আজকের শিরোনাম :

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক : একটি পর্যবেক্ষণ

  হারুন হাবীব

১০ মার্চ ২০২০, ১০:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অনেকেরই আসার কথা ছিল; কিন্তু প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তারে কর্মসূচির সার্বিক পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। খবর হচ্ছে, ভয়ংকর ভাইরাসটির বিস্তারে বিশ্বের বহু দেশ এরই মধ্যে যাতায়াত নিষিদ্ধ করেছে, বহু রাষ্ট্রপতি, সরকারপ্রধানেরও নির্ধারিত সফর বাতিল হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ঢাকায় ১৭ মার্চের ব্যাপক সমাবেশটিও বাতিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে অনুষ্ঠানসূচি সংক্ষিপ্ত এবং বড় সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত সময়োচিত বলে মনে করি।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রজনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন আমাদের জন্য ইতিহাসের আশীর্বাদ। ১৯৭১ সাল এবং পরবর্তীকালের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের গণমানুষের কাছে অসীম আবেদন রাখেন। ভারত বঙ্গবন্ধুকে একজন বিশ্বনন্দিত নেতা এবং বাংলাদেশ ও উপমহাদেশের মুক্তির প্রতীক বলে মনে করে। মোট কথা, বঙ্গবন্ধু ভারতেও সমান সম্মান-শ্রদ্ধার পাত্র। সে কারণে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে যৌথ প্রযোজনায় বিশেষ চলচ্চিত্র নির্মাণসহ জন্মশতবর্ষের নানা আয়োজনে অংশীদার হয়েছে।

এরই মধ্যে ভারতের নতুন পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার প্রথম বিদেশ সফরটি ঘটেছে বাংলাদেশে, যে দেশে তিনি হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত হিসেবে। বলা যায়, পররাষ্ট্রসচিব নিযুক্ত হওয়ার পর তাঁর প্রথম ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গুরুত্ব নির্ণয় করা যায়।

সংগত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে ঢাকা গুরুত্ব বহন করে নয়াদিল্লির কাছে। সে কারণে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ও পেশাদার কূটনীতিকরাই ঢাকায় নিয়োগ পেয়ে থাকেন। বর্তমান ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক। শুধু বাংলাভাষী বলে নয়, বাংলাদেশকে তিনি চেনেন এবং বোঝেন। একসময় তিনি ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের সংস্কৃতি বিভাগেরও প্রধান ছিলেন। অন্যদিকে শ্রিংলা একজন দক্ষ কূটনীতিক, যিনি এ দেশে তিন বছর কাটিয়েছেন। অতএব, দুই দেশের সম্পর্কের খুঁটিনাটি সম্পর্কে তাঁদের সম্যক উপলব্ধি আছে।

শ্রিংলার আগমন উপলক্ষে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। সেমিনারটি আমার কাছে আগ্রহের সৃষ্টি করে। কারণ এতে ভারতের নতুন পররাষ্ট্রসচিব মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, যিনি আমার বিশেষ শ্রদ্ধাভাজন।

তবে বলা বাহুল্য, যে সময়ে ভারতের মতো দেশের শীর্ষ কূটনীতিকের দায়িত্ব শ্রিংলার ওপর বর্তেছে, সে সময়টা আগের চেয়ে ভিন্নমাত্রার। সে কারণেই হয়তো তাঁকে চ্যালেঞ্জ মেনে নিয়ে সামনে এগোতে হবে। এ চ্যালেঞ্জ শুধু তাঁর একার নয়, চ্যালেঞ্জটি বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের এবং সেই ভারতের, যার ঐতিহ্য বহুত্ববাদী সংস্কৃতির লালন। একটি কথা সংগত যে ভারতীয় ইতিহাসের ঐতিহ্য ধর্মীয় বিভাজনের নয়, সব সংস্কৃতি ও সব ধর্মের সম্মিলিত স্রোতধারার, যা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই জনপদকে মর্যাদাশীল রেখেছিল। সে ধারা যেন ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

ইতিহাসের শিক্ষা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ‘টু নেশন থিওরি’র ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে। ধর্মভিত্তিক এই তত্ত্ব শুধু পাকিস্তান রাষ্ট্রকেই টুকরা করেনি, প্রবল রক্তপাতের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশটিকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রেও পরিণত করেছে। কারণ জনজীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়া সত্ত্বেও ধর্ম কখনো কোনো আধুনিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। কারণ আধুনিক রাষ্ট্রকে হতে হবে মনুষ্যবাদী, তত্ত্ব বা ধর্মবাদী নয়।

বিদ্যমান করোনাভাইরাস শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেও বিস্তার করায় জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে আতঙ্কের চেয়েও যা বড়, তা হচ্ছে এর প্রতিরোধে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি ১৭ মার্চের বৃহৎ সমাবেশটি বাতিল করেছে। বড় ধরনের লোকসমাগম না ঘটিয়ে মহান উপলক্ষটি যেন সার্থক ও কার্যকরভাবে পালন করা যায়, সেদিকেই দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষ করে দিল্লির দাঙ্গা পরিস্থিতির প্রতিবাদে কিছু মহল থেকে সরব প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। ধর্মীয় উগ্রবাদীরা স্বাভাবিক কারণেই মিছিল-মিটিং করছে। বাম ও ডান ধারার অনেকে মোদির সফরের সমালোচনা করে বিবৃতিও দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানানোরও আহ্বান জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানসূচির পরিবর্তন ঘটায় আপাতত সে আলোচনা না করলেও চলে। তবে গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনার দাবি রাখে বৈকি।

ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত অভিন্ন এবং এতটাই দীর্ঘ যে এ কথা কখনোই অস্বীকার করা যাবে না, দুই দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনাপ্রবাহ কখনো কখনো কারণে কিংবা অকারণে দুই দেশেই আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করবে। তবে এই প্রতিক্রিয়াগুলো যেন বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বা ধর্মীয় জিগির তোলা রাজনীতিবিদরা পুঁজি করতে না পারেন, সেদিকে দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন।

ভারতে যা ঘটেছে বা ঘটছে, তার বিরুদ্ধে সে দেশের বেশির ভাগ অসাম্প্রদায়িক মানুষ এবং গণমাধ্যম উল্লেখযোগ্যভাবে সরব। কারণ কোনো বিবেকবান মানুষ দাঙ্গাকারীদের সমর্থন দিতে পারে না। এটিই ভারতীয় গণতন্ত্রের গুরুত্ব। তবে বলতেই হবে, দাঙ্গার ঘটনা দুঃখজনক এবং দেশটির গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের পরিপন্থী। এটি স্বাভাবিক যে নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ভারতের নির্বাচিত সরকারপ্রধান হিসেবে, কোনো দলের প্রতিনিধি হিসেবে নয়। তিনি সেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী, যে ভারত আমাদের প্রতিবেশী, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ১৯৭১ সালের সেই রক্তাক্ত অধ্যায়ে, যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় অনুচররা নির্বিচারে বাঙালি গণহত্যা ও নারী নির্যাতনে মেতে উঠেছিল তখন ভারতের সরকার ও জনগণই এই বিপন্ন মানুষের পাশে বন্ধুর বেশে দাঁড়িয়েছিল। তারা এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক শক্তিকে পূর্ণ সমর্থন জুগিয়েছিল এবং মুক্তিবাহিনীর জন্য সর্বাত্মক সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছিল। এমনকি ভারতের সেনাবাহিনী একপর্যায়ে এসে মিত্রবাহিনীর ভূমিকা পালন করেছে। সে কারণে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে ভারতের ভূমিকা ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

আমার মনে পড়ে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাত্র দেড়-দুই বছরের মাথায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকা সফর করেছিলেন আমন্ত্রিত হয়ে। যে পাকিস্তান বাংলাদেশের জাতির পিতাকে ৯ মাস কারারুদ্ধ করে রেখেছিল, ‘দেশদ্রোহী’ হিসেবে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানোর সব উদ্যোগ পর্যন্ত সম্পন্ন করেছিল, যে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছিল, সেই পাকিস্তানেও সফর করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অবশ্য বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি জানানোর পরই শুধু তিনি পাকিস্তানে যান। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সফর করেন ১৯৭৪ সালের ২২-২৪ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে এবং ভুট্টো বাংলাদেশে আসেন একই বছরের ২৭ জুন।

আমার আরো মনে পড়ে, ভুট্টো বাংলাদেশে এলে প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকে যেতে হয় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। কূটনৈতিক সৌজন্য প্রদর্শনের পরও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সম্পদের হিসসার দাবি জানানো হয়। বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে সেদিনকার রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহ নিজেও এসব দাবি উত্থাপন করেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থাগুলো মেনে চলাই সংগত রীতি।

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। অতএব, সেই সম্পর্কের স্বরূপ ও সম্ভাবনা নিয়ে বহুভাবেই আলোচনা চলতে থাকবে। কারণ অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যত টানাপড়েনই আসুক না কেন, দুই দেশ ঘনিষ্ঠতম প্রতিবেশী—ভূখণ্ডগত, ইতিহাস ও সংস্কৃতিগতভাবেই। বিশেষ করে, ২০১০ সাল থেকে দেশ দুটি, বলা যায়, দীর্ঘকালীন ‘কলোনিয়াল লিগ্যাসি’র পরিবর্তন ঘটিয়ে যেভাবে একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রায় সব বিষয়ে একসঙ্গে চলার নীতি গ্রহণ করেছে, তাতে আঞ্চলিক সমঝোতার একটি নতুন বাতাবরণ বা দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে, যা অভিনন্দনযোগ্য। কোনো উত্তেজনা বা বালখিল্যতায় সেই ধারাকে নষ্ট হতে দেওয়া সমীচীন হবে না।

আরো একটি বিষয় আছে। রাজনীতি বা কূটনীতিতে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি দুই ব্যবস্থাই মেনে চলতে হয়। কিছু বিষয় আছে, যা স্বল্পমেয়াদি—যা সম্পন্ন না হলে সংকট বাড়ে। আবার তড়িঘড়ি করে স্বল্পমেয়াদি প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সুরাহার পথে কাঁটা বিছানো হয়। বিষয়টি উত্তেজনা সৃষ্টিকারীরা না বুঝলেও রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকরা বিলক্ষণ বোঝেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবশ্যই কিছু অমীমাংসিত বিষয় আছে, যার সমাধান কাম্য। এর একটি তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার কথায় নতুন করে আশ্বাস পাওয়া গেছে, অভিন্ন নদীগুলোর তথ্য হালনাগাদ করে তা সমন্বয়ের চেষ্টা অগ্রগতি লাভ করেছে এবং সম্ভবত চলতি বছরের মধ্যেই পানিবণ্টনের পথে আরো অগ্রসর হওয়া যাবে।

নদীর পানিবণ্টনের ওপর জোর দিতে হবে দুই দেশের স্বার্থেই এবং সে সহযোগিতা হতে হবে পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং ন্যায্য বণ্টনের।

সীমান্ত হত্যা সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত বিষয়। শ্রিংলা নিজেও স্বীকার করেছেন, এই হত্যা কাম্য নয়। কাজেই দুই দেশের সীমান্তে যেন এমন ব্যবস্থা কার্যকর হয়, যাতে অপরাধীদের দমন করা যায়, তবে তা সরাসরি গুলি করে নয়। এ ব্যাপারে ভারতেরও অঙ্গীকার আছে। অস্বীকার করা যাবে না, ভারত থেকে চোরাই পথে গরু আমদানির যে অবৈধ বাণিজ্য চলে, তার সঙ্গে দুই দেশেরই অসাধু ব্যবসায়ীরা যুক্ত, যা বন্ধ করা দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের দায়িত্ব। কিছু অপরাধী আবার ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করে-এমন খবরও ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কাজেই পদক্ষেপ নিতে হবে সুচিন্তিতভাবে। সরাসরি গুলি করে হত্যার বিষয়টি যে উত্তেজনার সৃষ্টি করবে, এতে সন্দেহ নেই।

মিয়ানমারের ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ এক বিশাল মানবিক দায়িত্ব পালন করে চলেছে, ভারত সরকার যার প্রশংসা করেছে। বাংলাদেশ আশা করে, যত দ্রুত সম্ভব এই হতভাগ্য মানুষগুলো যেন পূর্ণ অধিকার ও নিরাপত্তাসহ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, সে লক্ষ্যে ভারত পূর্ণ সহযোগিতা করবে। কারণ মিয়ানমার ও বাংলাদেশ দুই দেশই ভারতের মিত্র। মনে রাখতে হবে, এই প্রত্যাবাসন যেন ‘নিরাপদ ও টেকসই’ হয়।

নাগরিকত্ব আইন বা এনআরসি নিঃসন্দেহে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, যদিও দেশের সীমান্ত পেরিয়ে বিষয়টি এরই মধ্যে বিশ্বের নানা প্রান্তে আলোচনা-সমালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শ্রিংলা যথার্থই বলেছেন, আসামের এনআরসি ভারত সরকারের নয়, দেশটির শীর্ষ আদালতের বিষয় এবং এটিও স্পষ্ট করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি বারবার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের জনগণের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আশা করি, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক শুধু অটুট নয়, গণমানুষের কল্যাণে উত্তরোত্তর গভীর হবে।

লেখক : মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট

এই বিভাগের আরো সংবাদ