আজকের শিরোনাম :

গণতন্ত্র রক্ষার সূচকে ১০ ধাপ অবনমন ভারতের

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১২:০৭

জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর জারি হওয়া বিধিনিষেধ এবং আসামে এনআরসি চালু- দুটি ক্ষেত্রেই ধাক্কা খেয়েছে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিবেশ। বিরোধীদের এই অভিযোগকে কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্ব না দিলেও দেশের ভাবমূর্তিতে তার প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্থা দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। 

তাদের সমীক্ষায় বিশ্ব গণতান্ত্রিক সূচকে ১০ ধাপ নেমে গেল ভারত। এই মুহূর্তে ভারতের অবস্থান ৫১ নম্বরে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে মোদি সরকারের কাছে, যা বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতি বছরই বিশ্বের ১৬৫টি স্বাধীন দেশ ও দুটি অঞ্চলের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে সমীক্ষা চালায় দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। মূলত প্রতিটি দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া, সরকারের শাসনব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল ও মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়েছে। ওই সমীক্ষায় গতবারের তুলনায় গণতন্ত্র রক্ষা করার সূচকে এবার ১০ ধাপ নীচে নেমে গিয়েছে ভারত। ০-১০ স্কোরের মধ্যে ২০১৮ সালে ভারত পেয়েছিল ৭.২৩। কিন্তু ২০১৯ সালে ভারতের স্কোর নেমে গিয়েছে ৬.৯০-তে। এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া, তাইওয়ানের থেকেও পিছিয়ে রয়েছে ভারত। ২০১৯ সালে এশিয়া মহাদেশের দেশগুলির গণতন্ত্র ‘টালমাটাল’ ছিল বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গণতন্ত্রের মানদণ্ডে ভারতের সূচক ১০ ধাপ নীচে নেমে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে ৩৭০ ধারা অবলুপ্ত করা এবং এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি সংবিধানের ৩৫এ ধারা তুলে নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে অন্য রাজ্যের মানুষের জমি কেনার অধিকার দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের উপর নানাভাবে বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে। বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন এবং দীর্ঘদিন মোবাইল সংযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেখানকার রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা রয়েছে। এসব কারণে সেখানকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলে সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়েছে। 

আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখেরও বেশি মানুষের নাম। ভারতের সূচক নিচে নামার জন্য এনআরসিকেও দায়ী করা হয়েছে। এনআরসি আতঙ্কের মধ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু করার প্রতিবাদে গোটা দেশে বিক্ষোভ চলছে। যে কারণে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিবেশ।

সমীক্ষাতে আরও বলা হয়েছে, ভারতে যে হারে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে, আগামী দিনে সেই হারে বাড়তে থাকলে ২০৬০ সালের মধ্যে বিশ্বে সব থেকে বেশি মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ বসবাস করবে ভারতে। 

বিশ্বে গণতন্ত্র রক্ষার সূচকে সবার প্রথমে রয়েছে নরওয়ে (৯.৮৭) এবং সবার শেষে উত্তর কোরিয়া (১.০৮)। চীন ১৫৩, পাকিস্তান ১০৪, শ্রীলঙ্কা ৬৯ এবং বাংলাদেশ রয়েছে ৮০ নম্বরে।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ