আজকের শিরোনাম :

সিরিয়ায় রুশ বিমান বিধ্বংসী এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২২:০৫

বিতর্কিত এক পরিস্থিতিতে একটি রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার এক সপ্তাহ পরই মস্কো ঘোষণা করেছে যে তারা সিরিয়াকে অত্যাধুনিক বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে।

ইসরায়েল চায় যেন সিরিয়াকে এই এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র দেয়া না হয়, কিন্তু রাশিয়া তাদের বিমান বিধ্বস্ত হবার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করার পর স্পষ্টত:ই সে আপত্তি অগ্রাহ্য করছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলছেন, দু সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়াকে এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হবে। তিনি আরো জানিয়েছেন, সিরিয়ার কাছেই ভূমধ্যসাগরের কিছু অংশে স্যাটেলাইট ও রেডার যোগাযোগ ব্যবস্থা অকার্যকর করে দেওয়ার জন্যে জ্যামিং সিস্টেম বসানো হবে যাতে সিরিয়ার ভেতরে বিমান হামলা চালানো যেতে না পারে।

সিরিয়াকে অত্যাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে ইসরায়েলের বরাবরই আপত্তি ছিল, কারণ রুশ এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ সীমায় তাদের বিমান ধরাশায়ী করতে সক্ষম।

২০১৩ সালে ইসরায়েলের অনুরোধে সেরকম সিরিয়ার কাছে এই ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ স্থগিত করেছিল রাশিয়া। কিন্তু পাঁচ বছর আগে ইসরায়েলকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি রাশিয়া এখন অগ্রাহ্য করছে।

বিমান বা যে কোন উড়ন্ত লক্ষ্যবস্তুকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে আড়াইশো কিলোমিটার দূর থেকেও আঘাত করা সম্ভব। এবং এটি একই সাথে একাধিক লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।

১৭ই সেপ্টেম্বর সিরিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরের ওপর রাশিয়ার একটি সামরিক বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে ১৫ জন রুশ সৈন্য নিহত হওয়ার ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে রাশিয়া।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, "বর্তমানে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এই উদ্যোগ নিতে রাশিয়া বাধ্য হয়েছে।"

গত সপ্তাহে সিরিয়ার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তাদের বিমানটি বিধ্বস্ত হরেও, ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে রাশিয়া।

মস্কো বলছে, ইসরায়েল তাদের বিমানটিকে এমন এক লাইন অফ ফায়ার বা গোলাগুলির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল যে কারণে বিমানটি ভূপাতিত হয়। সিরিয়াও ইসরায়েলকে দায়ী করছে।

ইসরায়েল অবশ্য শুরু থেকেই তাদের এই দাবী অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর এলোপাথাড়ি গুলিতে রুশ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় তাদের কোন ভূমিকা নেই।

ইসরায়েলের কথা উল্লেখ না করে ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তৃতীয় কোন দেশের কথা বিবেচনা করে সিরিয়াকে অত্যাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্রটি দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, সিরিয়ার ভেতরে যেসব রুশ সৈন্য যুদ্ধ করছে তাদের জীবন রক্ষাই এর লক্ষ্য।

রাশিয়া কি সিরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে?

গত সপ্তাহে রুশ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল সিরিয়ার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে।

কিন্তু রাশিয়া বলছে, লাটাকিয়ায় সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা করার সময় সিরিয়ার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র থেকে রক্ষা পেতে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে রুশ বিমানকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছিলো।

লাটাকিয়ায় যে সিরিয় সামরিক স্থাপনাকে ইসরায়েল টার্গেট করেছিল, সেটি রুশ একটি বিমান ঘাঁটির কাছে। বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথন মার্কাস বলছেন, গত সপ্তাহে লাটাকিয়া টার্গেট করে ইসরায়েল কার্যত রুশ 'রেড লাইন' ভঙ্গ করেছে।

তিনি বলছেন, রাশিয়া এখন বার্তা দিতে চাইছে যে সিরিয়ায় মাঝেমধ্যেই ইসরায়েল যে হামলা করছে তা নিয়ে আর তারা আর চোখ বন্ধ করে থাকবে না।

মি মার্কাস বলছেন, রাশিয়া যদি সেই নীতি নেয়, তাহলে আগামিতে সিরিয়ার ব্যাপারে ইসরায়েলকে খুব সাবধানতার সাথে পথ চলতে হবে।সূত্র: বিবিসি

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ