আজকের শিরোনাম :

রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হিন্দুদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে : অ্যামনেস্টি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০১৮, ১১:৩৫

ঢাকা, ২৩ মে, এবিনিউজ : মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী গত আগস্টে হামলার সময় অন্তত ৯৯ জন হিন্দু বেসামরিক লোককে হত্যা করে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক তদন্তে উঠে এসেছে। এ বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নামে পরিচিত।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরসা রাখাইনে একটি অথবা দুটি গণহত্যা চালিয়ে শিশুসহ ৯৯ হিন্দুকে হত্যা করেছে।

তবে আরসা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অ্যামনেস্টি বলেছে, গত আগস্টে বার্মিজ বাহিনীর বিরুদ্ধে আরসার বিদ্রোহের প্রথম দিনেই হিন্দুদের হত্যার এ ঘটনা ঘটে। বার্মিজ বাহিনীর বিরুদ্ধেও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন এবং গণহত্যা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে গত আগস্ট থেকে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়।

অবশ্য বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে কয়েকশ হিন্দুও রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি এর আগে রোহিঙ্গা মুসলামানদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হামলা এবং নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছিল।

এখন সংস্থাটি রাখাইনের বাসিন্দা হিন্দুদের ওপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরল।

অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এবং রাখাইন থেকে তারা আরসার হাতে হিন্দুদের নির্বিচারে হত্যার তথ্য প্রমাণ পেয়েছে।

এর ভিত্তিতে সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৬ আগস্ট সকালে আরসা সদস্যরা রাখাইনের মংডুর উত্তরাঞ্চলের আহ নুক খা মং সেইক গ্রামে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ চালায়।

কালো পোশাকের সশস্ত্র লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় সাধারণ রোহিঙ্গারা মিলে গ্রামটিতে হিন্দু নারী, পুরুষ এবং শিশুদের ঘিরে ফেলে নির্যাতন চালায়। তারা এই গ্রাম থেকে ৫৩ জন হিন্দুকে ধরে অন্য জায়গায় নিয়ে হত্যা করে।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে আরেকটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আরসা সদস্যরা শিশুসহ আটজন হিন্দু নারীকে তুলে নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের চাপ দিয়েছিল। একপর্যায়ে ওই হিন্দু নারীরা তাদের শিশুদের নিয়ে আরসা সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন।অবশ্য পরে তারা আবার মিয়ানমারে ফিরে যায়।

যে গ্রামে আরসা সদস্যরা হিন্দুদের ওপর নির্যাতন গণহত্যা চালিয়েছে, সেই গ্রামের একজন নারী অ্যামনেস্টিকে বলেছেন, ‘হামলাকারীদের হাতে ছুরি এবং লোহা রড ছিল। তারা আমাদের হাত চোঁখ বেঁধে রাখতো।’

আরসার হাতে থেকে বেঁচে ফেরা হিন্দু নারীদের কয়েকজন তাদের আতœীয় স্বজনকে মেরে ফেলতে দেখেছেন।

অ্যামনেস্টি বলেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনী যেমন মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে, আরসার বর্বরতাও তার থেকে কম কিছু নয়।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ