আজকের শিরোনাম :

নিজামুদ্দিনের মাজারে মেয়েরা কেন ঢুকতে পারবেন না?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:১০

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে হজরত নিজামুদ্দিন দরগার ভেতরের মাজারে কেন মহিলাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, এ দিন দিল্লি হাইকোর্ট দরগা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে সেই কৈফিয়ত তলব করেছে।

পুনে-র একদল আইন ছাত্রী গত সপ্তাহে দিল্লি বেড়াতে এসে নিজামুদ্দিন দরগায় গেলে তাদের মাজারের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি কেরালার শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী বয়সের মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে যে রায় দিয়েছে, তার আলোকেই এরপর ওই ছাত্রীরা দরগা কর্তৃপক্ষের 'বৈষম্যে'র বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দাখিল করেন।

সেই মামলার শুনানিতেই আজ হাইকোর্ট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, দিল্লির আম আদমি পার্টি সরকার, দিল্লি পুলিশ ও হজরত নিজামুদ্দিন দরগার কাছে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেন্দ্র মেনন ও বিচারপতি ভি কে রাও-কে নিয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ আগামী ১১ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাদের জবাব দিতে বলেছে।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের শবরীমালা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে শীর্ষ আদালতে যে আবেদন জমা পড়েছে, তার শুনানিতে কী হয় সে দিকেও দিল্লি হাইকোর্ট নজর রাখবে বলে বিচারপতিরা এদিন জানিয়েছেন।

হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া ছিলেন ত্রয়োদশ শতকের একজন বিখ্যাত সূফী সাধক, দিল্লির বিখ্যাত নিজামুদ্দিন দরগা গড়ে উঠেছে তার সমাধিস্থলকে ঘিরেই।

মুসলিমরা তো বটেই, অন্যান্য ধর্মের বহু মানুষও এটিকে পবিত্র তীর্থস্থান বলে গণ্য করেন। দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ ভক্ত প্রতি বছর এই দরগা দর্শনে আসেন।

কিন্তু পুনে-র ওই ছাত্রীরা বলছেন, দরগা চত্বরে প্রবেশ করতে পারলেও তারা যখন দেখেন যে তার একেবারে ভেতরে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার কবরটিকে ঘিরে যে ভবন - সেখানে মেয়েদের পা রাখাও মানা, তারা ভীষণ অবাক হয়ে যান।

'লাইভ ল' ম্যাগাজিনকে তারা জানান, "মেয়েদের যে ভেতরে ঢোকা বারণ, সেই মর্মে একটি নোটিশও বাইরে লটকানো আছে। মেয়েরা মাজারে ঢুকতে পারবেন না, শুধু ঊঁকি দিয়ে দেখতে পারবেন মাজারের ভেতরে পুরুষরা কী করছেন।"

এই 'বৈষম্যমূলক' রীতির বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাননি বলে তাদের অভিযোগ। ফলে বাধ্য হয়েই ওই ছাত্রীরা দিল্লি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে তাদের আইনজীবী কমলেশ কুমার মিশ্র জানান।

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রায় আড়াই মাস আগেই সবরীমালা মন্দিরে দশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সী মেয়েদের ঢোকার অনুমতি দিয়েছিল - কিন্তু কেরালায় মন্দিরের ভক্তসমাজ ও বিজেপির তুমুল বাধার মুখে আজ পর্যন্ত ওই বয়সের কোনও মহিলা ওই মন্দিরে ঢুকতে পারেননি।

কেরালার রাজ্য সরকারের সমর্থন ও পুলিশের নিরাপত্তা নিয়েও জনাকয়েক মহিলা শবরীমালার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন - কিন্তু তাদেরও শেষ পর্যন্ত মন্দিরের গর্ভগৃহের অনেক দূর থেকেই ফিরে আসতে হয়।

হজরত নিজামুদ্দিন দরগার মাজারেও মেয়েদের প্রবেশের অধিকারকে কেন্দ্র করে সবরীমালার মতোই কোনও বিতর্ক বা আন্দোলন শুরু হয় কি না, এখন সেটাই দেখার বিষয় হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ