আজকের শিরোনাম :

হতাশা আর কষ্ট থেকে চলে এসেছি : আবুল বাজানদার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০১৮, ১৪:১৯ | আপডেট : ২৯ মে ২০১৮, ১৪:২৩

ঢাকা, ২৯ মে, এবিনিউজ : দেশে বহুল আলোচিত ‘বৃক্ষমানব’ বলে পরিচিত আবুল বাজানদার বলেছেন ঢাকা মেডিকেলে তার চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছিল না বলে তিনি সেখান থেকে চলে এসেছেন।

এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় আবুল বাজানদার হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন।

আজ মঙ্গলবার আবুল বাজানদার জানান, তিনি এখন খুলনার পাইকগাছায় নিজ বাড়িতে রয়েছেন। মূলত দুটি কারণে হাসপাতালটি ছেড়ে চলে এসেছেন তিনি।

এক. সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তবে তার উন্নত চিকিৎসার প্রবল ইচ্ছা রয়েছে। তিনি মনে করেন সঠিক চিকিৎসা হলে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন।

কেন তার মনে হয়েছে ঢাকা মেডিকেলে তার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল বাজানদার বলেছেন, সেখানকার ডাক্তাররা আমাকে বলেছেন এটা জেনেটিক সমস্যা, এটা তোমার সারা জীবন থাকবে। এটা সারবে না। এ ছাড়া প্রথম দিকে যতটা যতœ নিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে, পরের এক বছর সেটা করা হয় নি।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলছিলেন, সেখানকার নার্স এবং যারা কাজ করে তারা মুখে না বললেও তাদের মধ্যে একটা বিরক্তি এসে গেছে আমার প্রতি। আগে আমাকে দুবেলা খাবার দিত। এখন আমাকে একবেলা খাবার দেয়। এ ছাড়া আমি কিছু বললে আমাকে পুলিশের ভয় দেখায়।

তিনি বলেন, ‘এক রকম হতাশা এবং কষ্ট থেকেই আমি চলে এসেছি।’

আবুল বাজানদার গত ১০ বছর ধরে হাত-পায়ে শিকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছিলেন। গত দুই বছরে তার ওপর মোট ২৫ দফা অস্ত্রোপচার চালানো হয়েছে। এখন তার হাতের কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু স্থানে আধা ইঞ্চির মতো করে আবারও বেড়েছে। আগে চামচ দিয়ে খেতে পারতাম কিন্তু এখন সেটা করতে অসুবিধা হচ্ছে।’

আবুল বাজানদার প্রশ্ন করা হয়েছিল হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর বা আনুষ্ঠানিকতা থাকে সেগুলো করে এসেছেন কি না? তিনি বলেন, না, আমি করিনি। কারণ সেই কাগজে লেখা ছিল আমি স্বেচ্ছায় যাচ্ছি এবং আমি আর চিকিৎসা করব না। কিন্তু আমি তো চিকিৎসা চাই কিন্তু ওই হাসপাতালে না। ওই কাগজে স্বাক্ষর করলে আমি তো আর চিকিৎসার দাবি করতে পারব না।

এ ছাড়া হাসপাতালে তার চিকিসার গাফিলতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে এর আগে হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, কে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে, বা কে তাকে খাওয়া দিচ্ছে না, এ ব্যাপারটা সে আমাকে জানাতে পারত।

ডা. সেন বলেন, ‘আমি দেখতাম কোন ডাক্তার বা নার্সের জন্য দায়ী। কিন্তু সে কাউকে কিছু না জানিয়ে যে এভাবে চলে যাবে, তা মোটেই আশা করিনি।

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসার জন্য ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে করার নির্দেশ দেন। তার সব অপারেশন বিনামূল্যে করা হয়।
খবর বিবিসি বাংলা

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ