আজকের শিরোনাম :

বিএনপি-জামায়াত নাকি আপন মায়ের পেটের ভাই : তাহলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কী হয় জামায়াত?

  ড. মইনুল ইসলামের কলাম

১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

কলামের শিরোনামে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখেছি: তারেক রহমানের এই মন্তব্যকে মেনে নিলে বিএনপি’র মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে জামায়াত-শিবিরের পরমাত্মীয়তার সম্পর্কটি কী দাঁড়াচ্ছে? তারেক রহমান বেশ কয়েকবার মন্তব্য করেছেন যে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী ‘আপন মায়ের পেটের ভাই’। তাঁর এই মন্তব্য দেশের প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকাগুলোতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হেডলাইন হয়েছে প্রতিবারই। আমরাও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে প্রকৃত প্রস্তাবে বিএনপি-জামায়াত দুটো দলই পাকিস্তানের মতাদর্শে বিশ্বাসী খাঁটি পাকিস্তান-প্রেমী রাজনৈতিক দল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নারকীয় হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর নরঘাতকরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা জবরদখল করে খোন্দকার মোশতাকের অবৈধ সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর যে এজেন্ডা বাস্তবায়িত করেছিল তারই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রাণপণ প্রয়াস চলেছিল জিয়াউর রহমানের পাঁচ বছর সাত মাস তেইশ দিনের অবৈধ শাসনামলে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঐ রক্তলোলুপ সামরিক অভ্যুত্থান যে স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় গৌরব-গাথা ও অর্জনকে পরিত্যাগ করে এদেশে আবার ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে পরাজিত পাকিস্তান মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী ও নেজামে ইসলামকে এদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের স্বর্ণসুযোগ সৃষ্টি করেছিল এবং স্বাধীনতা-বিরোধী ব্যক্তিদেরকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিল সেটা বুঝতে এখন আর কারো অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। যদিও জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন তবুও পরবর্তীতে তাঁর শাসনামলে তাঁর পাকিস্তানি সত্তার বহিঃপ্রকাশ এত প্রকটভাবে ঘটেছে যে তাঁর পুরো শাসনামলেই বাংলাদেশে চরম দক্ষিণপন্থী পাকিস্তান-প্রেমী রাজনীতি দোর্দন্ড প্রতাপে রাজত্ব করেছিল বলা চলে। জিয়ার পাকিস্তানি সত্তার প্রমাণগুলো দেখুন:
১) জিয়া বাংলাদেশে স্বাধীনতা-বিরোধী জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামের মত দলগুলোকে বাংলাদেশে
পুনর্বাসিত করে গেছেন।
২) ১৯৭৮ সালে মাকে দেখতে আসার নাম করে জিয়ার অনুমতি নিয়ে গোলাম আজম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছিল। প্রায় তিন বছর অবস্থানের পরও জিয়া এ-ব্যাপারে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেননি।
৩) জিয়া তাঁর শাসনামলে বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিলেন।
৪) জিয়া সকল কুখ্যাত স্বাধীনতা-বিরোধী ঘাতক-দালালকে বিএনপিতে যোগদান করার সুযোগ দিয়েছিলেন।
৫) জিয়া সকল চিহ্নিত স্বাধীনতা-বিরোধী সরকারি আমলা-কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, পেশাজীবী ও সামরিক কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বাসিত করেছিলেন।
৬) জিয়া সকল প্রচার মাধ্যমে ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর’ পরিবর্তে শুধুই ‘হানাদার বাহিনী’ বলার নির্দেশ জারি করেছিলেন।
৭) জিয়া দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা বধ্যভূমি, অগ্নি-সংযোগ, শরণার্থী ক্যাম্প ও গণহত্যার চিত্র মিডিয়ায় প্রচার বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
৮) পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের ইস্যুকে জিয়া কখনোই কূটনৈতিক নীতিতে অগ্রাধিকার দেননি।
৯) বাংলাদেশে আটকে পড়া বিহারীদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পাকিস্তানের ওপর জিয়া যথাযোগ্য চাপ সৃষ্টি করেননি।
১০) জিয়া দেশের সকল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকি, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারের পুনর্নিমাণ কাজও জিয়ার আমলে পরিত্যক্ত হয়েছিল।
১১) জিয়া ঘাতক-দালালদের বিচার সংক্রান্ত সকল আইন বাতিল করে দেয়ায় জেলে আটক প্রায় এগার হাজার স্বাধীনতা-বিরোধীকে আর বিচারের সম্মুখীন করা যায়নি।
জিয়াউর রহমান তাঁর এহেন পাকিস্তান-প্রেমী রাজনীতিকে ব্যালেন্স করার জন্যে মসিহুর রহমান জাদু মিয়ার মাধ্যমে ক্রয় করা বামপন্থী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরাট সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন বিএনপি’তে। তাঁর তথাকথিত ‘সমন্বয়ের রাজনীতির’ নামে ‘কেনাবেচার রাজনীতিতে’ ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে জড়ো হওয়া ভাসানী-অনুসারী বিরাট সংখ্যক ‘বামপন্থী বিপ্লবী’ নেতা-কর্মীদের কারণে জিয়াউর রহমানের এই মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী, চরম দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক চরিত্র আড়াল করায় বেশ সুবিধে হয়ে গিয়েছিল। এই ‘একদা-বামপন্থী’ নেতা-কর্মীরা এখনো বিএনপি’র রাজনীতিতে একেবারে অপাংক্তেয় হয়ে গেছেন বলা যাবে না, এধরনের বেশ কয়েকজন নেতা বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের আস্থাভাজন হয়ে এখন বিএনপি’র নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে, তাঁদের পচন যে কতখানি দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে তার খানিকটা আলামত মিলেছে ঐ ঘরানার একজন স্বনামধন্য শ্রমিক নেতার সাম্প্রতিক এক বয়ানে: ‘যুদ্ধাপরাধী বাদ দিলে জামায়াতকে সাথে নিতে আপত্তি কোথায়? জামায়াতেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে’। বাংলাদেশে পৈশাচিক খুনের ট্রেডমার্কধারী জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসীদের ‘মাদার অর্গানাইজেশান’ জামায়াত-শিবিরকে এহেন সার্টিফিকেট প্রদান এরকম ‘একদা-বামপন্থীদেরকেই’ হয়তো ভাল মানায়! ইনারা আসলে সংশোধনের অযোগ্য!
আমার আজকের কলামে প্রশ্নটা আমি রাখতে চাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্বনামধন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে, যাঁরা এখনো দাবি করে চলেছেন ‘বিএনপি যা ইচ্ছে তা-ই করুক জামায়াতের ব্যাপারে, তাঁরা নাকি কখনোই জামায়াতের সাথে কোন সম্পর্ক রাখবেন না’। (গণফোরামের মোস্তফা মহসীন মন্টু ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে জোরগলায় আবারো তাঁদের এই অবস্থানের পুনরুক্তি করেছেন।) তাঁরা নাকি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে এদেশে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে বিএনপি’র সাথে জোট বেঁধেছেন! অনেক সরলমনা ভোটারের মনে হতে পারে, খুবই সাধু তাঁদের এই মহান ব্রত! দেশের গত ২৮ বছরের ভোটের রাজনীতির অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে, আমরাও স্বীকার করি। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন জনগণের ভোটাধিকারকে কক্ষচ্যুত করেছে, কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু, বিএনপি’র সাথে গাঁটছড়া বেঁধে আগামী নির্বাচনে বিএনপি’কে ক্ষমতায় বসালে বাংলাদেশে জনগণের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে এই ফতোয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এসব নেতারা কীভাবে দিচ্ছেন বুঝতে পারছি না? ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারী এরশাদ-বিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের সময় প্রণীত ও সব দলের গৃহীত ‘তিন জোটের রূপরেখা’কে বিএনপি ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জেতার পর কীভাবে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল সেটা দেখার দুর্ভাগ্য আমাদের যাদের হয়েছে তারা এই ফতোয়াকে কেন বিশ্বাস করব? ২০০১-২০০৬ সালের বিভীষিকাময় বিএনপি-জামায়াত সরকারের শাসনামলকে আবার বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার যে ভয়ংকর আশংকা তাঁরা সৃষ্টি করেছেন সেটা কি দেশের জন্যে ভয়াবহ বিপর্যয়কর হবে না? ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তারিখে ঠান্ডা মাথায় গ্রেনেড হামলা চালানোর মূল পরিকল্পনাকারী ও সিদ্ধান্তদাতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানানোর বিএনপি’র যে গোপন নীল নকশা (‘হিডেন ব্লু-প্রিন্ট’) তাঁরা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন সেটাকে আমরা কীভাবে মেনে নেবো? শুধু সংকীর্ণ ক্ষমতার রাজনীতির স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের ২২ জন নেতা-কর্মী হত্যা এবং ৪০০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে আহত ও পঙ্গু করার জন্যে বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত যে অপরাধী তারেক রহমান লন্ডনে পলাতক থাকার কারণে শাস্তি এড়িয়ে চলেছেন তাঁকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘ডি ফেক্টো নাটের গুরু’ হিসেবে চিনতে তো কারো ভুল হবার কথা নয়! বিএনপি’র প্রার্থী-মনোনয়ন থেকে শুরু করে নির্বাচনী প্রচারণার দৈনন্দিন সকল সিদ্ধান্তই যে লন্ডনের ঘাঁটি থেকে তারেক রহমানের ‘রিমোট কন্ট্রোলের’ মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে বিএনপি’র প্রকাশ্য নেতার ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তার সুস্পষ্ট আলামত দিনের আলোর মতই পরিষ্কার।
সর্বোপরি, বিএনপি-নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে অন্তর্ভুক্ত জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি সংসদীয় আসন ছেড়ে দিয়ে বিএনপি’র তারেক রহমান কী সিগন্যাল দিলেন? জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চাইতে জামায়াতকে বেশি আসন বরাদ্দ করে ঐক্যফ্রন্টের চাইতে জামায়াতের গুরুত্ব যে তারেক রহমানের কাছে অনেক বেশি সেটারই তো অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেল এই পদক্ষেপের মাধ্যমে! ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতের বিজয়ী প্রার্থীর সংখ্যা যদি সরকার গঠনের জন্যে যথেষ্ট প্রমাণিত হয় তাহলে বিএনপি’র কাছে ডঃ কামাল হোসেন, আ,স,ম আবদুর রব, ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না ও সুলতান মনসুরের মত নেতাদের আদৌ কোন গুরুত্ব যে অবশিষ্ট থাকবে না সেটা বুঝতে কারো অসুবিধে হওয়ার তো কথা নয়! অতএব আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ডঃ কামাল হোসেনরা মারাত্মক ভুল করেছেন বিএনপি’র সাথে গাঁটছড়া বেঁধে। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর ‘আপন মায়ের পেটের ভাইয়ের’ সম্পর্ক তাঁরা কখনোই ছিন্ন করতে পারবেন না। (ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী জামায়াতে ইসলামীকে তাদের অতীত ভূমিকার জন্যে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলার পর কোন বিএনপি নেতাকে এ-ব্যাপারে সমর্থনমূলক বক্তব্য রাখতে শুনেছেন কেউ? দুঃখটা এখানেই। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীরা কীভাবে এটা আশা করেন?) বাংলাদেশে পাকিস্তানের আদর্শ প্রতিষ্ঠার রাজনীতি বিএনপি এবং জামায়াতের রাজনীতির মূলমন্ত্র। উপরন্তু, জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডার বাহিনীর গুরুত্ব বিএনপি’র কাছে অনেক বেশি। আগামী নির্বাচনে হয়তো জামায়াত-শিবিরের ‘কিলিং স্কোয়াড’ গুলোকে মাঠে নামানোর প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার জন্যে যে পাড়ায় পাড়ায় কমিটি গঠনের ডাক দিচ্ছেন সেগুলোতে জামায়াত-শিবিরের সহায়তা ছাড়া নেতৃত্ব দেওয়ার কোন সক্ষমতাই নেই বিএনপি’র, গণ ফোরামের, নাগরিক ঐক্যের, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের কিংবা জেএসডি’র। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সাথে লন্ডনে তারেক রহমান বৈঠক করার যে অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেটাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া উচিত হবে না। আগামী নির্বাচনে পাকিস্তান নীরব ভূমিকা পালন করতেই পারে না। কারণ, বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানী প্রেতাত্মাদের খপ্পরে ফেলার বিরাট একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন ডঃ কামাল হোসেনরা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মত আরেকটি মহাবিপদ আসতে পারে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে। জাতিকে সাবধান করে দেওয়া সেজন্যেই দায়িত্ব মনে করছি। (দৈনিক আজাদী থেকে নেয়া)

লেখক : একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ; অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরো সংবাদ