আজকের শিরোনাম :

ক্রাইস্টচার্চ হামলা : প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে হামলার তথ্য পাঠিয়েছিলেন টারান্ট

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০১৯, ১৫:১১

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শুক্রবার জোড়া মসজিদে হামলার ৯ মিনিট আগে একটি নথি পেয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেখানে হামলার কথা থাকলেও ঘটনাস্থল বা বিস্তারিত কিছু ছিল না।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেন বলেছেন, নথিটি পাওয়ার দুই মিনিটের মধ্য সেটি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

তবে হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্রেন্টন টারান্ট একাই হামলা করেছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ।

২৮ বছরের ব্রেন্টন টারান্ট নিজেকে ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী’ বলে দাবি করেছেন, যিনি পুরো হামলার ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেন।

ওই ঘটনার পরে আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, তবে তারা হামলার সঙ্গে জড়িত নয় বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলছেন, তিনি এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।

নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক এই হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত আরও ৫০ জন আহত হয়েছে।

গুলির আঘাত নিয়ে অন্তত ৩৪ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সর্বশেষ কী জানা যাচ্ছে?
রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেন বলেছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে, যেখানে অস্ত্র আইন সংস্কারের বিষয়টিও রয়েছে। আমাদের অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।

তিনি জানান, মঙ্গলবার দেশটির সংসদ হামলায় হতাহতদের সম্মানে শ্রদ্ধা জানাবে।

তিনি বলেছেন, এখানে আরো কিছু প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলোর উত্তর পাওয়া দরকার। যেমন ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোর ভূমিকা, যেটি হামলার লাইভ ভিডিও সম্প্রচারে ব্যবহৃত হয়েছে। এই সামাজিক মাধ্যমগুলোর ব্যাপক গ্রাহক রয়েছে এবং সমস্যা হলো, এটা নিউজিল্যান্ডের আয়ত্তের বাইরে।

তবে ফেসবুক জানিয়েছে, তারা ওই হামলার প্রায় ১৫ লাখ ভিডিও প্রথম ২৪ ঘণ্টাতেই ছড়িয়ে ফেলেছে। এখন ওই ভিডিও'র সবরকম সম্পাদিত ভার্সনগুলো সরানোর কাজ চলছে, যেগুলোর কোন গ্রাফিক কনটেন্ট নেই।

আর্ডেন নিশ্চিত করেছেন যে, হামলা শুরুর নয় মিনিট আগে তার দপ্তর সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছ থেকে একটি নথি পেয়েছিলেন। তবে সেখানে ঘটনাস্থল বা কোন বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া ছিল না।

তিনি বলেছেন, দুই মিনিটের মধ্যেই সেটি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে দেয়া হয়।

অন্যদিকে কমিশনার বুশ বলেছেন, কর্তৃপক্ষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চেষ্টা করছে যাতে দুইটি মসজিদে হামলায় নিহতদের পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে সনাক্ত করতে পারে।

এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয় এবং তাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিষয়ে তারা সচেতন রয়েছেন বলে জানান।

হামলার সঙ্গে আর কারা জড়িত?
প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ব্রেন্টন টারান্টকে শনিবার আদালতে হাজির করা হয় । তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে, তবে আরো কিছু অভিযোগ আনা হতে পারে।

২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন টারান্ট গায়ে সাদা রং-এর কয়েদীদের শার্ট এবং হাতে হ্যান্ডকাফ বাধা অবস্থায় হাজির করা হয়।

পুলিশ কমিশনার বুশ সাংবাদিকদের বলেছেন, শুধু ২৮ বছরের এই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, অপর যে দুই ব্যক্তিতে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা হামলায় জড়িত নয় বলেই পুলিশ ধারণা করছে। আরেকজন নারীকে আটক করার পরেও তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। আরেকজন পুরুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র রাখার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

১৮ বছর বয়সী এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে তার জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

এদের কারো বিরুদ্ধেই এর আগে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ব্রেন্টন টারান্টকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে। আগামী ৫ই এপ্রিল তাকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।
খবর বিবিসি বাংলা

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ