আজকের শিরোনাম :

নারীদের হত্যা করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করতেন মেক্সিকোর দম্পতি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৫৪

নারীদের হত্যার পর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগে এক দম্পতি গ্রেফতারের পর তদন্ত শুরু করেছে মেক্সিকোর পুলিশ। এ দম্পতি অন্তত ১০টি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে পুলিশ ধারণা করছে।

খবরে জানা যাচ্ছে, গ্রেফতারের পর পুরুষটি অন্তত ২০ নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

দম্পতির ফ্ল্যাট এবং কাছাকাছি একটি জায়গায় মানব শরীরের টুকরো খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একটি বালতি এবং ফ্রিজে রাখা ছিল।

তদন্তকারীরা বলছেন, এই দম্পতি শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করতেন, কিন্তু কাদের কাছে বিক্রি করতেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

নারীদের হত্যা করা মেক্সিকোতে নতুন কোনো ঘটনা নয়, যার জন্য বেশিরভাগ সময় কোনো বিচার হয় না। কিন্তু এ ঘটনার ভয়াবহতা প্রকাশ পাওয়ার পর দেশটিতে ক্ষোভের তৈরি করেছে। মেক্সিকো সিটির শহরতলীর সড়কে অনেকে বিক্ষোভ করেছেন।

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে নিখোঁজ ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ন্যান্সি হুইট্রন এবং তার দুই মাস বয়সী সন্তান, ভ্যালেন্টিনা।

গত ৬ সেপ্টেম্বর বড় দুই সন্তানকে স্কুলে দিয়ে আসার পর থেকে ন্যান্সি আর তার ছোট সন্তানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর পরই ন্যান্সির প্রতিবেশীরা সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।

ওই দম্পতির প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দম্পতি মিলে একটি বাচ্চা বহনের ট্রলি বা প্রাম ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিল বলে তারা দেখতে পান। পুলিশ তাদের থামিয়ে সেটি তল্লাশি করলে তার ভেতর মানব শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেখতে পায়।

হুইট্রনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে ওই ব্যক্তি, যার নাম হুয়ান কার্লোস বলে জানানো হয়েছে। সে স্বীকার করেছে যে, ২৩ বছরের অর্লেট অলগুইন এবং ২৯ বছরের ইভলিন রোহাসকেও তারা হত্যা করেছে।

এই ৩ জনই একক মা ছিলেন, যারা গত কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন।

শিশু ভ্যালেন্টিনাকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ, যাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। সে এখন তার নানির সঙ্গে রয়েছে।

কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, সে আরও স্বীকার করেছেন যে, হত্যার আগে কোনো কোনো নারীকে তারা যৌন নির্যাতনও করেছে। শরীরের অঙ্গ বিক্রির পাশাপাশি তাদের জিনিসপত্র তারা বিক্রি করে দিতো।

তদন্তকারীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার নারীরা হুয়ান কার্লোস এবং তার সঙ্গী, প্যাট্রিসিয়ার কাছ থেকে পোশাক এবং খাবার কিনতেন। ভালো কাপড় রয়েছে, এ রকম তথ্য দিয়ে এই নারীদের একটি জায়গায় নিতে আসতেন প্যাট্রিসিয়া। এর পর তাদের হত্যা করা হতো।

পুলিশ বলছে, গ্রেফতারের সময় হুয়ান কার্লোস পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে গোছল করতে দেয়ার অনুরোধ করেন যেন, সে একটি স্যুট পরে মিডিয়ার সামনে আসতে পারে। কারণ ‘সে কোনো নোংরা অপরাধী নয়’ বলে পুলিশকে জানায়।

মেক্সিকো স্টেটে দেশটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারীদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৩৯৫ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছে, যাদের মধ্যে ২০৭ জনই নারী। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসবের কোনো সমাধান বা বিচার হয় না।
খবর বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ