আজকের শিরোনাম :

ফ্রান্সে সৌদি যুবরাজের বোনের বিচার শুরু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০১৯, ১১:১৩

শ্রমিককে হত্যার নির্দেশ দেয়ার অভিযোগে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বোন হাসা বিনতে সালমানকে ফ্রান্সের একটি আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিচার শুরু হয় বলে খবরে বলা হয়েছে।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বোন হাসা বিনতে সালমানের (৪৩) বিরুদ্ধে অস্ত্র দিয়ে সহিংসতা এবং অপহরণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, দেহরক্ষীর মাধ্যমে এক কর্মীকে নির্যাতন চালান তিনি।

মিশরীয় বংশোদ্ভূত এক কর্মী ২০১৬ সালে রাজকন্যা ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার ফ্রান্সের আদালত তাদের বিচার শুরুর নির্দেশ দিলেও সেখানে হাজির ছিলেন না রাজকন্যা। ফরাসি বার্তা সংস্থ এএফপি জানিয়েছে, দেহরক্ষী রনি সাইদি আদালতে হাজির ছিলেন।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মিশরীয় বংশোদ্ভূত কর্মী আশরাফ আইদ পুলিশের কাছে রাজকন্যা  ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি জানান, প্যারিসের ফোচ এভিনিউয়ে অবস্থিত সৌদি বাদশাহ’র মালিকানাধীন একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে কাজ করছিলেন। ওই সময়ে নিজের মোবাইল ফোনে সেখানকার বাথরুমের ছবি তুলেছিলেন তিনি। তার দাবি, কাজের সুবিধার জন্য ছবি ধারণ করেছিলেন তিনি। ফরাসি তদন্তে বলা হয়েছে, তবে আয়নার মধ্য দিয়ে তার ছবি তুলে ওই কর্মী বিক্রি তা করতে চান বলে সন্দেহ করে বসেন রাজকন্যা। ডাক দেন নিজের দেহরক্ষীকে।

এক ফরাসি স্বাক্ষী জানান, রাজকন্যা ওই কর্মীকে বলেন, ‘এই কুকুরকে অবশ্যই মেরে ফেলতে হবে। তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই। তুই দেখ কীভাবে রাজকন্যার সঙ্গে কথা বলতে হয়, কীভাবে রাজপরিবারের সঙ্গে কথা বলতে হয়’। আশরাফ আইদ নামের ওই কর্মী পুলিশকে জানান, ‘দেহরক্ষী তাকে মারপিট করে, হাত বেঁধে ফেলে আর রাজকন্যার পায়ে চুমু দিতে বাধ্য করে’। দেহরক্ষী আদালতকে জানান, রাজকন্যা যখন সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল, ‘তখন সেখানে যাই আর দেখতে পাই তার ফোন হাত দিয়ে কাড়াকাড়ি করছেন। আমি তাকে (কর্মীকে) জোর করে ধরে ফেলি। পরে তার সঙ্গে কী করা হয়েছে তা জানি না’। নির্যাতন চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর আশরাফ আইদ-এর ফোন কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ওই ফোনটি নষ্ট করে ফেলা হয়। রাজকন্যা ও তার দেহরক্ষীর আইনজীবীদের দাবি কয়েক দিনের মাথায় ওই কর্মীকে ২১ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা হয়।

ওই ঘটনায় দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সহিংসতা, চুরি এবং কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধরে রাখার অভিযোগের তদন্ত চালানো হয়। রাজকন্যা হাসা বিনতে সালমানকেও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই ফ্রান্স ছেড়ে চলে যান তিনি।

পরে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে এক বিচারক। ধারণা করা হয় ওই গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে তখন থেকে সৌদি আরবে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। সাহায্যকারীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, সৌদি আরবে গৃহবন্দি হয়ে আছেন রাজকন্যা হাসা বিনতে সালমান।

রাজকন্যার আইনজীবী এমানুয়েল মোয়েন জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে নিজের বাড়ি থেকে স্কাইপের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন হাসা বিনতে সালমান।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ