আজকের শিরোনাম :

যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা কী চায়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৫৫

যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ শহরের এক ইহুদি উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে যে লোকটি ১১ জনকে হত্যা করে, তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কৌঁসুলিরা।

রবার্ট বোওয়ার্স নামের যে লোক এ হামলা চালায়, তাকে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী আদর্শে বিশ্বাসী বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। হামলার আগে সে এই বলে চিৎকার করছিল যে সব ইহুদি কে মরতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ইহুদি দের ওপর এটি এ যাবতকালের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।

এর আগে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে নামকরা রাজনীতিক এবং আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে ‘পত্র বোমা’ পাঠানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আরেক শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীকে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বর্ণবিদ্বেষী শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা অনেক বেড়ে গেছে বলে মনে করছে মানবাধিকার এবং নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো। এই শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা কারা? তারা আসলে কী চায়?

অল্টারনেটিভ রাইট বা অল্ট রাইট আন্দোলন শুরু হয় মূলত রাজনৈতিক শুদ্ধাচার বা পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের বিরুদ্ধে আন্দোলন হিসেবে।

পলিটিক্যাল কারেক্টনেসকে এরা সহ্যই করতে পারে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তারা খুবই পছন্দ করে।

সমালোচকদের ধারণা, এই গোষ্ঠীটির মূল আদর্শ আসলে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ, ইসলাম বিদ্বেষ, ইহুদি বিদ্বেষের মতো অভিযোগ উঠে, তখন তার পক্ষে এগিয়ে এসেছিল এই অল্ট রাইট আন্দোলন।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরে এই আন্দোলনের নিন্দা করে বলেছিলেন, তিনি তাদের সঙ্গে একমত নন।

মূলত শ্বেতাঙ্গ পরিচয় এবং ‘পশ্চিমা সভ্যতা’কে রক্ষার কথা বলে অল্ট রাইট। তবে এর বিরোধীরা মনে করেন, অল্ট রাইট আসলে একটি বর্ণবাদী, পুরুষতান্ত্রিক এবং ইহুদিবিদ্বেষী আন্দোলন।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কুখ্যাত শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গোষ্ঠী। সংক্ষেপে কেকেকে নামে পরিচিত।

১৮৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের পর দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সাবেক কনফেডারেট অফিসাররা এই গোষ্ঠী গঠন করে। পরের দশকগুলোয় অবশ্য এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সব রাজ্যেই।

কেকেকে এখন নানাভাবে বিভক্ত। কিন্তু তারা কৃষ্ণাঙ্গ, ইহুদি, অভিবাসী থেকে শুরু করে সমকামী- সবার বিরুদ্ধেই বৈষম্যে বিশ্বাসী।

কু ক্লাক্স ক্লানের সদস্যরা সাদা কস্টিউম পরে এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় তারা অশ্বেতাঙ্গদের হত্যা করে।

এই গোষ্ঠীর সদস্যরাও মূলত ইহুদী বিদ্বেষী। নাৎসী জার্মানি এবং এডলফ হিটলারের আদর্শকে তারা পছন্দ করে।

ইউরোপের বহু দেশে যদিও এ ধরনের সংগঠন এবং আদর্শ নিষিদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রে তা নয়। মার্কিন সংবিধানের ফার্স্ট অ্যামেন্টডমেন্ট সেখানে এরকম চরম মতাদর্শ প্রচারকেও সুরক্ষা দেয়।

ইলিনয় রাজ্যের একটি ইহুদি অধ্যুষিত শহরের ভেতর দিয়ে একবার একটি নাৎসীবাদী গোষ্ঠী মিছিল করতে গেলে সেটি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত তখন মিছিল করার অধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছিল মার্কিন সংবিধানের ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্টের কথা উল্লেখ করে।
খবর বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ