আজকের শিরোনাম :

চার্চে র‍্যাপ গেয়ে উপদেশ দেন ‘কুল’ যাজক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০১৮, ১৫:২০

ঢাকা, ৩১ মে, এবিনিউজ : কেনিয়াতে এমন একজন খ্রিস্টান যাজক আছেন, যিনি শুধু নীরস উপদেশ বিলি করে বেড়ান না, বরং তার যা বলার সেটা বলেন র‍্যাপ গেয়ে।

এ ক্যাথলিক যাজককে সবাই চেনে ‘ফাদার সুইট পল’ নামে, আর তিনি দেশজুড়ে বিভিন্ন চার্চে র‌্যাপ সংগীতের মাধ্যমে তার ‘সারমন’ বা উপদেশ দিয়ে থাকেন।

অনেকেই তার গানের বিরাট ভক্ত, কিন্তু কেনিয়াতে অনেকেই আবার তার এই অভিনব পদ্ধতিতে ধর্মীয় প্রচারের বিষয়টা তত পছন্দ করছেন না।

কেনিয়াতে ফাদার সুইট পলের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিবিসির অ্যান্টনি ইরুঙ্গু, তখন তিনি স্থানীয় একটি চার্চে গান গাইছেন।

তাকে আসলে বলা যেতে পারে ‘প্রিস্ট উইথ আ ডিফারেন্স’। তিনি একজন ধর্মযাজক, কিন্তু অন্য রকমের যাজক।

ফাদার পল নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘অনেক খ্রিস্টানই আমাকে মাসা নামে ডাকে। আর কমবয়সী ও তরুণ-তরুণীরা আমাকে সুইট পল বলে, কারণ আমি খুব মিষ্টি র‌্যাপ গাই। আমি মিষ্টি কথা বলি, মিষ্টি নাচ করি। ধন্যবাদ, সবাই ভালো থাকুন, কুল থাকুন, আশীর্বাদ বর্ষিত হোক।’

ফাদার পল এমন সব বিষয় নিয়েই র‍্যাপ গান বাঁধেন যেগুলো তরুণ সমাজের জীবনযাপনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তিনি বলছেন, এসব নিয়ে গান গাইলে তবেই কিন্তু কমবয়সীরা চার্চে আসতে আকৃষ্ট হবে।

সুইট পল জানান, তিনি গানবাজনার রাস্তা নিতে আকৃষ্ট হয়েছিলেন রাজধানী নাইরোবিতে একটি করুণ ট্র্যাজেডির পর। ওই ঘটনায় একটি বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে হুড়োহুড়িতে চাপা পড়ে, পদদলিত হয়ে অনেক যুবক-যুবতী মারা যান। বলেন, ‘তখনই আমি নিজেকে বলি, এ ধরনের ঘটনা কিছুতেই ঘটতে দেওয়া যায় না। তরুণরা যদি বিনোদন চায়, খেলাধুলো চায় তারা তো চার্চেও আসতে পারে - প্রার্থনার পাশাপাশি নিজেদের মনোরঞ্জনও করতে পারে।’

কিন্তু তার গান শোনার আকর্ষণে যে ছেলেমেয়েরা চার্চে আসছে তাদের তিনি কী শোনান? বলেন, ‘আমি আমার গানের মাধ্যমে তাদের হার্ড ড্রাগ থেকে দূরে থাকতে বলি। বলি আরও বেশি বেশি করে গাছপালা লাগাও, ফুলগাছ লাগাও। আমাদের দেশে অরণ্য আচ্ছাদন বাড়াও। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলি, যেটা আমাদের শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

ফাদার পল যে সব সময় গান গেয়েই সারমন দেন, তা অবশ্য নয়। সাবেকি পদ্ধতিতেও তিনি মাঝে মাঝে চার্চে প্রার্থনাসভা পরিচালনা করেন, তবে তাতেও সমালোচকদের হাত থেকে তিনি পুরোপুরি নিস্তার পাচ্ছেন না।

তার কথায়, ‘এ পর্যন্ত আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু খুব সুখের বলা যাবে না, কারণ অনেক মানুষই আমাকে ভুল বুঝছেন, আর তার মধ্যে আমার সহকর্মী অনেক যাজকরাও আছেন। তাদের কেউ কেউ মনে করেন আমি ধর্মযাজকের কাজের গুরুত্বকে লঘু করে দিচ্ছি, আমার এভাবে গান গেয়ে সারমন দেওয়া ঠিক নয়। আমি কিন্তু তাদের প্রায় সব সময়ই বলি আমাদের যদি কোনও বিষয়ে প্রতিভা থাকে তাহলে সেই প্রতিভা ব্যবহার করাই উচিত!’
সূত্র : বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ