ঢাকার বাতাসের মানের অবনতি করোনার উদ্বেগ আরো বাড়াচ্ছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৪৭

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যে রোববার সকালে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) পঞ্চম খারাপ অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।

বাতাসের গুণগতমানের ক্রমগত বিপর্যয় কোভিড-১৯ থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে দেশের চলমান লড়াইয়ের এক বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে জনবহুল এই শহরের একিউআই স্কোর ছিল ১৭১ যাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

একিউআইয়ের মান ১৫১ এবং ২০০ এর মধ্যে থাকে থাকা মানে প্রত্যেকের স্বাস্থ্যেই এর প্রভাব পরতে পারে। তবে, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর সদস্যরা আরও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরতে পারেন।

একিউআই সূচক অনুসারে, দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় কাজাখস্তানের নুর-সুলতান, কিরগিজস্তানের বিশবেক এবং ভারতের দিল্লি শীর্ষ তিনে রয়েছে।

প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।

বায়ু দূষণের সাথে ঢাকার সম্পর্ক অনেক পুরনো। সাধারণত বর্ষার মৌসুমে শহরের বাতাসের মানের উন্নতি হয়। তবে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বাতাসের মানের দিক দিয়ে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করেছে।

পিএম২.৫ এর জন্য বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। বিশ্ব বায়ু মান প্রতিবেদনে ২০১৯ সালে ঢাকা দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহরের উঠে আসে।

শহরের আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে স্থাপন করা ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়াকে বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে দায়ী করা হয়।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দুষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ

সরকার বারবার করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে সতর্ক করে আসছে এবং সঠিক স্বাস্থ্য নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে। দূষিত বাতাসে শ্বাস নেয়ার ফলে ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে এবং করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

বাংলাদেশের করোনাভাইরাস প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪১ জনে পৌঁছেছে। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩৮ জনের মৃত্যুসহ মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬ হাজার ৩৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় মোট শনাক্ত হার ১৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে, শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমকি শূন্য২ শতাংশ।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএইচইউ) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী রবিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৮০ লাখ ৭৬ হাজার ৭৫ জনে। এছাড়া কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৫০৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

বায়ু দূষণ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বলে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বকে বায়ু দূষণের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ