আজকের শিরোনাম :

খুলে দেওয়া হলো পাকিস্তানের চারটি বিমানবন্দর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০১৯, ১৮:৫১

পাক-ভারত চলমান উত্তেজনার কারণে তিনদিন বন্ধ থাকার পর পাকিস্তানের বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার বিকাল থেকে ইসলামাবাদ, করাচি , পেশওয়ার এবং কোয়েটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ফের চালুর ঘোষণা দিয়েছে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি। তবে দেশটির বাকি বিমানবন্দরগুলো আগামী ৪ মার্চ (সোমবার) পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার (০১ মার্চ) সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (সিএএ) বরাতে পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো জানায়, করাচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পেশওয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কোয়েটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রাথমিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ থাকা বাকি বিমানবন্দরগুলোও কয়েকদিনের মধ্যে খুলে দেওয়া হবে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের (সিএএ) নির্দেশে ওই চারটি বিমান বন্দরের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল ফের চালু করা হয়।

তবে লাহোর, শিয়ালকোট, মুলতানসহ অন্য বিমান বন্দরগুলো আগামী ৪ মার্চ দুপুরের পর থেকে চালু হবে। সাময়িকভাবে সেগুলো এখন বন্ধ রয়েছে।

পিআইএ’র মুখপাত্র মাসুদ তাজওয়ার সংবাদ মাধ্যম ডন-কে জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ‘পিকে-৩৭০’ ফ্লাইটটি করাচি থেকে ইসলামাবাদ পৌঁছেছে। পরে নির্ধারিত আরও তিনটি ফ্লাইট করাচি থেকে জেদ্দা, মদিনা ও দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

এদিকে বিমান বন্দরগুলো চালু হলেও আতঙ্কের কারণে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে পাক-ভারত উত্তেজনার পরিস্থিতিতে বুধবার রেলপথ ও আকাশপথে জরুরি অবস্থা জারি করে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএ) জানায়, পাকিস্তান থেকে সব ধরনের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ওই টুইটবার্তায় দেশটির সিভিল এভিয়েশন অথরিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘ সাধারণ সব ফ্লাইট সাসপেন্ড করা হল। পরবর্তী নোটিশ জারি না করা পর্যন্ত আকাশপথ বন্ধ থাকবে।’

ফ্লাইট রাডারের তথ্য বলছে, পাকিস্তানি এবং ভারতের আকাশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ও ট্রানজিট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক কিছু ফ্লাইটকে উড্ডয়নকারী দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ফ্লাইট বিকল্প পথ ব্যবহার করছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় অন্তত ৪০ সেনা নিহত হন। এই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। ভারত এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে বলে দাবি করে আসছে।

এই হামলার জেরে গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। হামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জঙ্গি নিহত হয় বলে দাবি করেছে দেশটি।

মঙ্গলবার ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানে বালাকোট এলাকায় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা পার হয়ে বোমা হামলা চালায়। ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করে এতে অনেক জঙ্গি হতাহত হয়েছে। তবে পাকিস্তান বলছে, এতে তাদের দেশে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এর পর এদিন বিকালে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় ব্যাপক গোলা বর্ষণ করে। এতে ভারতীয় দুই নাগরিক নিহত হওয়া দাবি করা হয়েছে। বুধবার সকালে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় দুটি বিমান ঢুকে পড়লে পাকিস্তান তা ভূপাতিত করে। এ ঘটনায় দুইজন নিহত ও এক ভারতীয় পাইলটকে আটক করেছে পাকিস্তান।

২৬ ফেব্রুয়ারির পর থেকে দু’দেশের মধ্যে চলমান তুমুল উত্তেজনার কারণে সেদিনই পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।

দেশটির আকাশসীমা বন্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলেও ধাক্কা লাগে। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে চীনসহ পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার ফ্লাইটগুলো সাধারণত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ওপর দিয়ে উড়লেও এয়ারলাইন্সগুলোকে এখন রুট বদল করতে হয়েছে। কোনো কোনো এয়ারলাইন্স ফ্লাইটও বাতিল করছে বারবার।

শুক্রবার রাতে প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর ভারতের আটককৃত পাইলটকে ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান। এতে দুই দেশের মধ্যে চলমান ‘উত্তেজনাকর’ পরিস্থিতি কিছুটা ‘শিথিল’ হওয়ায় ফের বিমান চলাচল শুরু হল।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ