আজকের শিরোনাম :

জয়া বচ্চনকে দিয়ে প্রচার করিয়ে তৃণমূলের কী লাভ?

  ডয়চে ভেলে

০৫ এপ্রিল ২০২১, ১৭:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

সংসদ ভবনের বাইরে জয়া বচ্চন ও রেণুকা চৌধুরী। এবার তৃণমূলের হয়ে প্রচার করবেন জয়া। ছবি: ইউএনআই
ভারতের পশ্চিমবাংলার বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ভোট প্রচার করবেন জয়া বচ্চন। টলিউড তো ছিলই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এবার প্রবলভাবে ঢুকে পড়ল বলিউডও।

তিনি এখন আর খুব বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন না। বরং রাজনাতিটাই মন দিয়ে করেন। তাঁর স্বামী অমিতাভ বচ্চন যেখানে বন্ধু রাজীব গান্ধীর অনুরোধ ফেলতে না পেরে রাজনীতিতে নেমে কিছুদিনের মধ্যেই কার্যত পালিয়ে বেঁচেছিলেন, সেখানে তিনি রাজনীতির জগতে দিব্যি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। সাংসদ হিসাবেও যথেষ্ট সক্রিয়। এহেন জয়া বচ্চন, যিনি পশ্চিমবঙ্গে এখনো 'ধন্যি মেয়ে' বলে পরিচিত, তিনিও নেমে পড়লেন বিধানসভা ভোটের প্রচারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে তিনি দিনে দুইটি করে জনসভা করবেন।

বলিউড নায়িকার প্রথম জনসভা টালিগঞ্জে, যেখানে অরূপ বিশ্বাসের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন বলিউডের সঙ্গে যুক্ত বিজেপি-র বাবল সুপ্রিয়। টলিপাড়ায় বলিউডের নায়িকাকে নিয়ে এসে বিজেপি-র তারকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরালো করছে তৃণমূল। শুধু টালিগঞ্জ নয়, জয়া প্রতিদিন অন্য জায়গাতেও প্রচার করবেন। কলকাতা ও তার আশপাশের জেলায় এবার ভোট আসছে। তাই জয়া এদিকেই বেশি ব্যস্ত থাকবেন।

তৃণমূল এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'বাংলার ঘরের মেয়ে' বলছে। তা 'বাংলার ঘরের মেয়ে' এতদিন পর্যন্ত মূলত,  টলিউডের ঘরের ছেলে-মেয়েদের দিয়েই প্রচার করাচ্ছিলেন। দেব, শতাব্দী, নুসরত, মিমি, জুন মালিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূলের তারকা ব্রিগেডের তালিকাটা বেশ বড়। এবারই কাঞ্চন মল্লিক, জুন মালিয়া, সোহম চক্রবর্তী, রাজ চক্রবর্তী, সায়নী সহ বেশ কয়েকজনকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তাদের ছেড়ে প্রবাসী বাঙালি ও সমাজবাদী পার্টির তারকা ডেকে এনে ভোট প্রচার করাতে হচ্ছে কেন?

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ''জয়া বচ্চনের সঙ্গে বাংলার কোনো যোগাযোগ নেই। তাকে এই প্রজন্ম চেনে না। উল্টোদিকে  মিঠুন'দা বরাবর বাংলার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখেছেন। তাই মিঠুনদার সঙ্গে জয়া বচ্চনের কোনো তুলনা হয় না।''

সত্যিই কি তাই? প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''হতে পারে এই প্রজন্ম জয়া বচ্চনকে সেভাবে চেনে না। কিন্তু আগের প্রজন্ম ধন্যি মেয়েকে চেনে। তাকে পছন্দ করে।'' জয়ন্ত মনে করেন, ''মিঠুন দলবদল করেছেন। জয়া সমাজবাদী পার্টিতে বরাবর আছেন এবং রাজনীতিটা তিনি সিরয়াসলি করেন।''  জয়ন্তর মতে, ''তৃণমূল এবার বাংলার বাইরের রাজনীতিকদের পরিকল্পনা করে ডাকছে। যেমন যশবন্ত সিনহা। তিনি মোদী-শাহ-নাড্ডার বক্তব্যকে পাল্টা যুক্তি দিয়ে কাটছেন। মানুষের কাছে তা বিশ্বাসয়োগ্য লাগতে পারে।  জয়া বচ্চন পরিচিত মুখ, তার প্রচুর ভক্ত আছে। তাকে দিয়ে মিঠুনের মোকাবিলা করতে চাইলেও অসুবিধা নেই।''

তৃণমূলের মুখপাত্র ও রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ওব্রায়েন বলেছেন, ''বাংলা কেন তার মেয়েকে চায়, জয়াজি তা মানুষের কাছে ব্যাখ্যা করবেন। '' তিনি তা অবশ্যই করতে পারেন। তবে ঘটনা হলো, তৃণমূল ও বিজেপি-র সৌজন্যে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে  এবার খুব বেশি করে ঢুকে পড়েছেন তারকারা, টলিউড তো বটেই, বলিউডও। তাদের দেখতে ভিড় হচ্ছে ঠিকই, তবে তাদের জন্য ভোটটা কি ঘাসফুল বা পদ্মে পড়বে?

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ