আজকের শিরোনাম :

বিলি না করে চিঠি ফেলে রাখতেন পোস্টমাস্টার!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১১:৫৮

ঢাকা, ১৬ আগস্ট, এবিনিউজ : আপনি হয়তো চাকরির জন্য কোথাও পরীক্ষা দিয়ে মনোনীত হয়েছিলেন, কিংবা আবেদন করেছিলেন ব্যাংকের এটিএম কার্ডের জন্য এবং কর্তৃপক্ষ সেটা অনুমোদনও করেছিল অথবা আপনি হয়তো প্রিয়জনের কাছ থেকে একটি চিঠির জন্যে অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু সেসবের জবাব আপনি কখনো পাননি।

হ্যাঁ, এ রকম সম্ভব আপনি যদি ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের ওধাঙ্গা গ্রামের অধিবাসী হন। হতে পারে আপনার কাছে চিঠি ঠিকই এসেছিল, কিন্তু সেটা আর আপনার হাতে এসে পৌঁছায়নি। অথবা এমনও হতে পারে আপনি যে চিঠিখানা পাঠিয়েছিলেন সেটাই হয়তো কখনো প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়নি।

সেখানে এ রকমই এক ঘটনার কথা জানা গেছে। চিঠি লেখা হয়েছে, পোস্টও করা হয়েছে, কিন্তু সেটা কখনো বিলি করা হয়নি। শুধু একটা চিঠির ওপর জমা হয়েছে আরও একটা চিঠি।

ওই রাজ্যে ডাক বিভাগের একজন কর্মী ১০ বছর ধরে হাজার হাজার চিঠি প্রাপকের কাছে বিলি না করে সেগুলো ফেলে রাখার কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই ঘটনার কথা জানা যায় এক দল স্কুল শিশু যখন ডাক বিভাগের পরিত্যক্ত একটি ভবনে খেলা করছিল তখন। পোস্ট অফিসের ওই শাখাটি নতুন একটি জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার পর ভবনটি খালি পড়েছিল।

তার উঠোনে খেলা করতে গিয়ে শিশুরা দেখতে পায় যে ভবনের ভেতরে কয়েকটি বস্তা এবং সেসব বস্তা থেকে পুরনো চিঠি বেরিয়ে আসছে।

তার পর তারা কৌতূহলি হয়ে উঠে। বস্তাগুলো খুলে ভেতরে খুঁজে পায় এটিএম কার্ড, ব্যাংকের পাসবই ইত্যাদি ইত্যাদি।

তখন তারা তাদের পিতামাতাকে গিয়ে চিঠিগুলোর কথা জানায়। তারপর অভিভাবকরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাজির হয়।

ভারতে হিন্দুস্তান টাইমস সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুসারে সেখানে ছিল ৬ হাজারের মতো চিঠি। তার কোনোটি আবার ২০০৪ সালের পুরনো।

দেখা গেছে, অনেক চিঠির লেখা মুছে গেছে, এতটাই বিবর্ণ হয়ে গেছে যে, লেখা পড়া যাচ্ছে না, কিংকা কোনো কোনো চিঠি খেয়ে ফেলেছে পোকায়। তার মধ্য থেকে দেড় হাজারের মতো চিঠি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

ডাক বিভাগের ওই কর্মীর নাম জগন্নাথ পাঠান। তিনি ছিলেন ওই শাখার সহকারী পোস্টমাস্টার। গত এক দশক ধরে তিনি ওই গ্রামে একাই কাজ করে গেছেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, এসব চিঠি বিলি করার ব্যাপারে তিনি অলস হলেও বেশ চালাক ছিলেন।

রেজিস্টার্ড চিঠিগুলো তিনি ঠিকই বিলি করেছেন, কারণ তিনি জানতেন প্রেরক এ চিঠি ট্র্যাক করবেন।

তবে সাধারণ চিঠিগুলোর শেষ ঠিকানা ছিল ওই অফিসের গুদাম ঘর।

তিনি কেন এসব বিলি করেননি সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ডাক বিভাগের ওই কর্মী আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, গত কয়েক বছর ধরে তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারছিলেন না। আর এ কারণে তিনি এসব চিঠি বিলি করতে পারেননি।

তবে এত বছরেও চিঠির কোনো প্রেরক বা প্রাপক কেন অভিযোগ করেননি, সেটা কর্তৃপক্ষকে বিস্মিত করেছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এখন যেসব চিঠির মর্ম উদ্ধার করা যাবে সেগুলো প্রাপকের কাছে সরবরাহ করা হবে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘একটি চিঠি আছে ২০১১ সালের। স্থানীয় এক ছেলে ভারতীয় নৌবাহিনীতে আবেদন করলে তারা তার জবাব দিয়েছিল।’

তবে এটাও ঠিক যে বেশিরভাগ চিঠিই আর প্রকৃত ঠিকানায় পৌঁছাবে না। কারণ খামের ওপর যেসব নাম ও ঠিকানা লেখা ছিল সেগুলো মুছে গেছে।
খবর বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ