আজকের শিরোনাম :

মহালয়ার এই বিশেষ দিনটিতেই আমি প্রাণখুলে কাঁদি

  মণিজিঞ্জির সান্যাল

০৬ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৪৭ | আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

মহালয়া মানেই দুর্গা পুজোর দিন গোনা শুরু। মহালয়া মানেই এই তো পুজো প্রায় এসেই গেল, আর কয়েকটা দিন। শরৎ নিয়ে একই কথা বারবারই বলতে ইচ্ছে করে। আসলে এই ঋতুতে মনটা সবসময়ই আনন্দে ভরে থাকে। কি একটা সাজো সাজো রব আমাদের চারপাশের আকাশে বাতাসে মাটিতে মানুষে। একের পর এক উৎসবের মেলা। বিশ্বকর্মা পুজো যেন উৎসবের সূচনা। তারপরেই অপেক্ষা মহালয়ার শুভ মুহূর্তের জন্যে। কারণ তার আগের দিন থেকেই উৎসবের প্রস্তুতি। মহালয়ার দিনকে ঘিরেই কতো আগাম পরিকল্পনা।

অন্ধকার থাকতে থাকতেই ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা। ছোটবেলার মতো এখনো এই দিনটিতে সবাই খুব ভোরবেলা উঠে পড়ি। এই দিনটিকে ঘিরে কতো যে গল্প আছে। বড় রেডিওটা থাকত বাবার বিছানার পাশে লাগোয়া টেবিলের উপর। খুব জোরে বাজত আশেপাশের সবার বাড়ির রেডিও। সুরগুলো মিলিত ভাবে ভেসে আসত চারপাশ থেকে। বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠত। আনন্দ, বেদনা, ভালোলাগা, ভালোবাসা সবকিছু একই তরঙ্গে মিশে যেত যেন।এখনো আছে সেই অভ্যেস। তবে এই দিনটিতেই ছিল শেষ মায়ের সাথে সকালে হাঁটা। তারপর আমার কিশোরীবেলা, মেয়েবেলা একা একাই কেটেছিল এই বিশেষ দিনটিতে। এখনো সকাল হলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই দৃশ্য, আমার আর মায়ের শেষ কথোপকথন।

তেমনই আজও এই বিশেষ দিনটিতে বেজে ওঠে সেই চিরাচরিত রেডিও, যার কণ্ঠস্বর শোনার জন্যে আমি আমৃত্যু অপেক্ষা করে থাকব। আসলে কিছু ভালোলাগা, কিছু মুহূর্ত কখনোই মন থেকে মুছে ফেলা যায় না। না টেলিভিশনের কোনো অনুষ্ঠান এই বিশেষ দিনটিতে আমাকে কোনোদিনই আকৃষ্ট করতে পারে নি।

বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র আপামর বাঙালির আবেগ। সেই থেকে আজও মহালয়া বাঙালির সকাল শুরু হয় চিরাচরিত্র কন্ঠ ধ্বনীতে। আসলে মহালয়া মানেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী। সারা শরীর, সমস্ত হৃদয় কেঁপে ওঠে তাঁর সেই কণ্ঠস্বরে, তাঁর সেই হৃদয় তাড়িত ধ্বনিতে। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের বিকল্প আজও কেউ হতে পারেনি। গঙ্গার মতো প্রতিটি নদীর ঘাটে ঘাটে ভিড় জমে পিতৃ পুরুষের উদেশ্যে শ্রদ্ধা জানাতে, শুরু হয় তর্পণ। নিয়ম অনুযায়ী মহালয়ের দিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবী পক্ষের সূচনা ঘটে।

মহালয়া নিয়ে বাঙালির এই আবেগ আজকে নয়, পথ চলা শুরু সেই ১৯৩০ এর দশকে। এই দিনেই অল ইন্ডিয়া রেডিও বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে উপস্থাপন করেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। প্রথম বছরেই প্রতিটি মানুষের মন জয় করে নেয় সেই অনুষ্ঠানটি। মহালয়া এবং দুর্গাপুজোর কোনো সম্পর্ক না থাকলেও অনুষ্ঠানটির নাম হয়ে যায় মহালয়া। এবং এই দিন থেকেই বাঙালী জীবনে শুরু হয় দুর্গাপুজোর দিন গোনা। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের হৃদয়তাড়িত কণ্ঠস্বর আকাশে বাতাসে দূর দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। জানি না কেন এই কণ্ঠস্বর চোখের জলকে ধরে রাখতে পারে না আমার।

রামধন মিত্র স্ট্রীটের ওই গলিতে পা দিলে সময় যেন পিছিয়ে যায় হু-হু করে। হলুদ রংয়ের একটা বিশাল বাড়ির সামনে সাদা পাথরের ফলক। লেখা, স্বর্গীয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। সঙ্গে জন্ম-মৃত্যুর তারিখ। তার নীচে পাথরে খোদাই করা তিনটে লাইন, ‘এই বাড়িতেই আমৃত্যু বাস করেছেন বেতারে মহিষাসুরমর্দিনীর সর্বকালজয়ী অন্যতম রূপকার এই সুসন্তান।’ বাড়ির মেন দরজা পেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে দোতালার যে ঘর, সেটিই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর ঘর।
মহিষাসুরমর্দিনী যখন সরাসরি রেডিওতে স¤প্রচার হত, তখন রাত দুটোর সময় গাড়ি আসত রেডিও অফিস থেকে। পরে যখন রেকর্ডিং প্রচার করা শুরু হল, তখনও ওই সময়টায় রেডিয়ো অফিসে চলে যেতেন তিনি। তবে শেষদিকে আর যেতে পারতেন না। তখন নিজের ঘরের খাটে বসেই অনুষ্ঠান শুনতেন ছেলে মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে।

মহালয়া ঘিরে দু’টি ঘটনা ঘটে সত্তরের দশকের সেই বছরটিতে। শোনা যায়, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশেই মহালয়ার সকালে সে বার আকাশবাণী ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র বদলে বাজিয়েছিল ‘দেবী দুর্গতিহারিণীম’। যেখানে মূল ভাষ্যপাঠ করেছিলেন উত্তমকুমার। সংলাপ বলায় পারদর্শী কণ্ঠ আর সুরেলা ভাষ্যপাঠের বিশেষ আবেদনের মধ্যে সে দিন তফাত খুঁজে পেয়েছিল বাঙালি। শ্রোতাদের চাপেই পাঁচ দিন পরে মহাষষ্ঠীর সকালে রেডিয়োয় বেজেছিল ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির…।’ ইতিহাস ছুঁয়ে ফেললেন বিরূপাক্ষ, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। বাঙালি যেন স্থির করে ফেলল, আজীবন বীরেন্দ্রকৃষ্ণের কণ্ঠের আলোর বেণুর সুরেই দেবীপক্ষের প্রথম প্রভাত মুখরিত হবে।

সেই বছরেই অর্থাৎ ১৯৭৬ সালে শুধু রেডিও অফিসে যাননি তিনি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে যা উত্তমকুমারের মহালয়া বলে প্রচলিত। সেই প্রথম, সেই শেষ। সেই অনুষ্ঠানের আগে এক রাতে তাঁর কাছে উত্তমকুমার এসেছিলেন। হাত ধরে বলেছিলেন, তিনি ওই অনুষ্ঠানটি করতে চাননি। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র তখন উত্তমবাবুকে উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন, ‘কেন করবেন না আপনি? অবশ্যই করুন। নতুন কিছু তো করা দরকার। আমি আপনার পাশে আছি।’ সেই মহালয়ার ভোরেও তিনি তার খাটে বসে অনুষ্ঠানটি শুনেছিলেন। অনুষ্ঠান শুনে বলেছিলেন ‘ভালই তো করেছে!’ মানুষ অবশ্য সেটা মানেনি। সে কী বিক্ষোভ! প্রবল চাপে ষষ্ঠীর সকালে আবার রেডিও বাজাতে বাধ্য হয়েছিল মহিষাসুরমর্দিনী।শেষ পর্যন্ত আবার বীরেন্দ্রবাবুর কন্ঠে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শোনানো শুরু হয়। রবীন্দ্রনাথ, বিধানচন্দ্র রায় থেকে উত্তমকুমার, তিন কিংবদন্তির প্রয়াণ যাত্রার ধারাবিবরণী দিয়েছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।

১৯৩২-এর ষষ্ঠীর ভোরে প্রথম বার প্রচারিত হয় বেতারের কালজয়ী অনুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দিনী। পরে এটি মহালয়া তিথিতে পরিবর্তিত করা হয়। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর গম্ভীর কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ আজও শুধু মহালয়া নয় সারা পুজোর ইউএসপি। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর চণ্ডীপাঠ শোনার সময়ে আমাদের সকলের উপলদ্ধি হয় একসময় তাঁর গলা ধরে আসে ক্রন্দনরত হয়ে পড়েন তিনি। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র বলতেন এর কারণ হল তিনি সামনে তখন মা দুর্গাকে দেখতে পান।

দেড় ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানে রয়েছে শ্রীশ্রীচণ্ডী বা দুর্গা সপ্তশতী থেকে গৃহীত দেবী চণ্ডীর স্তোত্র বা চণ্ডীপাঠ, বাংলা ভক্তিগীতি, ধ্রæপদী সংগীত এবং পৌরাণিক কাহিনির নাট্যরূপ। প্রথমদিকে অনুষ্ঠানটি সরাসরি স¤প্রচারিত হত, কিন্তু ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে রেকর্ড করা পূর্বের অনুষ্ঠানই শোনানো হয়। এই অনুষ্ঠানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল যে, এতগুলো বছর পর আজও এর জনপ্রিয়তা তথা মহিমায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি।

বর্তমানে অবশ্য মহালয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়। মহালয়ার দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মহালয়া কথাটির বিশেষ অর্থ রয়েছে। পিতৃপক্ষের অবসান বা দেবীপক্ষের পূর্ববর্তী অবস্হাকে বলা হয় মহালয়া। এই ব্যাপারে অবশ্য মতান্তর রয়েছে। মহ শব্দটির অর্থ মানে পূজা, আবার মহ বলতে উৎসব ও বোঝায়। এছাড়া মহালয়া বলতে বোঝা যায় মহান ও আলয় নিয়ে মহালয়। এর সঙ্গে আ যোগ করে পূজার আলয়। আলয় শব্দের অর্থ আশ্রয়। আবার মহালয় বলতে বোঝা যায় পিতৃলোককে, যেখানে স্বর্গত পিতৃপুরুষদের অবস্থান।

পিতৃপক্ষের অবসানে পর শুরু হয় দেবীপক্ষের সূচনা। পিতৃতর্পণের মাধ্যমে পিতৃপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রণাম ও সম্মান নিবেদন করা হয়। এই মহালয়ার পিতৃপক্ষটি ষোলা শ্রাদ্ধ, কানাগত, জিতিয়া, মহালয়া পক্ষ ও অপর পক্ষ নামেও পরিচিত। দীর্ঘকাল ধরে কোটি কোটি মানুষ মহালয়ার পুণ্যপ্রভাতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে জল অঞ্জলি দিয়ে স্মরণ করে চলেছেন তাঁদের বিদেহী পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে। ভারতভূমিতে কোটি কোটি মানুষ মহালয়ার পূণ্য প্রভাতে ‘ময়া দত্তেন তোয়েন তৃপ্যান্ত ভুবনত্রয়ম, আব্রহ্ম স্তম্ভ পর্যন্তং তৃপ্যন্তু’- এই মন্ত্র উচ্চরণ করে তিন গন্ডুষ জল অঞ্জলি দিয়ে বিদেহী পিতৃপুরুষদের স্মরণ করে চলেছেন। গয়ায় মহালয়া উপলক্ষ্যে পিতৃপক্ষ জুড়ে মেলা চলে। এছাড়া মহালয়ার ভোরে চন্ডীপাঠের রীতি রয়েছে। মহালয়ার দিন পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। অনেকে বারাণসী বা গয়ায় গিয়ে দ্বিপ্রহরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। পূর্বপুরুষকে যে খাদ্য উৎসর্গ করা হয় তা সাধারণত রান্না করে রুপো বা কলাপাতার ওপরে দেওয়া হয়। শ্রাদ্ধকর্তাকে স্নান করে ধুতি পরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করতে হয়। শ্রাদ্ধের পূর্বে কুশাঙ্গরীয় অর্থাৎ কুশ ঘাসের আঙটি ধারণ করতে হয়। ওই আঙটিতে পূর্বপুরুষদের আহবান করা হয়।

ত্রেতা যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবীকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য। আসল দূর্গা পূজা হল বসন্তে, সেটাকে বাসন্তী পূজা বলা হয় । শ্রীরামচন্দ্র অকালে-অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে দেবীর অকাল-বোধন বলা হয়। সনাতন ধর্মে কোন শুভ কাজ করতে গেলে, বিবাহ করতে গেলে প্রয়াতদের উদ্দেশ্যে অথবা যাদের পিতা-মাতা নেই তাদের পিতা-মাতার জন্য, সাথে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, কার্যাদি- অঞ্জলি প্রদান করতে হয়। তর্পণ মানে খুশি করা। ভগবান শ্রীরাম লঙ্কা বিজয়ের আগে এদিনে এমনই করেছিলেন। সেই অনুসারে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপূরূষের স্মরন করেন,পূর্বপূরুষের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকে মহালয় বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া।পিতৃপক্ষেরও এটি শেষদিন। পৌরাণিক মতে, মহাভারতের মহাযুদ্ধে কর্ণ যখন মারা যান, তখন তার আত্মাকে খাদ্য হিসেবে গয়না উৎসর্গ করা হয় । বিস্মিত বিমূঢ? কর্ণ এর কারণ জানতে চান দেবরাজ ইন্দ্রের কাছে। ইন্দ্র জানান যে,কর্ণ জীবিতাবস্থায় কখনও পূর্বপুরুষের প্রতি খাবার,জল অর্পন করেননি, বরং তার দানের বিষয় ছিল শুধুই সোনা। আর সেই কর্মফলই তার প্রতি ফিরে এসেছে। কর্ণ তা জানতেন না বলে তাকে ১৬ দিনের জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসতে সুযোগ দেওয়া হয়, যাতে তিনি পিতৃপুরুষকে জল এবং খাবার অর্পন করতে পারেন। এই সময়কালই পিতৃপক্ষ হিসাবে পরিচিত হয়। মহালয়া পক্ষের পনেরোটি তিথির নাম হল প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী,চতুর্দশী ও অমাবস্যা। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীহ্মা মায়ের পুজার।এই দিনেই দেবীর চহ্মুদান করা হয় । মহিষাসুরমর্দিনীদেবী দূর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায?িত্ব পান। ব্রম্মার বর অনুযায়ী কোন মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবেনা। ফলে অসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সন্মিলিত ভাবে “মহামায়া” এর রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দূর্গা নয় দিন ব্যাপি যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করলেন। এভাবেই দেবীর আগমণ ঘটে মর্ত্যে।

ইয়া দেবী সর্বভূতেষু ক্ষান্তিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু জাতিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু লজ্জারূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু শান্তিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু শ্রদ্ধারূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু কান্তিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু ল²ীরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু বৃত্তিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু স্মৃতিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু দয়ারূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু তুষ্টিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু ভ্রান্তিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইন্দ্রিয়ানামধিষ্ঠাত্রী ভূতানাং চাখিলেষু ইয়া
ভূতেষু সততং তসৈ ব্যাপ্তৈ দেব্যৈ নমো নমঃ।।
চিতিরূপেণ ইয়া কৃৎস্নমেতদ্? ব্যাপ্য স্থিতা জগত।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
 

লেখক : কথা সাহিত্যিক, শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ।

এই বিভাগের আরো সংবাদ