আজকের শিরোনাম :

সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি সিন্দুকে মিলল বিদ্যাসাগরের সময়ের কাগজপত্র, মেডেল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৩

দীর্ঘদিন গুদামঘরেই ধুলোয় ঢাকা পড়েছিল দু’টি সিন্দুক। সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের কী সম্পত্তি রয়েছে, তা খোঁজ করতে গিয়েই নজরে আসে সেগুলি। তাতে কী থাকতে পারে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের মধ্যে চরম কৌতূহল তৈরি হয়। শুক্রবার সেগুলি খোলার জন্য ডাকা হয় এক চাবি মিস্ত্রিকে। চার ঘণ্টা পর একটি সিন্দুক থেকে যা মিলল, তা হীরে বা মোহরের থেকেও কম মূল্যবান নয়। উদ্ধার হল বিদ্যাসগারের বিধবা ভাতা সংক্রান্ত নথি থেকে মেডেল, প্রাক স্বাধীনতা সময়কালের সম্পত্তির কাগজপত্র এবং সিল করা সাত-সাতটি খাম।

আর এ নিয়ে সকাল থেকেই উত্তেজনায় ফুটছিল গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, সিন্দুকগুলির বয়স অন্তত ২০০ বছর হবে। একটি সিন্দুকের চাবি থাকলেও, অপরটির খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর সেটি খুলতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যায় মিস্ত্রির। তা করতে গিয়ে ভাঙল চারটি চাবিও। প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টার পরও না খুলতে পেরে সেই সিন্দুকের পাল্লা ভেঙে ফেলতে হয়। কিন্তু সেই সময়টা যেন কর্তৃপক্ষের কাছে ৪০ ঘণ্টার সমান ছিল। তবে ভিতরে এমন কিছু থাকবে যা ইতিহাসের দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে, সেটা আঁচ করেছিলেন কর্তারা। শেষ পর্যন্ত সিন্দুকের পাল্লা খুলে ফেলতে সক্ষম হন সেই মিস্ত্রি।

সিন্দুক খুলতেই উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় তার মধ্যে থেকে গালা দিয়ে সিল করা সাতটি খাম বের করে আনেন। তাতে প্রতিষ্ঠানকে সম্পত্তি দান করে দেওয়া হয়েছে, এমন সব নথি রয়েছে। তার চেয়েও মূল্যবান নথি ছিল বিদ্যাসাগরের চালু করা বিধবাদের ভাতা সংক্রান্ত কাগজপত্র। উপাচার্য বলেন, মহিলাদের নাম এবং তাঁদের কত টাকা করে দেওয়া হয়েছে, তা তাতে উল্লেখ করা হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত মাস পিছু দু’টাকা করে দেওয়া হয়েছে আটজনকে। মুর্শিদাবাদ এবং বর্ধমানের দু’টি গ্রামের নামও উল্লেখ রয়েছে। তিনটি মেডেলও ছিল তাতে। দেখে মনে হচ্ছে একেবারে নতুন। দু’টি সংস্কৃত এবং একটি ইংরেজির জন্য। একটি ১৯১৯ এবং অপরটি ১৯৩১ সালের মেডেল। প্রাপকরা তা নিয়ে না যাওয়ায় এই সিন্দুকেই রেখে দেওয়া হয়। অপর সিন্দুক থেকে মিলল ৮৫টি পোস্ট অফিসের পাসবই, ক্যাশবাক্স, খুচরো পয়সা রাখার পাত্র ইত্যাদি।

উপাচার্যের কথায়, এসব মূল্যবান জিনিসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। সবই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি। তা সংরক্ষণ করা হবে। বিদ্যাসাগরের উপর যে মিউজিয়াম করা হবে, এগুলি সেখানে রাখা হলে, সাধারণ মানুষ দেখতে পারবেন।


এবিএন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ