খুতবায় কাঁদলেন নিউজিল্যান্ডের সেই ইমাম
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০১৯, ১১:৪২
নিউজিল্যান্ডের আল-নূর মসজিদের ইমাম গামাল ফৌদা জুমার খুতবায় কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, আমাদের হৃদয় ভেঙ্গেছে, কিন্তু আমরা ভেঙ্গে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি, আমরা একসঙ্গে আছি, কেউ যেন আমাদের বিভক্ত করতে না পারে সেজন্য আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
রেডিও-টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা জুমার নামাজের খুতবায় তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারগুলোকে বলছি, আপনাদের প্রিয়জনদের মৃত্যু বৃথা যায়নি। তাদের রক্ত আশার বীজে জল সিঞ্চন করেছে।
ইমাম ফৌদা বলেন, নিউজিল্যান্ডের প্রতিটা মানুষকে ধন্যবাদ, প্রত্যেকের চোখ দিয়ে যে অশ্রু পড়েছে তার জন্য ধন্যবাদ, ধন্যবাদ হাকার জন্য, ধন্যবার ফুলের জন্য।
তিনি আরও বলেন, ধন্যবাদ তোমাদের ভালোবাসার জন্য। ধন্যবাদ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে। ধন্যবাদ আপনার নেতৃত্বের জন্য, এটা বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকল।
পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমাম বলেন, আমাদের জীবন বাঁচাতে আপনারা প্রতিদিন নিজেদেন জীবন ঝুঁকিতে ফেলেন। সেই প্রতিবেশিদেরও ধন্যবাদ যারা সেদিন খুনির হাত থেকে বাঁচতে তাদের ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এই সন্ত্রাসী চেয়েছিল তার কুদর্শন দিয়ে আমাদের আলাদা করতে। কিন্তু আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে নিউজিল্যান্ডকে ভাঙা যাবে না। সারা বিশ্বের উচিৎ নিউজিল্যান্ডের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং একতার শিক্ষা নেয়া। এই হামলায় যত মানুষ মারা গেছেন সে সংখ্যাটা সাধারণ নয়, আর হামলার পর নিউজিল্যান্ড যে সংহতি দেখিয়েছে সেটা অসাধারণ।
এর আগে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে দুই মিনিটের জন্য নীরব ছিল পুরো নিউ জিল্যান্ড। এদিন সহমর্মিতার বার্তা নিয়ে কয়েক হাজার লোক জড়ো হয়েছিল ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদের সামনে।
নীরবতা পালনের পর সংক্ষিপ্ত ভাষণে সন্ত্রাসী হামলায় আল-নূর মসজিদে নিহতদের স্বজনদের সান্তনা দিতে যেয়ে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরদার্ন বলেছেন, আপনাদের সঙ্গে কাঁদছে নিউ জিল্যান্ড। আমরা সবাই এক।
গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলা চালায় ২৮ বছরের অস্ট্রেলিয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট। ঠান্ডা মাথায় এই হত্যাযজ্ঞে নিহত হয় ৫০ জন মুসলমান। নিহতরা সবাই পাকিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী নতুবা শরণার্থী।
এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
এই বিভাগের আরো সংবাদ