আজকের শিরোনাম :

ভারতে বিজিবির সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা, স্ত্রীদের দিল্লি সফর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:০৮

বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে আজ সোমবার থেকে শীর্ষ পর্যায়ের যে সম্মেলন শুরু হয়েছে তাতে উভয়পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। দু'দেশের এই দুটো বাহিনীর মধ্যে আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে উভয়পক্ষের তরফে ভিন্ন ভিন্ন কিছু কর্মসূচিরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

পাঁচদিনের এই বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে যেসব বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে সীমান্ত এলাকায় অপরাধ দমনের জন্যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা যেমন বলা হয়েছে তেমনি রয়েছে ভারতে বাংলাদেশী সীমান্ত রক্ষীদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা এবং তাদের স্ত্রীদের ভারত সফরের মতো বিষয়ও।

দিল্লিতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফের দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব আলোচ্য বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

কিন্তু এসব এজেন্ডায় কোন পক্ষের তরফ থেকেই সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করা হয়নি। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের হিসেবে এবছর বিএসএফের হাতে তিনজন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ জন আর ন'জন অপহৃত হয়েছেন।

অধিকার বলছে, ২০০০ সালের পর থেকে গত ১৮ বছরে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের হাতে ১,১৩৬ জন বাংলাদেশী প্রাণ হারিয়েছে।

বিএসএফের এজেন্ডায় সীমান্তের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত কিছু বিষয়ের উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবির এজেন্ডায় দেখা যাচ্ছে সেখানে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ, বন্ধুত্বপূর্ণ খেলাধুলা এবং নানা ধরনের বিনোদনধর্মী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বাহিনীর মহাসচিব পর্যায়ের এই বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে আলোচনার জন্যে যেসব বিষয় প্রস্তাব করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে উভয়পক্ষের পছন্দের একটি জায়গায় যৌথভাবে 'মিলন মেলা' আয়োজন করা, বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রীড়া অনুষ্ঠান, সাইক্লিং, হাইকিং, রোয়িং-রাফটিং বা নৌকা বাইচের আয়োজন, পর্বতারোহণ, দুই বাহিনীর যে বাজনার দল বা মিউজিক ব্যান্ড আছে সীমান্ত এলাকায় তাদের যৌথ অনুষ্ঠান, দুই বাহিনীর মধ্যে শুটিং প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

আলোচনার জন্যে বিজিবির পক্ষ থেকে তাদের পরিবার পরিজনদের জন্যেও কিছু কর্মসূচির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

যেমন বিজিবি ও বিএসফ এই দুই বাহিনীর কর্মকর্তাদের স্ত্রীদের ভারত ও বাংলাদেশ সফর। এবং ভারতে বিজিবির কর্মকর্তাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা।

বাংলাদেশের সীমান্ত বাহিনী বিজিবির পক্ষ থেকে ভারতে বাংলাদেশী স্কুল-শিশু, ডাক্তার ও সাংবাদিকদের ভারত সফরেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিএসএফ ও বিজিবি-র সদস্যদের মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে ভলিবল, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন বা হকি-র প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হচ্ছে - বিজিবির এজেন্ডাতেও এই সব 'বন্ধুত্বপূর্ণ খেলাধুলো'র কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজিবির এসব এজেন্ডা নিয়ে জানতে এই বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সেটা সম্ভব হয়নি।

বছরে দুবার এই মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এবার হচ্ছে দিল্লিতে। শেষ বৈঠকটি হয়েছিল ঢাকায় গত এপ্রিল মাসে।

এবারের এই ৪৭তম বৈঠকে বিএসএফের প্রধান কে কে শর্মা এবং বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাফিনুল ইসলাম নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এজেন্ডায় ভারতের পক্ষ থেকে যেসব বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিএসফের সদস্যদের উপর বাংলাদেশী দুষ্কৃতিদের হামলা ঠেকানো, সীমান্ত এলাকায় অপরাধ বন্ধে যৌথ উদ্যোগ, ভারতীয় বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, সীমান্ত অবকাঠামো, যৌথ টহল, নাজুক এলাকা চিহ্নিত করা এবং তথ্য বিনিময়।

বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বিষয়গুলোর মধ্যে আরো রয়েছে সীমান্ত এলাকায় অপরাধ দমন, ভারত থেকে বাংলাদেশে মাদক পাচার, বিএসফের হাতে বাংলাদেশী নাগরিকদের গ্রেফতার বা আটক হওয়া ইত্যাদি। দিল্লিতে মহাসচিব পর্যায়ের এই বৈঠক চলবে আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ