমন ব্যক্তিদের অতিরিক্ত কোয়ারেন্টিন করা হবে, কাজেই তারা জাহাজ ছেড়ে বের হতে পারবেন না।

ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ৫০টিরও বেশি দেশের নাগরিকরা ছিল। প্রমোদতরীটিকে ফেব্রুয়ারির শুরুতে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টিন করা হয়। এর আগে ভাইরাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়ায় ওই জাহাজ থেকে এক ব্যক্তিকে হংকং বন্দরে নামিয়ে দেয়া হয়। যাত্রীদের শুরুতে তাদের নিজ নিজ কেবিনে আলাদা করে রাখা হয়, পরে বিচ্ছিন্নভাবে তাদের ডেকে চলাফেরার অনুমতি দেয়া হয়। কোয়ারেন্টিনে থাকা স্বত্ত্বেও জাহাজটিতে ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিনদিন বাড়তেই থাকে।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাহাজে ৫৪২ যাত্রী ভাইরাসে আক্রান্ত যাদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেক দেশ এরই মধ্যে তাদের নাগরিকদের আলাদাভাবে সরিয়ে নিয়েছে অথবা কিছু দিনের মধ্যেই সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে।

জাপানের কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাদের নিজেদের নেয়া ব্যবস্থার পক্ষেই সাফাই গেয়েছে। তারা বলেছে, অধিকাংশ সংক্রমণের ঘটনা কোয়ারেন্টিন শুরু হওয়ার আগেই ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিক ঐ জাহাজ থেকে ফিরবে, তাদের আরো ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার ঘোষণা দিয়েছে সেসব দেশের কর্তৃপক্ষ।

দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে, তারা তাদের দেশের নাগরিক ছাড়া ডায়মন্ড প্রিন্সেসের অন্য কোনো যাত্রীকে নিজেদের দেশে প্রবেশ করতে দেবে না।

বুধবার প্রকাশিত হওয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চীনে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৪ জন মারা গেছে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণে। চীনের মূল ভূখণ্ডে এখন পর্যন্ত ৭৪ হাজার ১৮৫ জনের মধ্যে এই ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং আরো বেশ কয়েকটি দেশে আরও ৭০০ জনের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে এই ভাইরাস।

বুধবার হংকং জানিয়েছে, সেখানে ভাইরাস সংক্রমণে দ্বিতীয় ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, জাপান, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডে একজন করে ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার চীন ৪৪ হাজার ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য নিয়ে বিস্তারিত এক গবেষণা প্রকাশ করেছে, যেখানে উঠে এসেছে যে ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার আগে থেকে অসুস্থ এবং বয়স্কদের মধ্যে বেশি।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ