ইন্দোনেশিয়ায় ‘যৌন হয়রানিমূলক’ ফোনালাপ ফাঁস করায় কারাদণ্ড
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০১৯, ১০:৫৭
যৌন হয়রানির প্রমাণ হিসেবে নিজের ‘বস’-এর সঙ্গে হওয়া ফোনালাপ রেকর্ড করা এবং তা ছড়িয়ে দেয়ার দায়ে ইন্দোনেশিয়ার এক নারীর ৬ মাসের কারাদণ্ডের শাস্তির বিরুদ্ধে করা আবেদন বাতিল করেছে ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ আদালত।
বাইক নুরিল মাকনুন নামের ওই নারীর বিরুদ্ধে ‘অশালীন’ জিনিসপত্র ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে ইন্দোনেশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট।
ফোনালাপটি ছড়িয়ে পড়ার পর ২০১৫ সালে ওই নারীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন তার বস।
আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
লম্বক দ্বীপের মাতারাম শহরের একটি স্কুলে কাজ করতেন নুরিল, যেখানকার প্রধান শিক্ষক তাকে ফোন করে যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলতেন বলে অভিযোগ করেন নুরিল।
নুরিল একদিনের ফোনালাপ রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেন, যেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আপত্তিকর এবং অশালীন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
পরবর্তী সময় স্কুলের অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যেও রেকর্ডিংটি ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং পরে তা স্থানীয় শিক্ষা বিভাগের কাছেও পৌঁছে যায়।
সামাজিক মাধ্যমেও কিছুদিনের মধ্যেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক- আদালতের নথি অনুযায়ী ওই রেকর্ডিং ছড়িয়ে পড়ার পরপরই যার চাকরি চলে যায়- তার আর নুরিলের ফোনালাপ ছড়িয়ে দেয়ার কারণে পুলিশের কাছে নুরিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন ও ট্রানসেকশন আইনে নুরিলকে ‘শালীনতা লঙ্ঘন’ করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট।
নিজের পক্ষে নতুন কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় এ রায়ের বিরুদ্ধে করা নুরিলের আবেদনও গত বৃহস্পতিবার নাকচ করে দেয় আদালত।
আদালতের মুখপাত্র আব্দুল্লাহ বলেন, ‘তার (নুরিলের) জুডিসিয়াল রিভিউ বাতিল করা হয়েছে কারণ তার অপরাধ আইনত এবং নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’
এছাড়া ৫০ কোটি রুপিয়া (৩৫ হাজার ২০০ ডলার) অঙ্কের জরিমানার শাস্তিও অক্ষুন্ন রেখেছে আদালত।
নুরিল বলেছেন, তিনি রেকর্ডিংটি ছড়াননি। তার এক বন্ধু ফোন থেকে ওই রেকর্ডিংটি নিয়েছিলেন বলে দাবি করেন নুরিল।
নুরিলের আইনজীবী, জোকো জুমাদি, বিবিসিকে বলেন, তার মক্কেল আদালতের ‘রায় মেনে নিতে প্রস্তুত, কিন্তু তিনি আশা করেন যে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ করার কারণে ‘আইনগতভাবে শাস্তি পাওয়ার ঘটনা’ এর পর ইন্দোনেশিয়ায় আর কারো সঙ্গে যেন না ঘটে।
এ ঘটনা ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাপক জনরোষ তৈরি করেছে।
খবর বিবিসি এবিএন/সাদিক/জসিম
খবর বিবিসি এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ