আজকের শিরোনাম :

বুদ্ধিমান বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ হয় দেরিতে!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৪৫

এই পৃথিবীতে মানুষের মতো উন্নত মস্তিষ্ক আর কোনো প্রাণি পাওয়া যায় না। এরা অন্যান্য এপদের চেয়ে অধিকতর চালাক ও বুদ্ধিমান। সাধারণত আঁকড়ে ধরার উপযোগী হাত রয়েছে এমন প্রাণিদের এপ বলা হয়। যেমন – শিম্পাঞ্জী, উল্লুক, বানর, গরিলা ইত্যাদি।

এপদের সাথে অনেক বিষয়ে সাদৃশ্য থাকলেও মানুষের মস্তিষ্ক উন্নত ও কিভাবে এরা বেশি বুদ্ধিমান হলো তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতুহলের শেষ নেই। সম্প্রতি ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণার ফল থেকে এই কৌতুহল হয়তো অনেকটাই মিটে যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন মায়ের পেটে থাকাকালীন অর্থাৎ ভ্রুণাবস্থায় অন্যান্য এপদের তুলনায় মানুষের মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে গঠিত হওয়ার ফলেই এত উন্নত হয়েছে। তাই এরা হয়েছে চালাক-চতুর ও বুদ্ধিমান। নিমিষেই পরাজিত করছে অন্যান্য প্রাণিদের ।

বিজ্ঞানীরা স্টেম সেল নিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় স্নায়ুতন্ত্রের কোষে পরিণত করেন। এই কোষের গঠন একটি মটর দানার মত হয় যাকে ওরগানয়েড (Organoid) বলা হয়। এটিকে ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের প্রতিলিপি বলা হয়। ক্ষুদ্র এই মস্তিষ্কের প্রতিলিপি অনেকটা আসল স্নায়ুকোষের মত কাজ করতে পারে। যেমন – চিন্তা-ভাবনা, অনুভব, স্মৃতিধারণ ইত্যাদি কাজ করে।

মানুষের মস্তিষ্ক অন্যান্য প্রাইমেট তথা স্তন্যপায়ী প্রাণিদের চেয়ে আকারে অনেক বড়। এছাড়া গঠনেও বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। মানুষের মস্তিষ্ক খাঁজযুক্ত হলেও শিম্পাঞ্জীর মস্তিষ্ক খাঁজযুক্ত নয়।

জার্মানির লেইপজিগে অবস্থিত ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের নৃতত্ববিদ গ্রে ক্যাম্প ও তার সহকর্মীরা মানুষ, শিম্পাঞ্জী এবং ম্যাকাকিউ বানরের স্টেম সেল নিয়ে এক ধরনের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক তৈরি করেন। ৪ মাস পর্যবেক্ষণের পর তারা মূল পার্থক্য খুঁজে পান। তারা দেখেন শিম্পাঞ্জী ও বানরের ওরগানয়েডের গঠন পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে।

আর মানুষের মস্তিষ্ক কেন এত উন্নত তার উত্তর খোঁজার জন্য এই পার্থক্য গবেষকদের একটি সু্ন্দর পথ দেখিয়েছে। তবে এটি পুরোপুরি এই প্রশ্নের জল্পনা দূর করেছে বলে গবেষকরা এখনো মনে করছেন না।

ক্যাম্প ও তার সহকর্মীরা জানান, মানব মস্তিষ্কের প্রোটিন-কোডিং জিন যেগুলো অন্যান্য এপদের চেয়ে চালাক-চতুর করে সেগুলো দেরিতে ও বিভিন্ন সময়ে গঠিত হয়। ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক তৈরি করে ক্যাম্প চার মাসে মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষের গঠনের তুলনামূলক উপাদান সংগ্রহ করেন। এই উপাদানগুলো পরবর্তীকালের গবেষকদের গবেষণাকে সহজতর করবে।

লক্ষ্য করলে দেখবেন, বাচ্চা দেরিতে কথা বললে কিংবা হাঁটলে আমাদের সমাজের অনেকেই তিরষ্কারমূলক কথাবার্তা ও কানাঘুষা শুরু করে। দেরিতে কথাবলা কিংবা হাঁটার কারণ মস্তিষ্কের গঠন ধীর গতিতে হওয়া। সুতরাং গবেষণা থেকে এটাও জানা গেল যে, ঐসকল বাচ্চারাই বেশি বুদ্ধিমান যাদের মস্তিষ্ক দেরিতে গঠিত হচ্ছে। সুতরাং না জেনে কানাঘুষা বন্ধ করা জরুরী নয় কী?

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ