আজকের শিরোনাম :

‘৮ জনের কাছে বিক্রি করা হয়, ধর্ষণ করত ৩ জন’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মে ২০১৯, ১২:২৯

‘তারা আমার শরীরে বিস্ফোরক লাগানো একটি আত্মঘাতী পোশাক পরায়। তার পর বলে ট্রিগার চেপে দিতে।’

৪ বছর ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের হাতে বন্দি থাকা মারিয়াম এভাবেই বলছিলেন তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

২০১৪ সালে ইরাকের ইয়াজিদি গ্রামগুলোর দখল নেয় আইএস জঙ্গিরা। সে সময় ৬ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে বন্দি করে তারা- যাদের মধ্যে ছিল মারিয়াম ও তার মা।

এারিয়াম বলেন, আইএস যখন আমাকে বন্দি করে তখন আমার বয়স ১২। আমাকে ৮ জনের কাছে বিক্রি করা হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে ৩ জন আমাকে ধর্ষণ করত, বাকিরা আমাকে দাসী হিসেবে ব্যবহার করত।’


আইএস জঙ্গিদের হাতে বন্দি থাকা অবস্থাতে কথা বলায় সমস্যা তৈরি হয় মারিয়ামের। তাকে তার মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে দেয়া হয়।

এারিয়াম বলেন, ‘ধরা পড়ার আগে আমার কথা বলতে কোনো সমস্যা হতো না। বন্দি থাকা অবস্থাতে এ সমস্যা শুরু হয়। আমি বহুবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরে মায়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি।

তিনি বলেন, ‘বন্দি থাকা অবস্থায় মায়ের সঙ্গে একবার আমার দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। তখন মাকে প্রতিশ্রুতি দেই যে আত্মহত্যার চেষ্টা করব না।’

মারিয়াম পালিয়ে আসতে পারলেও তার মায়ের এখনো কোনো খোঁজ নেই।

মারিয়াম ও তার মায়ের সঙ্গে হওয়া ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় মারিয়ামের বাবাকে।

মারিয়ামের বাবা বলেন, ‘এমন যদি হতো যে আমার মৃত্যু হলে মারিয়ামের মা ফিরে আসত, তা হলে সে মৃত্যুই ভালো হতো আমার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘মারিয়ামকে আমি বলি যেন ওই সময়ের (বন্দি থাকাকালীন সময়ের) স্মৃতি ভুলে যায়। সেসব স্মৃতি যত মনে করবে, ততই মানসিক কষ্ট বাড়বে।’

তবে বাবার সেসব কথা মারিয়ামের অতীতের দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে সাহায্য করে না।

ইরাকে মারিয়ামের মতো অনেক মানুষই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় জীবনযাপন করেন। গত ৪০ বছরে ইরাকে তিনটি বড় পরিসরের যুদ্ধ, একটি সামরিক অভ্যুত্থান ছাড়াও তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের দুটি অভ্যুত্থান এবং জঙ্গিবাদী মিলিশিয়াদের সঙ্গে সরকার সমর্থিত বাহিনীর গৃহযুদ্ধ হয়েছে।

এ ছাড়া ইরাকে প্রায় এক দশক ধরে চলেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিমান হামলা। প্রায় চার দশক ধরে এরকম একের পর এক সহিংস ঘটনার প্রভাব পড়েছে দেশটির মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর।

ইরাকে প্রতি ৩ লাখ মানুষের জন্য মনোরোগবিদ বা মানসিক সমস্যার চিকিৎসক রয়েছে একজন।
খবর বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ