আজকের শিরোনাম :

আইএসের শামীমার শিশু সন্তানটি মারা গেছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০১৯, ১০:৫৩

লন্ডন থেকে দুই বান্ধবীসহ পালিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণী শামীমা বেগমের তৃতীয় সন্তানটির মারা গেছে।

সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) এক মুখপাত্র শামীমার সদ্যোজাত ছেলে সন্তানটির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শামীমা সিরিয়ার যে আশ্রয়শিবিরে থাকেন সেখান গত শুক্রবার তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মেডিকেল সার্টিফিকেটে জানানো হয়েছে, শামীমার সদ্যোজাত ছেলেটি নিউমোনিয়ায় ভুগে মারা গেছে। তার বয়স ছিল মাত্র তিন সপ্তাহ।

আশপাশের এক রেড ক্রিসেন্ট কর্মীর ভাষ্যমতে, ‘শিশুটি শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার আগে তার মা একজন চিকিৎসককে দেখান। পরে দুপুরের দিকেই শিশুটি মারা যায়।’

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বিবিসিকে বলেন, খবরটি সত্য কিনা তা আমি একেবারেই জানি না। তবে আমি বলব, এটা দুঃখজনক। এমন অনেক নিষ্পাপ শিশুই হয়ত আছে যারা যুদ্ধক্ষেত্রে জন্ম নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ফেলা ওইসব শিশুর জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই। কারো জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়া যে কতটা বিপজ্জনক এ ঘটনাই তার সাক্ষী।

ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, যে কোনো শিশুর মৃত্যুই করুণ এবং তার পরিবারের জন্য অত্যন্ত বেদনার। সরকার সিরিয়ায় যাওয়ার বিরুদ্ধে অবিরতভাবে উপদেশ দিয়ে আসছে। যদি কেউ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে কিংবা মারাত্মক বিপদসংকুল অঞ্চলে যায় তাহলে তা বন্ধে আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করব।

বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও শামীমা বেগ ব্রিটিশ নাগরিক। ২০১৫ সালে শামীমা তার আরও দুই বান্ধবীসহ লন্ডনের ব্রেথনাল ইস্কুল থেকে পালিয়ে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের ডাচ বংশোদ্ভূত ‘যোদ্ধা’ ইয়াগো রিদাইককে বিয়ে করেন। শামীমার এর আগ্রে দুটি বাচ্চা হয়েছিল। সেগুলোও অপুষ্টি আর রোগে ভুগে মারা যায়।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শামীমা বেগম বলেছিলেন তিনি সিরিয়ায় যাবার জন্য অনুতপ্ত নন, তবে তাদের সব কর্মকান্ডের সাথে একমতও নন।

তার কথায়, তিনি আইএসের পোস্টার গার্ল হতে চাননি, তিনি শুধু যুক্তরাজ্যে একান্তে তার সন্তানকে বড় করতে চান। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার তাকে ফেরত আসতে বাধা দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে তার দেশে ফেরা বন্ধে সমস্ত চেষ্টা শুরু হয়। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ঘোষণা দেন শামীমার দেশের ফেরত আসা ঠেকাতে তিনি তার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবেন।

সাজিদ জাভিদ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার ঘোষণা দেন। ব্রিটিশ সরকারের এমন বিরোধিতার চলতে থাকায় দেশে ফিরতে পারেন না শামীমা। এদিকে তার যুক্তরাজ্য ছাড়া আর কোনো দেশের নাগরিকত্ব না থাকায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এসব চলতে চলতে গত তিন একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন শামীমা।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ