আজকের শিরোনাম :

এ মুহুর্তে পল্লী চিকিৎসকদের সহযোগিতা জরুরি

  মোশাররফ হোসেন মুসা

২৫ জুলাই ২০২১, ১৯:৩২ | আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২১, ১৬:৫২ | অনলাইন সংস্করণ

মোশাররফ হোসেন মুসা
যে কোনো মহামারী যুদ্ধের মতোই। মহামারীকে আবার গণযুদ্ধও বলা যায়। যেহেতু দেশের সকলের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেকারণে সেযুদ্ধে কামান-বন্দুকের চেয়ে লাঠি-সোঠা কাজে লাগে বেশি। একইভাবে বর্তমানে কোরোনার প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কোনো রুগী জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হলেই তিনি ভাবতে শুরু করেন তার কোরোনা রোগ হয়েছে।

ফলে কেউ কেউ মনের আতঙ্কে অর্ধমৃত হয়ে যাচ্ছে; অযথা ক্লিনিক-হাসপাতাল ছুটোছুটি শুরু করে। তারা যদি প্রথমে পল্লী চিকিৎসকদের কাছে যান, তাহলে সঠিক পরামর্শ পাবেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসাও নিতে পারেন( অনেক ক্ষেত্রে ঘটছেও)। এখানে ঈশ্বরদী উপজেলা উদাহরণ হতে পারে। এই উপজেলায় ইপিজেড ও পারমানবিক বিদ্যুত প্রকল্প থাকায় বিদেশি নাগরিকসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের চলাচল রয়েছে । স্বাভাবিক কারণেই এই উপজেলায় সংক্রমণের হার তুলনামূলক বেশি।কোরোনা রোগীরা সকলেই হাসপাতাল অভিমুখী( উপজেলা সদর হাসপাতাল)।

দানশীল ব্যক্তিরা ঈশ্বরদী হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করেছেন। কিন্তু সমন্বয়হীনতার অভাবে চিকিৎসকরা সেগুলো ব্যবহারে হিমসিম খাচ্ছেন। অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করার জন্য হাসপাতালে নগদ অর্থের বরাদ্দ নেই। সেকারণে কেউ কেউ নিজের টাকায় সিলিন্ডার রিফিল করছেন। ডাক্তাররা ঝামেলা এড়ানোর জন্য কোনো কোনো রোগীকে খামোখা রাজশাহী কিংবা ঢাকায় রেফার্ড করছেন। এই উপজেলায় তিন শতাধিক রেজিস্টার্ড পল্লী চিকিৎসক রয়েছেন( সমগ্র বাংলাদেশে লক্ষাধিক)। রোগীদের কেউ কেউ রাজশাহী কিংবা ঢাকায় না গিয়ে পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে (সাময়িক ভাবে হলেও) তাদেরকে নিযুক্ত করা উচিত। পাশের দেশ সহ কয়েকটি দেশে অস্থায়ী চিকিৎসক কিংবা টেকেনিসিয়ান নিয়োগ দিয়ে ভালো ফলাফল পেয়েছে।

পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা প্রায়ই বলে থাকেন- 'আপনারা ৮১ হাজার গ্রামে একটি করে রোগী দেখলে প্রতিদিন ৮১ হাজার রোগী দেখছেন। আপনারাই জনগণের সবচেয়ে কাছের ডাক্তার।'  সরকার যদি  বিষয়টি নীতিগতভাবে গ্রহণ করে তাহলে দেখা যাবে, স্থানীয় প্রশাসন তাদেরকে একটি সুন্দর নেটওয়ার্কিং-এর মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হবে। 

উল্লেখ্য, উপরিউক্ত বিষয়ের আলোকে 'প্রাইমারি কালচার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (পিসিডিসি)' এর উদ্যোগে ২৫ জুলাই রাত্রি ৯.০০ টার সময় একটি জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। 

উক্ত সভায় পাবনা-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস, ঈশ্বরদী উপজেলার ইউএনও পিএম ইমরুল কায়েস, পল্লী চিকিৎসকগণ ও এলাকার সুশীল সমাজের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলেই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং উদ্ভুত পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করবেন বলে জানান। বিশেষ করে শিল্পপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা জালালউদ্দিন তুহিন অক্সিজেন সিলিন্ডার সহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন। এখন প্রয়োজন অনুরূপ উদ্যোগ সমগ্র দেশে যেন কার্যকর হয়, সে বিষয়ে সরকারের যথাপোযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া।

লেখকঃ গণতন্ত্রায়ন ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ক গবেষক।

 

এই বিভাগের আরো সংবাদ