দিল্লির দাদা ও পশ্চিমবঙ্গের দিদি যেন একই নৌকার দুই মাঝি
সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত
১০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৩০ | আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
পাঁচ বছর আগে মোদি শুরু করেছিলেন ‘আচ্ছে দিন’ দিয়ে। পাঁচ বছরে তিনি দেশের জনসাধারণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কী কী করেছেন তা একবার দেখা যাক প্রথমেই শুরু করলেন গো-রক্ষা দিয়ে। যার পরিণামে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে খুন করা হলো। তার দ্বিতীয় বড় কাজ হলো ভারতের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ দুর্নীতি। ফ্রান্সের রাফেল বিমান কেনার ব্যাপারে তার বৃহত্তম দুর্নীতি সবাই জানে। তার বন্ধু অনিল আম্বানিকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়া, নীরব মোদি-সহ অনেক গুজরাটি ব্যবসায়ীকে ব্যাংক লুট করতে সাহায্য করা, সরকারি ব্যাংক থেকে ৩ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা গুজরাটি ব্যবসায়ীদের মানা করে দেওয়া, গেরুয়া সরকারের এসব নীতি গত পাঁচ বছর ধরে ভারতবাসী দেখেছে; প্রতিবাদ করেছে। কথায় বলে চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি।
২০১৪ সালের ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবার দিন তিনি আর একটি শপথ নিয়েছিলেন, তা হলো ভারতের ইতিহাস থেকে নেহেরু গান্ধী পরিবারের নাম মুছে দেওয়া। তিনি প্রত্যেকটি নির্বাচনী জনসভায় ‘ভাইয়ো-বহিনো’ সম্বোধন করার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে নেহেরু গান্ধী পরিবারতন্ত্রকে আক্রমণ করছে, যার কোনো মাথামুণ্ডুই কেউ বুঝতে পারছে না। তার এত জ্ঞান, যা দেখে ভারতবাসী মনে করেন এই মানুষটি ভারতের সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞানহীন। তিনি পাটনায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন যে আলেকজান্ডার পাটনায় এসেছিলেন এবং যুদ্ধ করেছিলেন। আলেকজান্ডার কবে পাটনায় গেলেন আর কার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন তার কোনো তথ্য ভারতের ইতিহাসে নেই, এ-রকম ধরনের নানা বক্তব্য তিনি রাখছেন, যার কোনো অর্থ নেই এবং ঐতিহাসিক তথ্য নেই।
পাঁচ বছরে তার বিদেশনীতির বিস্তারিত তথ্য দিয়ে ঐতিহাসিক দলিল লিখতে চাই না, তবে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তিনি ঢাকা সফরে গিয়ে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হাসিনা ও মোদির ক্ষমতার সময়ের মধ্যে তিনি তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করবেন। হাসিনা নির্বাচনী জয়লাভে আবার বাংলাদেশের প্রধনমন্ত্রী হয়েছেন; কিন্তু মোদি তো বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী, তিনি প্রতিবেশী দেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখতে পারলেন না।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সফরে এসে একাধিকবার বললেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি করেছেন, এটাও সম্পূর্ণ অসত্য কথা। এ-ব্যাপারে ইতিহাস কী বলে একবার দেখা যাক। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে দিল্লিতে প্রাথমিক চুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। ভারতের সংসদে তা পাস করানো হয়নি। জরুরি অবস্থাসহ নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য তা হয়ে ওঠেনি, আর বাংলাদেশেও মুজিব হত্যার পর দীর্ঘদিন সামরিক শাসন জারি থাকার ফলে এই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই উত্তরবঙ্গে এসে নির্বাচনী ফায়দা নিয়ে এই চুক্তির কথা বলছেন। সঙ্গে সঙ্গে মমতা বলছেন এই চুক্তি তিনি করেছেন। মমতা ভুলে গেছেন তিনি একজন অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
তাই উত্তরবঙ্গে আসন পাবার জন্য দাদা-দিদি লোক দেখানো প্রতিবন্ধকতা শুরু করে দিয়েছেন। তাই উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দেন কংগ্রেস তিস্তা চুক্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই মমতা মোদি যাই বলুন না কেন মোদির দল বিজেপি তখন রাজ্যসভায় বাধা দিয়েছিল তিস্তা চুক্তি রূপায়ণে। আর মমতার দল তখন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বলেছিলেন যে হাসিনাকে জেতানোর জন্য আমরা তিস্তা চুক্তি রূপায়ণ করতে দেব না। সোমেনবাবু জোরের সঙ্গে বলেন, কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় আসে, তবে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তিসহ সব বকেয়া চুক্তি সম্পাদন আমরা করব। নির্বাচনের আগে মানুষকে বেপথে পরিচালিত করার জন্য দিল্লির দাদা ও পশ্চিমবঙ্গের দিদি যেন একই নৌকার দুই মাঝি।
নির্বাচনের আগে জাত-পাত নিয়ে মোদি ও তার গেরুয়া বাহিনীর লম্ফঝম্ফ আকাশসীমায় পৌঁছে গেছে। মোদির হিন্দুত্ববাদ আর মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না মনে করে তাকে ভোট না দেবার জন্য বোম্বের চলচ্চিত্র শিল্পের ৫০০ জন প্রযোজক ও পরিচালক কড়া ভাষায় নিন্দা করে মোদি ও বিজেপি’কে ভোট না দেবার জন্য আবেদন করেছেন। তারা বলেছেন, তাদের আবেদনে যে মোদিকে ফিরিয়ে আনা মানে ভারতবর্ষকে খণ্ড ও ছিন্ন করা, যা আমরা করতে দিতে পারি না। ভারতের ১৩০ কোটি লোকের মধ্যে ৩৩ কোটি হলো সংখ্যালঘু। মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি। এরা সকলেই গেরুয়া বাহিনীর শত্রু। নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী গেরুয়াধারী ভেক সন্ন্যাসী- যোগী-আদিত্য নামের একটি মন্তব্য দিয়ে ভারত এখন তোলপাড়। তিনি বলেছেন, ভারতের সেনারা মোদিজির সেনা। তার এই মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বর্তমান রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি কে সিং, যিনি দেশের ২৪তম সেনাধক্ষ্য ছিলেন, পাল্টা বিবৃতিতে বলেছেন, যারা দেশের ফৌজকে ‘মোদিজির সেনা’ বলে, তারা দেশদ্রোহী, প্রাক্তন ডজনখানেক সেনাকর্তা ভারতীয় সেনাকে এভাবে অপমান করার জন্য শুধু ক্ষুব্ধই হননি; তারা বলেছেন, এতে সেনাদের মনোবল ভেঙে যাবে। তার পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। কারণ দেশের সেনা কারও বা কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, তারা দেশমাতৃকার আত্ম-উৎসর্গ করে কর্মে নিয়োগ হয়েছে। সমস্ত বিরোধী দল এ-ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সব দলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, খবরদার সেনাদের নিয়ে আপনারা ছেলেমানুষি করবেন না। মোদি কালো টাকা উদ্ধারের জন্য অনেক নাটক করেছেন। এমন কি নোটবন্ধীও। গত এক মাসে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে ভোটের টাকা বিলি করার সময় দেশের আয়কর বিভাগ ১৫ হাজার কোটি কালো টাকা উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১৫০ কোটি টাকা। সুতরাং, টাকা দিয়ে ভোট কেনার ব্যাপারে দাদা-দিদি কেউ পিছিয়ে নেই।
লেখক : সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত, কলকাতা
২০১৪ সালের ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবার দিন তিনি আর একটি শপথ নিয়েছিলেন, তা হলো ভারতের ইতিহাস থেকে নেহেরু গান্ধী পরিবারের নাম মুছে দেওয়া। তিনি প্রত্যেকটি নির্বাচনী জনসভায় ‘ভাইয়ো-বহিনো’ সম্বোধন করার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে নেহেরু গান্ধী পরিবারতন্ত্রকে আক্রমণ করছে, যার কোনো মাথামুণ্ডুই কেউ বুঝতে পারছে না। তার এত জ্ঞান, যা দেখে ভারতবাসী মনে করেন এই মানুষটি ভারতের সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞানহীন। তিনি পাটনায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন যে আলেকজান্ডার পাটনায় এসেছিলেন এবং যুদ্ধ করেছিলেন। আলেকজান্ডার কবে পাটনায় গেলেন আর কার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন তার কোনো তথ্য ভারতের ইতিহাসে নেই, এ-রকম ধরনের নানা বক্তব্য তিনি রাখছেন, যার কোনো অর্থ নেই এবং ঐতিহাসিক তথ্য নেই।
পাঁচ বছরে তার বিদেশনীতির বিস্তারিত তথ্য দিয়ে ঐতিহাসিক দলিল লিখতে চাই না, তবে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তিনি ঢাকা সফরে গিয়ে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হাসিনা ও মোদির ক্ষমতার সময়ের মধ্যে তিনি তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করবেন। হাসিনা নির্বাচনী জয়লাভে আবার বাংলাদেশের প্রধনমন্ত্রী হয়েছেন; কিন্তু মোদি তো বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী, তিনি প্রতিবেশী দেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখতে পারলেন না।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সফরে এসে একাধিকবার বললেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি করেছেন, এটাও সম্পূর্ণ অসত্য কথা। এ-ব্যাপারে ইতিহাস কী বলে একবার দেখা যাক। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে দিল্লিতে প্রাথমিক চুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। ভারতের সংসদে তা পাস করানো হয়নি। জরুরি অবস্থাসহ নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য তা হয়ে ওঠেনি, আর বাংলাদেশেও মুজিব হত্যার পর দীর্ঘদিন সামরিক শাসন জারি থাকার ফলে এই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই উত্তরবঙ্গে এসে নির্বাচনী ফায়দা নিয়ে এই চুক্তির কথা বলছেন। সঙ্গে সঙ্গে মমতা বলছেন এই চুক্তি তিনি করেছেন। মমতা ভুলে গেছেন তিনি একজন অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
তাই উত্তরবঙ্গে আসন পাবার জন্য দাদা-দিদি লোক দেখানো প্রতিবন্ধকতা শুরু করে দিয়েছেন। তাই উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দেন কংগ্রেস তিস্তা চুক্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই মমতা মোদি যাই বলুন না কেন মোদির দল বিজেপি তখন রাজ্যসভায় বাধা দিয়েছিল তিস্তা চুক্তি রূপায়ণে। আর মমতার দল তখন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বলেছিলেন যে হাসিনাকে জেতানোর জন্য আমরা তিস্তা চুক্তি রূপায়ণ করতে দেব না। সোমেনবাবু জোরের সঙ্গে বলেন, কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় আসে, তবে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তিসহ সব বকেয়া চুক্তি সম্পাদন আমরা করব। নির্বাচনের আগে মানুষকে বেপথে পরিচালিত করার জন্য দিল্লির দাদা ও পশ্চিমবঙ্গের দিদি যেন একই নৌকার দুই মাঝি।
নির্বাচনের আগে জাত-পাত নিয়ে মোদি ও তার গেরুয়া বাহিনীর লম্ফঝম্ফ আকাশসীমায় পৌঁছে গেছে। মোদির হিন্দুত্ববাদ আর মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না মনে করে তাকে ভোট না দেবার জন্য বোম্বের চলচ্চিত্র শিল্পের ৫০০ জন প্রযোজক ও পরিচালক কড়া ভাষায় নিন্দা করে মোদি ও বিজেপি’কে ভোট না দেবার জন্য আবেদন করেছেন। তারা বলেছেন, তাদের আবেদনে যে মোদিকে ফিরিয়ে আনা মানে ভারতবর্ষকে খণ্ড ও ছিন্ন করা, যা আমরা করতে দিতে পারি না। ভারতের ১৩০ কোটি লোকের মধ্যে ৩৩ কোটি হলো সংখ্যালঘু। মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি। এরা সকলেই গেরুয়া বাহিনীর শত্রু। নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী গেরুয়াধারী ভেক সন্ন্যাসী- যোগী-আদিত্য নামের একটি মন্তব্য দিয়ে ভারত এখন তোলপাড়। তিনি বলেছেন, ভারতের সেনারা মোদিজির সেনা। তার এই মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বর্তমান রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি কে সিং, যিনি দেশের ২৪তম সেনাধক্ষ্য ছিলেন, পাল্টা বিবৃতিতে বলেছেন, যারা দেশের ফৌজকে ‘মোদিজির সেনা’ বলে, তারা দেশদ্রোহী, প্রাক্তন ডজনখানেক সেনাকর্তা ভারতীয় সেনাকে এভাবে অপমান করার জন্য শুধু ক্ষুব্ধই হননি; তারা বলেছেন, এতে সেনাদের মনোবল ভেঙে যাবে। তার পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। কারণ দেশের সেনা কারও বা কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, তারা দেশমাতৃকার আত্ম-উৎসর্গ করে কর্মে নিয়োগ হয়েছে। সমস্ত বিরোধী দল এ-ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সব দলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, খবরদার সেনাদের নিয়ে আপনারা ছেলেমানুষি করবেন না। মোদি কালো টাকা উদ্ধারের জন্য অনেক নাটক করেছেন। এমন কি নোটবন্ধীও। গত এক মাসে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে ভোটের টাকা বিলি করার সময় দেশের আয়কর বিভাগ ১৫ হাজার কোটি কালো টাকা উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১৫০ কোটি টাকা। সুতরাং, টাকা দিয়ে ভোট কেনার ব্যাপারে দাদা-দিদি কেউ পিছিয়ে নেই।
লেখক : সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত, কলকাতা
এই বিভাগের আরো সংবাদ