আজকের শিরোনাম :

শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে এনটিজে জড়িত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী; নিন্দা জানিয়েছে মুসলিম পরিষদও

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:০৮

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজিথা সেনারত্নে জানিয়েছেন, রাজধানী ও এর আশেপাশে অবস্থিত গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলা পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের সঙ্গে স্থানীয় উগ্রপন্থী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত (এনটিজে) জড়িত। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিশাল নেটওয়ার্কের সহায়তায় ওইসব বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

গত রবিবার শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ ও আত্মঘাতী হামলায় প্রায় ৩২১ জন নিহত এবং ৫০০ এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। খ্রিস্টানদের 'স্টার সানডে' উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য শত শত মানুষ যখন গির্জায় সমবেত হয়েছিল ঠিক তখন বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ২০০৪ সালে ভারতের তামিল তাড়ুতে উগ্রপন্থী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত (এনটিজে) গঠিত হয়। যদিও শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার ঘটনার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায়িত্ব স্বীকার করেনি কিন্তু দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ ঘটনার জন্য সরাসরি ন্যাশনাল তাওহিদ জামাতকে দায়ী করেছেন।

সন্ত্রাসী হামলার কয়েক ঘণ্টা পর শ্রীলঙ্কার পুলিশ আবু মোহাম্মদ ও যাহরান হাশেম নামে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে আটক করে। বলা হচ্ছে, আবু মোহাম্মদ এক মাস আগে ফেসবুকে উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। এরফলে এ আশঙ্কা জোরদার হয়েছে যে রাজধানী কলম্বো ও এর আশেপাশে সন্ত্রাসী হামলার পেছনে দায়েশের হাত থাকতে পারে। রাশা টুডের রাজনৈতিক বিশ্লেষক যাবির কাইওয়ারি বলেছেন, রবিবারের সন্ত্রাসী হামলার ধরনের সঙ্গে বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের হামলার ধরনের মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য নেই।

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী যদিও দায়েশের সঙ্গে স্থানীয় উগ্র সংগঠন ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত এর যোগসাজসের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি কিন্তু আটক সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি কর্তৃক ফেসবুক পেজে দায়েশের প্রতি সমর্থন দেয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে দায়েশ সংগঠনের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সে ব্যাপারে তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা থেকে বোঝা যায়, উগ্র গোষ্ঠীগুলো শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীদের হুমকি মোকাবেলায় এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। তবে এটাও ঠিক যে জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক বিরোধ শ্রীলঙ্কাসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোতে উগ্রপন্থীদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিয়েছে।

এদিকে, শ্রীলঙ্কার মুসলিম পরিষদ এক বিবৃতিতে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিবৃতিতে তারা শ্রীলঙ্কায় জাতিগত বিদ্বেষ ও বিভেদ সৃষ্টির জন্য কিছু উগ্র গোষ্ঠীর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে সেদেশে স্বাভাবিক জীবনযাপন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সন্ত্রাসী হামলার পরপরই এর নিন্দা জানিয়ে মুসলিম পরিষদের বিবৃতি প্রকাশ ছিল সময়োচিত পদক্ষেপ যেখানে তারা এ ঘটনার জন্য দায়েশের মতো উগ্র গোষ্ঠীগুলোকে অভিযুক্ত করেছেন। কারণ ইসলাম ভীতি ছড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশের বাইরের কয়েকটি মহল এ হামলার সঙ্গে মুসলমানদের জড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও বিশ্বের মানুষ এ ধরণের হাস্যকর কথাবার্তাকে কখনোই বিশ্বাস করেনি।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ