আজকের শিরোনাম :

শ্রীলঙ্কায় হামলায় নিহত বেড়ে ৩৫৯

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২০ | আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১২:০৬

শ্রীলঙ্কায় গত রবিবার ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় কয়েকটি গির্জা ও হোটেলে একযোগে চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ শতাধিক মানুষ।

আজ বুধবার শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকেরা নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা প্রকাশ করলেও বিস্তারিত আর কিছু জানাননি।

শ্রীলঙ্কার গির্জা ও হোটেলে এই সিরিজ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক ৭ জঙ্গির নাম প্রকাশ করে তারাই আত্মঘাতী হামলাগুলো চালিয়েছে বলে জানিয়েছে।

গোষ্ঠীটি নিজেদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি। তাদের দাবি যদি সত্য হয়ে থাকে তবে ইরাক ও সিরিয়ার বাইরে তাদের চালানো অন্যতম সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হবে এটি। 

এক সংবাদ সম্মেলনে অপরাধীদের শনাক্ত করার পথে তদন্তের অগ্রগতি হওয়ার কথা জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘আমরা আইএসের দাবি খতিয়ে দেখব, আমাদের বিশ্বাস সম্ভবত কিছু সম্পর্ক আছে।’

অন্তত ৭ আত্মঘাতী হামলাগুলো চালিয়েছে বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।

শ্রীলঙ্কান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার মোট ৩২১ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া ভয়াবহ এই হামলার দুদিন পর গতকাল দেশটিতে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। 

শীলঙ্কায় নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন বিদেশি আছেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের একজন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের নাতি। ভয়াবহ সেই বোমা হামলার সময় শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছিলেন শেখ সেলিমের মেয়ে ও জামাতা।

গত দুই দিনে সব মিলিয়ে ৪০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করেছে শ্রীলঙ্কার পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একজন সিরীয় নাগরিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সেনা সূত্রের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।

গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ হামলার পর ভারত লাগোয়া দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় সোমবার রাত থেকে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা আগেই বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনাগুলোর সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাজের ধরনের মিল পাচ্ছেন তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহকে ফোন করে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।  

তদন্তে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই এবং যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে কলম্বো পৌঁছেছেন বলে খবর দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

শ্রীলঙ্কার একজন মন্ত্রী বলেছেন, উগ্রপন্থি ইসলামী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত গির্জা ও কলম্বোর ভারতীয় হাই কমিশনে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে সপ্তাহ দুই আগেই সতর্ক করেছিল একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা।

কিন্তু সেই সতর্কবার্তা প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের মন্ত্রীদের কাছে পৌঁছেনি, কারণ দেশটির বিভিন্ন বাহিনীর সিকিউরিটি ব্রিফিং প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার হাতে যায়, প্রধানমন্ত্রীকে তা দেখানো হয় না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে বলেছে, শ্রীলঙ্কায় আরও সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি রয়েছে।

একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে শ্রীলঙ্কায় বিপুল বিনিয়োগ করা দেশ চীন। এক ভ্রমণ সতর্কতায় চীন সরকার তার নাগরিকদের বলেছে, আপাতত শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে যাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে।      

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ