প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে হাঙ্গেরি যাচ্ছে রাবেয়া-রোকাইয়া
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯, ২৩:৩৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় চিকিৎসার জন্য রাতে হাঙ্গেরি যাচ্ছে জোড়া মাথা নিয়ে পাবনায় জন্ম নেওয়া জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়া।
শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম শিশু রাবেয়া ও রোকাইয়ার মা-বাবার হাতে স্বপরিবারে হাঙ্গেরি যাওয়ার প্লেনের টিকেট তুলে দেন।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাচ্চাদের জন্য দোয়া করি। তাদের বিরল অপারেশন হতে যাচ্ছে। তারা যেন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। আশা করি, হাঙ্গেরি থেকে দেশে আসার পরে তাদের মাথা বিচ্ছিন্ন করাও সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা ও আর্থিক অনুদানে তাদের বিদেশ পাঠানো হচ্ছে। এর সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির যৌথ উদ্যোগে রাবেয়া-রোকাইয়ার চিকিৎসা হবে। সেখানে হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বাংলাদেশের পাঁচটি দলের ২০ সদস্য কাজ করবেন।
তিনি বলেন, রাবেয়া-রোকাইয়া যখন ভর্তি হয় বাংলাদেশে জার্মানি ও হাঙ্গেরির প্রতিনিধি দল ছিল। তখন থেকেই ওদের চিকিৎসার কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় সাংসদের মাধ্যমে শিশু দুটির অবস্থা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছানো হয়। তিনি শিশু দুটির চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ওদের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
দুই বছর সাত মাস বয়সী এ শিশু দুটির বাংলাদেশে এর আগে মস্তিষ্কের রক্তনালিতে দুবার অস্ত্রোপচার করা হয়। হাঙ্গেরি থেকে ফেরার পর দেশে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ওদের মূল অস্ত্রোপচার হবে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানান, দীর্ঘদিন শিশু দু’টিকে বার্ন ইউনিটে প্লাস্টিক ও নিউরো সার্জন দ্বারা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেই তাদের চিকিৎসার দুই ধাপ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপ সম্পন্ন করার জন্য তাদের হাঙ্গেরি পাঠানো হচ্ছে। সেখানে পাঁচটি বিশেষজ্ঞ টিম তাদের চিকিৎসা পরিচালনা করবে। আনুমানিক তিন-চার মাস তারা সেখানে চিকিৎসা নেবে।
তিনি বলেন, ইনজেকশনের মাধ্যমে তাদের মাথার খুলি ফুলিয়ে ভেতরে কিছুটা ফাঁকা করা হবে। পরে ফাইনাল অস্ত্রোপচার হবে বাংলাদেশে।
আবুল কালাম বলেন, তাদের পৃথক করার জন্য আমরা যে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি, এ ধরনের রোগীর সফলতা ২০ শতাংশেরও কম। তবুও আমরা আশাবাদী। এখন থেকে আনুমানিক ছয় মাস পর ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তাদের মাথা পৃথক করার কাজ করা হবে। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে বলে জানান তিনি।
হাঙ্গেরিতে রাবেয়া-রোকাইয়াকে তিন থেকে চার মাস থাকতে হতে পারে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে ‘ফর বাংলাদেশ’ নামে হাঙ্গেরিভিত্তিক একটি বাংলাদেশি সংগঠন শিশু দুটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে।
রাবেয়া-রোকাইয়াসহ ছয়জন আজ রাতে হাঙ্গেরির উদ্দেশে রওনা হবেন। সঙ্গে যাবেন বার্ন ইউনিটের ওদের চিকিৎসক হোসাইন ইমাম।
এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
এই বিভাগের আরো সংবাদ