আজকের শিরোনাম :

ডিফারেন্স বিটুইন কনফ্লিক্ট অ্যান্ড কমপিটিশন

  ফজলুল হক

১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:৪০ | অনলাইন সংস্করণ

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রবীণতম দল। বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির তুলনায় আওয়ামী লীগের বয়স ও পরিপক্বতা অনেক বেশী। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্ম। আওয়ামী লীগের প্রসংগ এলে- হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কথা আসে। নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খানের কথা আসে। শহীদ সাহেব, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রধান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মাওলানা ভাসানী ও নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খান যথাক্রমে পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ এবং পশ্চিম পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রধান ছিলেন। ছাত্রলীগ- আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন হলেও, তার জন্ম আওয়ামী লীগের জন্মের দেড় বছর আগে এবং আওয়ামী লীগের সকল সাফল্যের পেছনে ছাত্রলীগের অবদান অপরিমেয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে আওয়ামী লীগের বিশাল ভূমিকা ছিল, যার পেছনে বড় সহায়ক শক্তি, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে মূল উদ্দীপক ভূমিকায় ছিল পুর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। পাকিস্তানের অত্যাচার নির্যাতনের, শোষণ বঞ্চনার যুগের কথা আমরা ভুলতে পারিনা। ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আয়ূব খান ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত তা কব্জা করে রাখে। ১৯৬৮ সালে আয়ূব খান পালন করে “Decade of Reform” উন্নয়ন ও পুনর্গঠনের দশক। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের জনগণকে কুক্ষিগত করে ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তা। সে দুঃসহ দিনে আওয়ামী লীগের পরিপুরক শক্তি ছিল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। ছয় দফাকে বলা হয়েছিল বাঙালির বাঁচার দাবি। তৎকালীন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা ছয় দফার পক্ষে ছিলেননা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একা হয়ে যান। এমনকি তৎকালীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে অনেকে ছয় দফা সমর্থন করেননি। একেবারে প্রথম দিকে মানিক মিয়া ইত্তেফাকে চট্টগ্রাম থেকে আমাদের (ছাত্রলীগের) পাঠানো নিউজ ছোট করে ছেপেছেন। পরে সিরাজ উদ্দিন হোসেন, মানিক মিয়া ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে কথা বলিয়ে দেন। অনেকে পিডিএম পন্থী আওয়ামী লীগে চলে যান। সালাম সাহেবের ভূমিকার কথা আপনারা জানেন। সালাম খান ৬ দফার বিরোধীতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা মামলা মাথায় নিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। তখন বঙ্গবন্ধুর পাশে শক্তভাবে দাঁড়িয়েছিল পুর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। আমরা কি করেছি? বঙ্গবন্ধু আগরতলা মামলায় জেলে। সেটা জেল নয়- পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্ট। টাকার অভাব। নেতার অভাব। কর্মীর অভাব। পাশে কেউ নেই। আমরা (ছাত্রলীগ) লালদিঘির মাঠকে নামকরণ করেছি “মুজিবপার্ক।” বাস কন্ডাক্টরদের বলেছি, তোমরা যাত্রী নামানোর সময় “মুজিবপার্ক” বলে ডাক দেবে। আমরা (ছাত্রলীগ) “মুজিব ফান্ড,” করেছি। মুজিবের ছবি দিয়ে কূপন ছাপিয়েছি (ছাত্রলীগ যা সম্ভব, সব করেছে)। ছাত্রলীগ ছয় দফার জন্য লড়াই করেছে। আওয়ামী লীগ আজ বিজয়ের তুঙ্গে, কিন্তু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মুষ্টিবদ্ধ হাতের সেদিনের সেই ইতিহাস নিউ জেনারেশনের কাছে আমরা ম্লানভাবে পেশ করতে পারছি। ১৯৫৪-৫৬ সালে “যুক্তফ্রন্ট” পাকিস্তানের রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসে। সে সময়কার পাকিস্তানের রাজনীতিতে শোষন মুক্তি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে, আওয়ামী লীগের বিশাল ভুমিকা ছিল। মুসলিম লীগের একচ্ছত্র পাকিস্তান প্রীতির প্রতি- ৪৮ সালে ছাত্রলীগের জন্ম এবং ৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্ম এক বিরাট চপেটাঘাত। আজ ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের সমালোচনা শুনি। সময় পাল্টে গেছে।
১৯৬৬ সালের পর আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ায়। দলটি পুর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসন দাবি করতে থাকে। অধ্যাপক ও বুদ্ধিজীবীগণ টু ইকনমির ধারণা সামনে নিয়ে আসে। স্বাধীকার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ এর বিকল্প ছিলনা। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। স্বাধীনতার রূপকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন করে। এই দল বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারনার জন্ম দেয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার উম্মেষ ঘটায়। গত দশ বছর দেশ শাসন করে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের বিপুল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হাসিল করে। সারা বিশ্বের নজর কাড়ে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ মানুষের প্রত্যাশা পুরণ করবে, এটাই আমরা আশা করি। এই সরকারকে হতে হবে লিডিং ইঞ্জিন, দক্ষ এবং ক্ষিপ্র- সরকার দেশকে ফুল স্পীডে সামনে টানবে।
ইতিহাস ঘাঁটলে আপনি দেখতে পাবেন গ্রেটার চট্টগ্রামে (মিরেরসরাই থেকে টেকনাফ পর্যন্ত) আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা ছিলেন এম এ আজিজ, তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আর একজন প্রধান নেতা ছিলেন, জহুর আহমদ চৌধুরী, তিনি সিটি আওয়ামী লীগের সভাপতি। তখন আওয়ামী লীগে কমপিটিশন ছিল- আজিজ গ্রুপ এবং জহুর গ্রুপ। তবে আজিজ ও জহুর মিয়া দুজনেই বঙ্গবন্ধুর ডান হাত ছিলেন। তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল ছিল। হান্নান ভাই, ওহাব মিয়া, ইসহাক মিয়া, ফজলুল হক বিএসসি, আবু ছালেহ, আবদুল্লাহ আল হারুন চৌধুরী, মোখতার, রুশ্নি, এস এম ইউসুফ, কালাম ভাই, আবু মোহাম্মদ হাসেম, ভিপি ইব্রাহীম, আরো অনেকে, ইনারা এম এ আজীজের প্রশংসা করতেন। ইদ্রিস আলম, মোসলেম, আয়ূব বাংগালী, সুলতান, কিবরিয়া, মহিউদ্দিন ভাই ইনারা সহ তখনকার বিশাল শ্রমিক বেল্ট, শ্রমিক নেতারা তখনকার আওয়ামী লীগ নেতারা জহুরদার সাথে ছিল। এম আর সিদ্দিকী, কাশেম মাষ্টার, ইনারা আজীজদার সাথে ছিলেন। কিন্তু তখনকার গ্রুপিং এত “হীনমন্যতায়” ভরা ছিলনা। কক্সবাজারে এম এ আজীজের ঘাটি ছিল, উনার শ্বশুর বাড়ি পেকুয়ায়, রাব্বান ভাই, নজরুল ভাই, জহিরুল ইসলাম, আফসার কামাল, ওসমান সরওয়ার ইনারা আজীজের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখতেন। আজ দেখুন আওয়ামী লীগের সৌন্দর্য্য- ১১ জানুয়ারি এম এ আজীজের মৃত্যু দিবসে জহুর আহমদ চৌধুরীর ছেলে মাহতাব ভাই আজীজের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলে। জহুর গ্রুপের ছাত্রনেতা হওয়া স্বত্বেও মহিউদ্দিন ভাই আজীবন ১১ জানুয়ারি আজীজের কবরের পাশে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকেছেন। ৭০ এর নির্বাচনে আজীজ তরুণ প্রগতিশীল ছেলেদের আওয়ামী লীগের নমিনেশন দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকে রাজী করিয়ে। সেদিনের তরুণ (যুবক) আবু ছালেহ, কায়সার ভাই, বাবু ভাই, মীর্জা মনসুর, বিএ সিদ্দিক, মোশাররফ ভাই, ইসহাক চাচা উনারা পরবর্তী আওয়ামী লীগের পিলার হয়েছেন। মান্নান ভাই জেলে ছিলেন। জেল থেকে বের হওয়ার পর তিনি জেলা ছাত্রলীগ ও সিটি ছাত্রলীগ উভয় পক্ষের সাথে সুসম্পর্ক রেখে উনার নিজস্ব ধারায় কাজ করছিলেন। মান্নান ভাইয়ের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হয় কমার্স কলেজের জিএস মতিনের মাধ্যমে। মতিন ছিল গায়ক। আমরা জেল গেটে উনাকে দেখতে যেতাম। মুরীদ ভাই, সিরাজুল ইসলাম, আশরাফ খান, প্রফেসর শায়েস্তা খান, ফেরদৌস আহমদ কোরেশী, সাবের আহমদ আসগরী উনারা প্রভাবশালী ছাত্র নেতা ছিলেন। তখন হীনমন্যতায় ভরা গ্রুপিং ছিলনা। অন্য রকম গ্রুপিং ছিল। ১২০ আন্দরকিল্লায় জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পেছনে, ১৩৩ আন্দরকিল্লায় ছিল ছাত্রলীগ অফিস। আমি তখন জেলা ছাত্রলীগ নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ১২০ আন্দরকিল্লার নীচে হাজারী গলির মুখে ছিল মায়াপুরী স্টুডিও এবং আবদুর রহিম আর্মস। এক পাশে শাম্মি হোটেল, একটু দুরে নোভেলটি রেষ্টুরেন্ট, সামনে বলাকা বোর্ডিং, এখন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অফিস যেখানে, সেখানে ছিল বুলবুল স্টোরের ইউসুফ মিয়ার ঘর। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আওয়ামী লীগ অফিস ১২০ আন্দরকিল্লার নীচে ছিল আহাদের বাবার দোকান- মেট্রো সুজ। বাঁশখালীর দানেশ আহমদ চৌধুরী এবং শাহ-ই-জাহান চৌধুরী (৭৩ সালের নির্বাচিত এমপি), ১২০ আন্দরকিল্লার স্ক্র সিঁড়ি দিয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে উপরে উঠছিলেন। উপরে সিড়ির গোড়ায় জুবলী কমার্শিয়াল কলেজ। আমি উনাদের পেছনে। মানে স্ক্র সিঁড়ির নীচের ধাপে। পেছন থেকে মান্নান ভাই এসে আমার হাত ধরলেন। বল্লেন, আস। টেনে আমাকে নামালেন। রিকসা ডাকলেন। রিকসা চালককে বল্লেন, রেষ্ট হাউস যাবে? রেষ্ট হাউসে নেমে রিকসা ওয়ালাকে ১ টাকা দিলেন। সে অবাক। তখন এক টাকা অনেক বেশী। চার, ছ আনা ভাড়া। ওদিকে নুর মোহাম্মদ রফিক আমাকে খুঁজতেছে। সে আজিজ মিয়ার পিএস। আর আজিজ মিয়া আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন- কক্সবাজার যাওয়ার জন্য। রেষ্ট হাউসে জহুর মিয়া একটা সাদা চাদরের উপর বসে রেলওয়ে ম্যানস স্টোর থেকে আনা কেক কাটছেন। হয়ত কোন অনুষ্ঠান ছিল। আমার হাত ধরে রেখেছেন মান্নান ভাই। জহুর মিয়া বল্লেন, ইতারে কডে পাইয়সদে? মহিউদ্দিন ও ইদ্রিস আলম আমার ব্যক্তিগত বন্ধু। তারা থাকায় আমি খুশী। মান্নান ভাই বল্লেন, অদা? ইতে ওয়ান টুয়ান্টিত অনরে লই কি কি কর। আসলে স্ক্র সিঁড়ি দিয়া আমি একা উঠতেছিলাম। দানেশ ভাই ও শাহজাহান ভাই আমার আগে, উনারা উনাদের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ করতে ছিলেন। উনারা দুজন আমার আগে উঠতেছিলেন। মান্নান ভাই সেটা বুঝতে পারেন নাই। মহিউদ্দিন বল্ল, মান্নান ভাই, হিতে আঁরার বন্ধু। জহুর মিয়া ক্ষেপে গিয়ে বল্লেন, ওডা বেশ কথা ন কইছ। হিতে কন জানছনি? হিতে আঁর ভাইপুত। হিতার চাচা আঁর তেল সেক্টরে ইউনিয়নর নেতা। আজিজর নাতি আঁরে গাইল দিবনা? উনি আমাকে টেনে উনার পাশে বসিয়ে গালে কেক উঠিয়ে দেন। বুঝতে পারছেন- আওয়ামী লীগের তৎকালীন গ্রুপিং কত মধুর ছিল? ওটা গ্রুপিং ছিলনা। কাজ পাগল নেতাদের মধ্যে কমপিটিশন ছিল। আমরা কেউ সিটি ছাত্রলীগ ছিলাম, কেউ ছিলাম ডিস্ট্রিক্ট ছাত্রলীগ। এখন দেখেন, আমাদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কত মধুর। মোসলেম আমাকে না দেখলে থাকতে পারেনা। আমি মহিউদ্দিনকে হারিয়ে ঘরে বসে গিয়েছি। মহিউদ্দিন ও বাবু ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা গ্রুপিং ছিল। এখন জাবেদ ও নওফেল ঐক্যবদ্ধ। তারা দুজনে এখন মন্ত্রী সভায়। নাসির- নওফেলকে জেতানোর জন্য কাজ করেছে। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হতে জানে- ইতিহাস তাই বলে। নওফেল- মহিউদ্দিনের ছেলে। জাবেদ বাবু ভাইয়ের ছেলে। সামনে তারা রাজনীতির চমক দেখাবে। এরা সবাই বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। সে যুগে রাজনৈতিক বিরোধীতা অন্য রকম ছিল। ১৯৭১ সালে ১১ জানুয়ারি এম এ আজীজের মৃত্যুর পর দেওয়ান বাজারে লাশের পাশে কাঁদতে কাঁদতে ফজলুল কাদের ছৌধুরী বলেছিলেন, ও আজীজ ভাই তুই গেলি গৈ দেনা?
আওয়ামী লীগের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। চমকে ভরা নতুন মন্ত্রীসভা দুর্নীতিমুক্ত থাকবে এবং সুশাসন দিতে পারবে বলে- আমি মনে করি। হাসান মাহমুদের বিষয়টি হলো, তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তখন খুব খারাপ সময় ছিল। আশির দশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের এক চ্ছত্র আধিপত্য ছিল। আমি তখন কলেজ শিক্ষকের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সদস্য ছিলাম। তখন শিবির ছাড়া অন্য সংগঠনের দাঁড়ানোর সূযোগ ছিলনা। সে সময়ে ছাত্রলীগের হাল ধরা সোজা ব্যাপার নয়। ৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগ পুরো প্যানেলে জয় পায়, এটা হাসান মাহমুদের কৃতিত্ব। তারপর হাসান বেলজিয়াম চলে যান। উচ্চ শিক্ষা নিলেও হাসান রাজনীতি ছাড়েননি। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মান বাড়বে। তিন প্রতিভাবান মন্ত্রী রাজনীতির নতুন ধারা তৈরি করবে। পুরোনো ধারা বদলে যাবে। তিন মন্ত্রী দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধি। নওফেল প্রাথমিক স্তর থেকে চট্টগ্রামের ভাল স্কুলে লেখাপড়া করেছে। তার বাবার দুঃসাহসিক রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তার সামনে ছিল। হাসান মাহমুদ আগে এক দফা মন্ত্রী ছিলেন। নওফেল দলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছে। মহিউদ্দিন ভাই তিনবার চট্টগ্রামের নন্দিত মেয়র। আজকের চট্টগ্রামের রূপকার মহিউদ্দিন। নওফেল লন্ডনে লেখাপড়া করেছেন। নীট এন্ড ক্লীন ইমেজ তার। সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সফল ভুমি প্রতিমন্ত্রী। তিনি দূর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে সফল হয়েছেন। জাবেদ লেখাপড়া করেছে বিদেশে। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জন্য বাবু ভাইয়ের অবদান বলে শেষ করা যাবেনা। মহিউদ্দিন ভাই এবং বাবু ভাইয়ের ছেলে মন্ত্রি সভায় স্থান পেয়েছে- এ দায়িত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামবাসীকে সম্মানিত করেছেন।
আমি যতদূর উপলব্ধি করতে পারছি, চমকে ভরা নতুন মন্ত্রি সভা গঠন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বার্তা দিয়েছেন যে এবার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। দুর্নীতিকে দমন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী সবাই হাইলি কোয়ালিফাইড। ১৯৪৯ থেকে অনেক সাফল্যের কাণ্ডারী আওয়ামী লীগ। মনে হচ্ছে এবার আওয়ামী লীগ উন্নয়নের পাশাপাশি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবে। দেশে সুশাসন আসবে। আওয়ামী লীগের ভেতরে পরিবর্তন আসবে। দলে গ্রুপিং থাকবে না। গ্রুপিং এবং কমপিটিশন এক কথা নয়। নতুন সরকারকে স্বাগতম। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কনফ্লিক্ট হ্যান্ডলিং করার যে ক্ষমতা সেটা প্রশংসনীয়। (দৈনিক আজাদী থেকে নেয়া)

লেখক : সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ

এই বিভাগের আরো সংবাদ