আজকের শিরোনাম :

স্কুলের পর গোরস্তানের কাজে ইয়েমেনের শিশুরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০১৯, ১১:৪৪

নীল রঙের ডোরাকাটা শার্ট পরে খালি পায়ে আহমেদ আল-হামাদি স্কুল থেকে গোরস্তানে কাজ করতে যাচ্ছে। ১৩ বছর বয়সী শিশুটি গোরস্তানের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। সেখানে কবরগুলো পরস্পরের কাছ ঘেঁষে আছে এবং প্রায় প্রতিদিনই সেখানে থাকে শোকার্ত মানুষের ভিড়।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে হামাদির মতো অনেক শিশুই স্কুল শেষে গোরস্তানে কাজ করে। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারগুলোর শিশুরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করছে।

ছোট কাঁধে পানির গ্যালন বহন করে আহমেদ চারাগাছে পানি দেয়। কবরের নামফলক থেকে ধুলো মুছে ফেলার বিনিময়ে মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে যা অর্থ পায় তা দিয়ে পরিবারকে সে সহায়তা করে।

আহমেদ বলে, ‘আমরা সাধারণত দাফনের জন্য অপেক্ষা করি।’

শিশুটি আরও বলে, ‘যদি কেউ মারা না যায় তবে আমরা গোরস্তানে ঘুরাঘুরি ও খেলাধুলা করি।’

ইয়েমেনের লাখ লাখ শিশুর মতো আহমেদ স্কুলে টিকে থাকার জন্য লড়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ, দারিদ্র ও মহামারি আরব বিশ্বের দরিদ্রতম দেশটিতে চরম বিপর্যয় ডেকে এনেছে।

প্রেসিডেন্ট আব্দেরাব্বো মানসুর হাদির পক্ষে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেন যুদ্ধে যোগ দিলে পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করে। ইরান সমর্থিত উত্তরাঞ্চলীয় হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ও হাদির অনুগত সৈন্যদের সঙ্গে প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছে। এর ফলে যুদ্ধে তীব্রতা ও রক্তপাত বহুগুণে বেড়ে দেশটিতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আরব বিশ্বের মধ্যে ইয়েমেনে শিশু শ্রম সবচেয়ে বেশি। শিশুদের জন্য দেশটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মেয়ে শিশুদের বাধ্য হয়ে বাল্য বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং ছেলে শিশুদের যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ইয়েমেনকে ‘শিশুদের জন্য দোজখ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ২০১৮ সালে দেশটির ৮০ শতাংশ শিশুর ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন দেখা দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিগত চার বছরে ইয়েমেনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মৃতের এই সংখ্যা আরও ৫ গুণ বাড়তে পারে।
খবর এএফপি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ